আগের মতো এখন আর চোখে পড়ে না গ্রাম বাংলার এই অপরূপ নিদর্শন। শুধু বাবুই পাখি নয়, প্রায় সব ধরনের পাখিই হারিয়ে যাচ্ছে।
কবি সাহিত্যিকরা বলছেন, প্রাচীন বৃক্ষ নিধন, ফসলে কীটনাশক ব্যবহার এবং জলবায়ুর পরিবর্তনে কমছে পাখির সংখ্যা। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ ও সাহিত্যের।
ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্ত ঘেষা রাউথনগর, কাঠালডাঙ্গী, ভাতুরিয়া ও রামপুর গ্রামে গিয়ে প্রকৃতির অপরূপ শিল্পের কারিগর বাবুই পাখির বাসার দেখে মেলে। সংখ্যায় কম হলেও তাল, নারিকেল, বট-পাকুর গাছে দেখা মেলে মনোমুগ্ধকর বাবুই পাখির বাসা। দূর-দূরান্ত থেকে চোখ জুড়ানো দৃশ্য দেখতে ছুটে আসছেন পাখিপ্রেমীরা।
কাঠালডাঙ্গী গ্রামের আব্দুল সাত্তার বাংলানিউজকে বলেন, অন্য কোথাও ঠাঁই না পেয়ে পাখিগুলো এই গ্রামগুলোতে এসে বাসা বাঁধছে। তারা নারিকেল, সুপারি, বট, তাল গাছসহ বিভিন্ন গাছে বাসা তৈরি করেছে। বাবুই পাখির কলরবে ভরে উঠেছে গ্রামের মেঠোপথ।
রামপুর গ্রামের বাসিন্দা মজিবর বাংলানিউজকে বলেন, আগের মতো বাবুই, টিয়া, ফিঙ্গেসহ বিভিন্ন ধরনের পাখির দেখা যায় না। পাখির সংখ্যা কমে যাওয়ায় ক্ষেত-খামারে ক্ষতিকর পোকা দমনে চাষিরা ব্যবহার করছে কীটনাশক। এতে পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি কৃষিতে বাড়ছে উৎপাদন খরচ।
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের অধ্যাপক মনতোষ কুমার দে বাংলানিউজকে বলেন, এক সময় সাহিত্যিক প্রকৃতির নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করে কবি সাহিত্যকরা রচনা করেছিলেন গান-কবিতা-গল্প ও ছড়া। বৈশ্বিক উষ্ণতায় হারিয়ে যাচ্ছে ঋতু বৈচিত্র। ফসলে অতিরিক্তি কীটনাশক ব্যবহার, নির্বিচারে পাখি হত্যা, প্রাচীন বৃক্ষ নিধন ও নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে পাখি বংশ বৃদ্ধি না হয়ে দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। আর তাই নতুন করে সৃষ্টিশীল রচনা হচ্ছে না। সাহিত্যেও বিরাজ করছে এক ধরনের শুন্যতা।
আর সেই কারণে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র রক্ষায় পাখি হত্যা বন্ধ ও পাখির বংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে অভয় আশ্রম গড়ে তোলাসহ জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের প্রচলিত আইন প্রয়োগে জোড়ালো দাবি উঠেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৮
জিপি