গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের সাকাশ্বর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাটি ব্যবসায়ীরা লোকজনকে কাঁচা টাকার লোভ দেখিয়ে গ্রামের ফসলি জমি ও তুরাগ নদের পাড়সহ বিভিন্ন স্থানে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে ইটভাটায়। সাকাশ্বরের এই সর্বনাশা কাণ্ড দেখা যাচ্ছে আশপাশের এলাকায়ও।
সাকাশ্বরের বাসিন্দারা জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেক ইটভাটা থাকার কারণে মাটির চাহিদা বেশি। মাটি ব্যবসায়ীরা এ সুযোগটি নিয়ে লোকজনকে কাঁচা টাকার লোভে দেখিয়ে নির্বিচারে মাটি কেটে ইটভাটায় বেচে দিচ্ছে। সচেতন বাসিন্দারা বলছেন, এভাবে অবাধে মাটি কেটে নেওয়ার কারণে যেমন ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছে এলাকার ঘর-বাড়ি। তেমনি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। এছাড়া মাটিবোঝাই ভারি ড্রাম ট্রাক চলার কারণে নষ্ট হচ্ছে রাস্তা-ঘাট। ধুলোবালিতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। আর এভাবে মাটি কেটে নেওয়ার ফলে জমির শ্রেণী পরিবর্তন হচ্ছে। কৃষি জমির শ্রেণী পরিবর্তন হয়ে নালা অথবা জলকড়া জমিতে পরিণত হচ্ছে। আর বিলীন হচ্ছে গ্রামও।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শামীম আহম্মেদসহ ৫-৭ জন প্রভাবশালী মাটি কেটে নেওয়ার এ ব্যবসা করে যাচ্ছেন। মৌখিকভাবে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন রনি বাংলানিউজকে বলেন, গ্রাম থেকে অপরিকল্পিতভাবে ফসলি জমি ও তুরাগ নদের পাড় কেটে নিয়ে যাচ্ছে মাটি ব্যবসায়ীরা। এতে আমাদের বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি যেমন ঝুঁকিতে পড়ছে, তেমনি তুরাগ নদের গতিপথও পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া ছোট যান চলাচলের রাস্তা দিয়ে ভারি ড্রাম ট্রাক চলার কারণে তা যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। রাস্তায় কাদা ও পিচ্ছিল হয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। এভাবে অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটা বন্ধ করতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। মধ্যপাড়া ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) দেওয়ান রফিকুল ইসলাম লিটন বলেন, সাকাশ্বর এলাকায় তুরাগ নদের পাড় ও ফসলি জমি থেকে ভেকু দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে কিছু মাটি ব্যবসায়ী। সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে জনগণের জন্য সড়ক নির্মাণ করে দিয়েছে। আর ভারি ট্রাক চালিয়ে কিছু ব্যবসায়ী তা নষ্ট করে ফেলছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বেশি গর্ত করে মাটি কেটে নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। জমির শ্রেণী পরিবর্তন করতে অনুমোদন লাগে। এছাড়া ওই ছোট সড়ক দিয়ে ড্রাম ট্রাক চলতে নিষেধও রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯
আরএস/এইচএ/