শাপলা-পদ্মর ফাঁকে ফাঁকে দিব্যি দাঁড়িয়ে থাকতে বা লুকতে পারে। কচুরিপানার উপর দৌড়ঝাপ দিতে পারে অনায়াশে।
বন-বাদাড়ে বা জলাভূমিতে ঘুরে বেড়ানো গ্রামীণ এ পাখিটিকে নিয়ে লোকসাহিত্যে নানান রচনা রয়েছে। পল্লীকবি জসীমউদ্দীন, রূপসী বাংলা’র কবি জীবনানন্দ দাশ প্রমুখ কবিরা তাদের লেখনিতে ডাহুকের কথা উল্লেখ করেছেন।
এক সময় পোষা পুরুষ ডাহুক দিয়ে বুনো ডাহুক শিকার করা হতো। বেঁধে রাখা পোষা ডাহুকটি খোলা জায়গায় কোনো প্রাকৃতিক ডাহুককে দেখলে যখনি তেড়ে আসে তখনি শিকারীর ফাঁদে আটকা পড়ে যায়।
প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ও লেখক শরীফ খান বাংলানিউজকে বলেন, ডাহুক কমে যাওয়া মূল কারণ তাদের আবাসস্থল অর্থাৎ তারা যেখানে বসবাস করে সেটা ধ্বংস হওয়া। আমাদের চারপাশ থেকে থেকে তো প্রাকৃতিক জলাভূমিসহ ঝোপঝাড় ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। তাই এগুলো উপর আশ্রয় করে থাকা পাখিগুলোর অস্তিত্ব হুমকির মুখে।
তিনি আরো বলেন, এককালে গ্রামবাংলায় পোষা ডাহুক যেমন তেমনি বুনো ডাহুকও ছিল। ওরা বাসা বেঁধে ডিম পাড়ার পর বেশি ডাকতো। রাতভর একটানা ডাকতে শুনা যায়। এ ডাক শুনলে মনে হয় ওরা যেন ব্যথা বা কষ্ট থেকে ডাকছে। আসলে তা নয়; এ ডাক মনের আনন্দের বর্হিপ্রকাশ।
এর স্বভাব ও শারীরিক বর্ণনা সম্পর্কে শরীফ খান বলেন, ডাহুক চতুর ও সতর্ক প্রকৃতির পাখি। প্রচণ্ড জোরে ছুটতে পারে বলে তাদের তুখোড় দৌড়বিদ বলা হয়। এদের দৈর্ঘ্য ৩২ সেন্টিমিটার। মাথা থেকে গলা পর্যন্ত সামনের দিকে সাদা রঙ এবং পেছনের দিকে কালো রঙের দৃশ্যমান ছাপ রয়েছে। হলদে ঠোঁটের গোড়ায় লাল রঙের সৌন্দর্য রয়েছে।
জলজউদ্ভিদের ডগা, ধান, নানান ধরণের শস্যবীজ, জলজ পোকা-মাকড়, শ্যাওলাও এদের খাদ্য বলে জানান পাখি বিশেষজ্ঞ শরীফ খান।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৯
বিবিবি/এসএইচ