এই ছবিটি যেন আমাদের সেই শৈশবের চোখ রাঙানো শাসনের কথাই বলছে নীরবে। এই চোখেই রয়েছে তীব্র ভয়ের দারুণ দ্যুতি।
চোখের মধ্যে তীব্র ভয়ের দ্যুতির এ ছবিটি ধীরগম্ভির এক প্রাণীর। তার নাম ‘সন্ধি কাছিম’। এই চোখের উপরিভাগে একটি ক্লান্ত মাছি ক্ষণিক বিশ্রামের প্রহর পার করছে।
বন্যপ্রাণী গবেষক ও আলোকচিত্রী আদনান আজাদ আসিফ বাংলানিউজকে বলেন, সন্ধি কাছিমের অপর বাংলা নাম ‘পাতাপরী’। সম্প্রতি বান্দরবন জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে এই সন্ধি কাছিমের ছবিগুলো তুলেছি। আমি গত তিন মাসে প্রায় ১০-১৫টার মতো ‘সন্ধি কাছিম’কে রাতে ঘুরে বেড়াতে দেখেছি। তাদের ছবিও তুলেছি।
তিনি আরো বলেন, ‘নেশার টানে প্রতি রাতেই আমি সাপ, ব্যাঙসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের ছবি তোলার খোঁজে বাসা থেকে বের হই। জলাশয়ের পাশ দিয়ে যে আইলগুলো রয়েছে তার পাশ থেকে এর ছবিগুলো তোলা। তখন জলাশয় থেকে বের হয়ে সে আইল ধরে হেঁটে যাচ্ছিল। ’
এ বন্যপ্রাণী গবেষক আরো বলেন, সন্ধি কাছিম মিঠা পানির প্রাণি। এর ইংরেজি নাম Spotted Flapshell Turtle এবং বৈজ্ঞানিকনাম Lissemys punctata।
এরা একসময় আমাদের হাওর-বিল-জলাশয়গুলোতে প্রচুর পরিমাণে ছিল। কিন্তু বর্তমানে এরা বিপন্ন। শুধুমাত্র মানুষের খাওয়ার কারণে ক্রমাগত শিকারের ফলে সন্ধি কাছিম ধীরে ধীরে আমাদের প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ সহ সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে এসব বিপন্ন কচ্ছপের প্রজাতিগুলোকে রক্ষা করা সম্ভব বলে জানান বন্যপ্রাণী গবেষক ও আলোকচিত্রী আদনান আজাদ আসিফ।
বাংলাদেশ সময়: ০৪০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৮
বিবিবি/আরএ