বুধবার (১৫ জুলাই) সকাল ৯টায় ধরলার সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার উপরে এবং ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলায় ১০ সেন্টিমিটার কমলেও ব্রহ্মপুত্রে বেড়েছে ১৭ সেন্টিমিটার।
বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার বিস্তীর্ণ এলাকার ঘর-বাড়ি। প্রথম দফায় প্রায় ১৫ দিন বন্যায় পানিবন্দি জীবনযাপন করার পর দ্বিতীয় দফায় মারাত্মক বন্যার কবলে কর্মহীন মানুষের মধ্যে খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে চুলা জ্বালাতে না পারায় এবং কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় খাবারের সংকটে চরাঞ্চলের মানুষজন।
চরাঞ্চলের অধিকাংশ পরিবারের ঘর-বাড়িতে বন্যার পানি ওঠায় ঘর-বাড়ি ছেড়ে পাকা সড়ক, উঁচু বাঁধ ও বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। মঙ্গলবারের (১৪ জুলাই) সরকারি হিসেবে ৩০ হাজার ৮৬৫ পরিবারের ১ লাখ ২৩ হাজার ৪৬০ জন মানুষ পানিবন্দি বলা হয়েছে।
তবে স্থানীয় সূত্র মতে কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলার ৬০টি ইউনিয়নের আড়াই শতাধিক চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় আড়াই লক্ষাধিক মানুষ।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ব্রহ্মপুত্রে পানি বাড়তে থাকায় পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে এই বন্যা দুর্গত মানুষদের হাতে দীর্ঘদিন তেমন কাজ না ছিল। তার ওপর প্রথম দফা বন্যার পর পরই আবারও বন্যার কবলে চরাঞ্চলে বসবাসকারী কর্মহীন মানুষগুলো রয়েছে চরম দুর্ভোগে। মূলত এইসব দিনমজুর শ্রেণীর মানুষেরাই চরম খাদ্য সংকটে থাকায় এই মুহূর্তে শুকনো খাবারের প্রয়োজন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ধরলার পানি সামাণ্য কমলেও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বাড়ছে পানি। আগামী ৪৮ ঘণ্টা ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থেকে এর অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম বাংলানিউজকে জানান, পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া জেলায় ৪৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৪০০ মেট্রিক টন চাল, ১১ লাখ টাকা ও তিন হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিশু ও গো-খাদ্য বিতরণেরও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদশে সময়: ১৩৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২০
এফইএস/এএটি