বন্যপ্রাণীদের স্বাভাবিক বিচরণ ও লুকানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে দীর্ঘদেহী গাছপালা না থাকার কারণটিও হুমকির অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত।
রোববার (২৩ জুন) সকালে শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ রোড থেকে একটি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট লজ্জাবতী বানরকে (Bengal slow loris) আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে স্থানীয় বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন।
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব বাংলানিউজকে বলেন, রোববার সকালে আহত অবস্থায় একটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। বৈদ্যুতিক তারে লেগে তার বাম হাতের একটি অংশ ঝলসে গেছে। ঠিকমতো হাঁটতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, মূলত খাদ্যসংকটের কারণে লজ্জাবতী বানরসহ নানা বন্যপ্রাণী লোকালয়ে চলে আসছে। মানুষ এসব বন্যপ্রাণীদের হঠাৎ দেখে আতংকিত হয়ে পড়েন বা আমাদের ফোন করেন। আমরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসি এবং প্রয়োজনীয় সেবা-শুশ্রুষা করে পুনরায় বনে ছেড়ে দেই।
লজ্জাবতী বানর ছাড়াও সম্প্রতিক সময়গুলোতে তিনি অজগর সাপ (Python), শঙ্খিনী সাপ (Banded Krait) প্রভৃতি বন্যপ্রাণী বেশি উদ্ধার করেছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক ড. কামরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, লজ্জাবতী বানর কিন্তু ফলের উপর নির্ভরশীল প্রাণী নয়। লজ্জাবতী বানরের প্রধান খাবার হচ্ছে পোকামাকড় এবং দ্বিতীয়ত ওরা খায় বিভিন্ন গাছের আঠা বা গাম।
যেহেতু ওরা নিশাচর প্রাণী তাই দিনের বেলা বড় গাছপালা না থাকার কারণে ওদের লুকানোর জায়গা মারাত্মকভাবে কম যাচ্ছে। যখনি সে ছোট গাছে লুকোতে যায় তখনি লোকজনের নজরে পড়বে। লোকজনের নজরে পড়লেই তারা লজ্জাবতী বানরকে ধরে ফেলে। শ্রীমঙ্গলে সম্প্রতি পাওয়া লজ্জাবতী বানরগুলোর ক্ষেত্রে এ ঘটনাই ঘটছে। বড় গাছপালা কমে যাওয়ার কারণে লজ্জাবতী বানরদের লুকানোর জায়গা কমে যাচ্ছে। ফলে তারা মানুষের হাতে ধরা পড়ছে বলে জানান এই বন্যপ্রাণী গবেষক ড. কামরুল হাসান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৯
বিবিবি/এএ