মৌলভীবাজার: বৃষ্টিপাতের চিহ্ন তখনও শুকোয়নি। পাতার গায়ে লেপ্টে আছে।
গাছের নিচ দিয়ে অজানা পথচারীরা এলে তাকে যেন দাঁড়াতেই হয়। অবলীলায় অপূর্ব ঘ্রাণ বিমোহত করে তোলে। যে ঘ্রাণে মুগ্ধ হয়ে তাকাতেই হয় এ ফুলের দিকে।
শহরাঞ্চলে এই ফুলের কদর বেশি। অনেকে শিশুকে মালা তৈরি করে বিক্রি করতে দেখা যায়। সৌন্দর্যপ্রেমীরাও নিজের ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে এ ফুলটি বিশেষ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে পারেন।
চাঁপা ফুলের জনপ্রিয়তা অঢেল। ফলে আমাদের প্রাচীন লোকসাহিত্যে, লোকগীতিতে, নানা কাব্যে এর উল্লেখ রয়েছে।
মাঝারি আকারের গাছের গায়ে শোভা ছড়ায় বহুপাপড়িযুক্ত হলুদ ফুল। এর নাম চাঁপা। এ নাম ছাড়াও একে স্বর্ণচাঁপা, চাম্পা এবং চম্পা নামে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Michelia champace। এটি Megnoliaceae পরিবারের উদ্ভিদ।
সম্প্রতি শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওর এলাকার একটি পুকুর পাড়ে দেখা মিলল চাঁপাফুল গাছের। একটি গাছে অসংখ্য ফুল।
চাঁপা ফুল গাছের মালিক গোপাল দাস বলেন, এইগুলো গ্রীষ্মের ফুল। এরা শুধু সুগন্ধই ছড়ায় না, এর ভেষজগুণও রয়েছে। শুনেছি এর বাকল ও ফুল বাত রোগের জন্য ব্যবহার করা হয়। এর ফুল ও ফল বিষণাশক। বমি বমি ভাব দূর করতে এর ফুল ও ফল ভেষজচিকিৎসকরা ব্যবহার করে থাকেন।
ফুলটি সংরক্ষণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেউ কেউ নিজের ঘরে এই ফুলগুলো সংরক্ষণ করে থাকেন। সেক্ষেত্রে গাছের টাটকা ফুলগুলো ছোট ডাল সহকারে সংগ্রহ করে একটি কাঁচের পাত্রে পানিতে রাখতে হবে। তাতেই কয়েকদিনের জন্য ফুলগুলো সুগন্ধি ছড়াবে এবং ঘরের সৌন্দর্য বাড়াবে। সুগন্ধে ভরে উঠবে ঘর।
চাঁপা ফুলগুলো সোনালী বা হালকা হলুদ রঙের। ফুলগুলোর ব্যাস প্রায় ২ ইঞ্চি। ফুলগুলোর আকৃতি ছুরির ফলার মতো। ফুলের মধ্যবর্তী স্থানে একটি দন্ড রয়েছে। তাতে যুক্ত আছে একগুচ্ছ পরাগকেশর। আর দন্ডের সর্বত্র গর্ভকেশর ফুলের শোভাবৃদ্ধি করে থাকে। এই ফুলের পাপড়ি সংখ্যা প্রায় ১৫টি। তবে ছোট ফুলগুলোতে বা অপ্রস্ফুটিত ফুলে পাপড়ির সংখ্যা আরও কম।
ফুলের পরে আসে গোল গোল ফল। ফলগুলো গাছের ডালে একত্রে যুক্ত হয়ে থাকে। দেখতে অনেকটা আঙুরের মতো লাগে। এগুলোই পাখিদের খাদ্য চাহিদার জোগান দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২১
বিবিবি/এইচএডি/