‘কোকিল’ (Western Koel) বা ‘পাপিয়া’ (Indian Cuckoo) প্রজাতির পাখিরা বাসা বাঁধতে পারে না; তারা অন্য পাখিদের বাসায় লুকিয়ে ডিম পেরে চলে আসে। যে পাখিটির বাসায় ডিম পাড়ে সেই পাখি ডিমগুলোকে নিজের ভেবে তা দিয়ে যায়।
কোকিল-পাপিয়া পাখির ছানাকে পরম মমতায় বড় করে তোলা পাখিটি হলো ‘ফটিকজল’। ওর আরো একটি নাম ‘পাতি-ফটিকজল’। ইংরেজিতে এর নাম Common Iora এবং বাইনোমিয়াল নাম Aegithina tiphia। এরা আকারে চড়ুইয়ের মতো। দৈর্ঘ্য ১৪ সেন্টিমিটার।
প্রখ্যাত পাখি গবেষক এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক এ পাখিটি সম্পর্কে বলেন, এর থেকে আকারে অনেক বড় পাখির ছানাগুলো এরা বড় করে তুলতে পারে। আর এটা আমাদের প্রকৃতিতে অনাদিকাল ধরে চলছে।
তিনি আরো বলেন, পৃথিবীতে ৪ প্রজাতির মধ্যে আমাদের দেশে মাত্র ১ প্রজাতির এ পাখি পাওয়া যায়। প্রজনন কালে ছেলেপাখির পিঠের দিক কালচে-সবুজ রং ধারণ করে। এমনিতে পিঠ ফিকে সবুজ এবং হালকা হলুদ পেট। কালচে ডানায় সাদা সাদা টান। লেজ কালচে ও পা ধূসর।
পাখিটির খাদ্য বিষয়ে ইনাম আল হক জানান, ‘চী-চিট-চিট-চিট... এরূপ ডেকে পাতার ফাঁকে উঁকি মেরে খাবার খোঁজে; যদি মাকড়সা বা বিভিন্ন পোকা-মাকড় পাওয়া যায়। নানান ধরনের পোকা-মাকড়, গুবরে পোকাসহ নানান ফল তার খাদ্যতালিকায় রয়েছে।
এরা আমাদের দেশের সুলভ আবাসিক পাখি। প্রজনন মৌসুমে গাছের ডালে মাকড়াসার জাল দিয়ে শুকনো ঘাস ও বাঁশ জড়িয়ে বাটির মতো বাসা তৈরি করে এবং বাসার বাইরে মাকড়সার জালের আস্তর দেয়। দু থেকে তিনটি ডিম দেয় এবং প্রায় দু’সপ্তাহ পর ছানা বের হয় বলে জানায় ইনাম আল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৮
বিবিবি/এমজেএফ