মৌলভীবাজার: সবুজ ঘাসে ছড়িয়ে আছে একাধিক হলুদে ফুল। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যটুকু তাতেই বিস্তার করে আছে ওরা।
এ মাঝারি আকারের ফুলগুলো সম্পূর্ণ অন্যরকম। দেখতে অনেকটা বাদামি রঙের শিঙ্গার মতো। ফুলের পাঁচটি পাপড়ির মধ্যে সবচেয়ে লম্বা পাপড়িটি হলুদ রঙের। সেটিই আবার সাইজে সবচেয়ে বড় এবং ফোটা ফুলে নিচের দিকে যেন ঝুলে থাকে। মাটিতে বা ঘাসে ওপর পড়ে বসন্তকে রাঙিয়ে দেয় এ ফুলটির নাম গামার ফুল। কেউ কেউ গামারি ফুল হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন। এর রয়েছে হালকা অপূর্ব সৌরভ। এ উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম Gmelina arborea এবং Verbenaceae পরিবারভুক্ত এরা। মৌলভীবাজারের সিনিয়র টি-প্লান্টার ইবাদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, গামারি ছাড়াও এ ফুলকে গামার, গাম্বার, মধুমতি প্রভৃতি নামে উল্লেখ করা হয়। গামার গাছটি আমরা আমাদের সেকশনের (চায়ের সুনির্দিষ্ট এলাকা) শেষ সীমানায় লাগিয়ে থাকি। অপেক্ষাকৃত রাস্তার পাশেও উঁচু টিলাময় স্থান নির্বাচন করে তার মাঝে লাগানো হয়।
চা-বাগানে গামারের উপকারিতা সম্পর্কে তিনি বলেন, এগুলো দ্রুত বর্ধনশীল বৃক্ষ। আমাদের চা-শ্রমিকদের আবাসস্থলের বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করে থাকে এই কাঠ। এটি বিবেচনা করেই মূলত চা-বাগানে এই কাঠটি লাগানো হয়। এছাড়াও চা-বাগানের লেন্সক্যাপ ডিজাইনের জন্য চা-বাগানের পাহাড়ে এই বৃক্ষটি রোপণ করা হয়। তবে, বর্তমানে বৃক্ষটি 'বিপন্ন প্রজাতির’ হয়ে গেছে। ছায়াবৃক্ষ এর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গামার গাছ ছায়াবৃক্ষ নয়। তাই এটিকে আমার চা-সেকশনের ভেতর কখনো লাগাই না। মাটির নিচের বিস্তার উপকারী শিমজাতীয় ফসলের উদ্ভিদগুলোকে চা-বাগানের ছায়াদানকারী বৃক্ষ হিসেবে মূলত নির্বাচন করা হয়। শিম বলতে কিন্তু শিমের মতো লতাজাতীয় উদ্ভিদ নয়। শিম জাতীয় উদ্ভিদের শিকড়ে এক জাতীয় বিশেষ উপাদান থাকে, যারা মাটির নাইট্রোজেন বর্ধন করে। মোটামুটি মার্চের মাঝামাঝি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চলে ফুল ফোটার পালা। তখন এ গাছগুলোকে বেশ সুন্দর দেখায়।
এ উদ্ভিদের ভেষজগুণ রয়েছে। এর গাছের বাকল ও পাতা গনোরিয়া ও কাশি সারাতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে বলেও জানান সিনিয়র টি-প্লান্টার ইবাদুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২১
বিবিবি/এএটি