ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

খোঁড়লহীন ‘খুঁড়লেপেঁচা’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪১ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১৮
খোঁড়লহীন ‘খুঁড়লেপেঁচা’ খোঁড়লহীন ‘খুঁড়লেপেঁচা’। শ্রীমঙ্গলের শিববাড়ি থেকে ছবিটি তোলা। 

মৌলভীবাজার: কিছু পাখির বসবাসের জন্য গাছের খোঁড়ল খুবই দরকারি। খোঁড়ল মানে গাছের গর্ত। তবে দেশব্যাপী গাছ কমে যাওয়ায় আবাস হারাচ্ছে কাঠঠোকরা, পেঁচার মতো অনেক পাখি।

বিশালাকৃতিময় প্রজাতির গাছগুলো যতই বয়োঃবৃদ্ধ হবে, স্বাভাবিক নিয়মে তার শরীরের কোনো কোনো অংশে খোঁড়ল দেখা দেবে। আর এগুলোই প্রকৃতির মাঝে নানান প্রজাতির জীববৈচিত্র্যকে আশ্রয় দিয়ে গভীর উপকার সাধন করে চলে নীরবে।

অনাদিকাল ধরে এটাই হয়ে এসেছে।     

কিছুদিন আগে বরেণ্য পাখি বিশেষজ্ঞ ও লেখক শরীফ খান কথা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, গাছপালা যে হারে কাটা পড়ছে তাতে পাখি বা গাছ কেন্দ্র করে বেঁচে থাকা প্রাণীদের জীবন গভীর সংকটের মুখে পড়বে। বিশেষ করে গাছকে নির্ভর করে বেঁচে থাকা পাখিগুলো।

শরীফ খানের এ কথাটি অমোঘ সত্যরূপে চোখের সামনে প্রকাশিত হলো। শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের শংকরসেনা গ্রামে অবস্থিত নির্মাই শিববাড়ি। এক বিকেলে এখানে দেখা গেলো এক খুঁড়লে পেঁচা বসে আছে বাঁশের বেড়ায়। এটা অনেকটা তাদের স্বভাববিরুদ্ধ। খোঁড়লহীন ‘খুঁড়লেপেঁচা’।  শ্রীমঙ্গলের শিববাড়ি থেকে ছবিটি তোলা।  

বাস্তুসংস্থানের অভাব তার আচরণে প্রভাব ফেলেছে। স্বাভাবিক নিয়মে তার বিকেলের দিকে বেরুবার কথা নয়। এরা নিশাচর প্রাণী বলে সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে গর্ত থেকে বেরোয়। কিন্তু বিকেল চারটার দিকেই সে বের হয়ে পড়েছে। তাকে শালিক, বুলবুলি পাখির মতো এদিক-ওদিক চষে বেড়াতে দেখা গেছে।  

এ প্রসঙ্গে শরীফ খান বাংলানিউজকে বলেন, এর মানেই হচ্ছে ওর অস্তিত্ব সংকট। প্রাচীন বৃক্ষগুলো কেটে ফেলার কারণে পেঁচাসহ নানা প্রজাতির পাখিরা আজ আশ্রয়হীন হয়ে পড়ছে। যে কোনো মূল্যে প্রকৃতির মহামূল্যবান উপাদানগুলোকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে।  

খুঁড়লেপেঁচার ইংরেজি নাম Spotted Owlet এবং বৈজ্ঞানিক নাম Athene brama । আকারে এরা প্রায় ২১ সেন্টিমিটার। দেহের রং বাদামি। সারা দেহে সাদাটে ফুটকি। এদের গলায় সাদা মালার মতো বৃত্তকার আবরণ রয়েছে। জোরালো ও কর্কশ গলায় ডাকে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১৮
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।