মৌলভীবাজার: চলতি বছরের সদ্য বিদায়ী ‘জুলাই’ রেখে গেছে ১০৪৫ দশমিক ৯ মিলিমিটার রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত। এমন পরিস্থিতিতে বৃহত্তর সিলেটে চা-শিল্পাঞ্চলজুড়ে চা-গাছের উৎসব শুরু হয়েছে।
চলতি বছরের ‘জুন’ মাসে বৃহত্তর সিলেটে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছিল ২০০৯ মিলিমিটার। এক মাসের ব্যবধানে বৃষ্টির পরিমাণ কমেছে ৯৬৪ মিলিমিটার।
উল্লেখযোগ্য একটি বিষয়, জুলাই-২০২১ এবং জুলাই-২০২২ সালের বৃষ্টি পর্যবেক্ষণ করলে ১০৩ মিলিমিটার বৃষ্টির তারতম্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ চলতি বছরের জুলাইয়ে সিলেট ও শ্রীমঙ্গলে ১০৪৫ মিলিমিটার এবং গতবছর জুলাইয়ে সিলেট ও শ্রীমঙ্গলে ৯৪২ মিলিমিটার প্রাপ্ত বৃষ্টির রেকর্ড থেকে এই পরিসংখ্যানটি উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর, আগারগাঁও, ঢাকার রেকর্ড সূত্রে জানা গেছে, জুলাই মাসে মোট চার দিন সিলেটের রেকর্ডকৃত বৃষ্টির পরিসংখ্যানটি ছিল সারা দেশের সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। সে দিনগুলো: ১১ জুলাই ৩৫ মিলিমিটার, ১৬ জুলাই ১৬ মিলিমিটার, ১৭ জুলাই ১৭৮ মিলিমিটার এবং ১৮ জুলাই ৬৫ মিলিমিটার।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের আবহাওয়া সহকারী অমর তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই সিলেট শহরজুড়ে রেকর্ডকৃত বৃষ্টির পরিমাণ ৭৮২ দশমিক ৯ মিলিমিটার। সবচেয়ে বেশি পরিমাণ তিন দিনের বৃষ্টির তারিখগুলো; ১৬ জুলাই ১৬৩ দশমিক ২ মিলিমিটার, ১৮ জুলাই ৭৬ দশমিক ৮ মিলিমিটার এবং ৫ জুলাই ৯১ দশমিক ২ মিলিমিটার।
অমর তালুকদার আরো বলেন, ২০২১ সালের জুলাই মাসে এই বৃষ্টিপাতে পরিমাণ ছিল ৬৪৭ দশমিক ৯ মিলিমিটার। সে বছরের ৬ জুলাই ১৩২ মিলিমিটার, ১২ জুলাই ৮০ দশমিক ৪ মিলিমিটার এবং ৯ জুলাই ৭৪ দশমিক ৯ মিলিমিটার ছিল সর্বোচ্চ তিন দিনের বৃষ্টিপাত।
এদিকে শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, চলতি বছরের জুলাইয়ে শ্রীমঙ্গলে মোট ২৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় এবং ২০২১ সালের জুলাই মাসে ২৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল।
চা-বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশি চা সংসদের (বিটিএ) সিলেট ব্রাঞ্চ চেয়ারম্যান জিএম শিবলী বাংলানিউজকে বলেন, জুলাই মাসে ১০৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি চায়ের জন্য ইতিবাচক। তবে জুলাইয়ের বেশি ভাগ দিনগুলোতে সূর্য্যের হিট (তাপ) ছিল বেশি। চায়ের পরিপূর্ণ উৎপাদনের জন্য তাপমাত্রার ভারসাম্যটা খুবই জরুরি। অতি বৃষ্টি, কিংবা অতি তাপদাহ এগুলো চা-পাতা সঠিকভাবে তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে।
চায়ের ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে (প্রক্রিয়াজাতকরণ) সময় চায়ের গুণগতমান অক্ষুণ্ন রাখতে চা-বাগানের ফ্যাক্টরিগুলোতে (চা-কারখানা) নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অতি গুরুত্বপূর্ণ বলে কথা প্রসঙ্গে জানান অভিজ্ঞ টি প্ল্যান্টার জিএম শিবলী।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২২
বিবিবি/এএটি