ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

মাগুরার সত্যপুরে স্থায়ী আবাস গড়েছে অতিথি পাখি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২২
মাগুরার সত্যপুরে স্থায়ী আবাস গড়েছে অতিথি পাখি ছবি: বাংলানিউজ

মাগুরা: শীত এলেই হাজার হাজার পথ পাড়ি দিয়ে ছুটে আসে বিদেশি অতিথি পাখি। উষ্ণতার খোঁজে আসা এসব পাখির কলকাকলিতে মুখরিত মাগুরা সদর উপজেলার সত্যপুর গ্রাম।

এখন অতিথি পাখিদের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত পেয়েছে গ্রামটি। গ্রামের ঠাকুর বাড়ি আকাশ মনি, কৃষ্ণচূড়া, দেবদারু গাছে সারা বছর থাকে শত-শত অতিথি পাখি। শুরুতে পাখিগুলো একটা নির্দিষ্ট সময়ে থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে তারা এখানে সারা বছরই অবস্থান করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সত্যপুর গ্রামে ঠাকুর বাড়ি এলাকার বড়-বড় গাছগুলোতে বসেছে অতিথি পাখির দল। বিশেষ করে বিকেল হলেই বিভিন্ন এলাকার মাঠ থেকে অতিথি পাখিরা এসব গছের শাখায় অবস্থান নেয়। যা হয়ে উঠছে অত্যন্ত দৃষ্টি নন্দন।

সত্যপুর গ্রামের পবিত্র চক্রবর্তী জানান, গত ৭ বছর ধরে পাখিগুলো তাদের গ্রামে আসতে শুরু করেছে। তারা ঠাকুর বাড়ি এলাকার বড় গাছগুলোতে অবস্থান করছে। প্রথম দিকে পাখিগুলো শীত মৌসুমে এসে চলে যেত। কিন্তু গত বছর থেকে এগুলো ১২ মাস ধরে গ্রামেই অবস্থান করছে। এলাকাবাসী পাখিগুলো সংরক্ষণে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

মিজানুর রহমান নামে অপর এক গ্রামবাসী জানান, তারা এলাকায় পাখি নিধন নিষিদ্ধ করেছেন। এ কারণে অতিথি পাখিগুলো খুব নিরাপদে এ গ্রামে অবস্থান করতে পারছে। সারা দিন তারা বিভিন্ন মাঠে খাবার গ্রহণের পর বিকেলে আবার নির্দিষ্ট গাছে ফিরে আসে। এগুলো দেখতে প্রতিদিন বিকেলে ভিড় করছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষজন।

সত্যপুর গ্রামের কলেজ শিক্ষক দুলাল চক্রবর্তী জানান, পাখিগুলো এখন এলাকার পরিবেশ ও সৌন্দর্যকে সমৃদ্ধ করেছে। এটি এখন এ গ্রামের সম্পদ। যে কারণে সবাই এগুলো সংরক্ষণে সমানভাবে উদ্যোগী হয়েছে।

পার্শ্ববর্তী ছনপুর গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, ‘লোক মুখে আমরা এ এলাকার পাখির কথা শুনেছি। এখন এগুলো দেখতে এসে খুব ভাল লাগছে। আমার জানা মতে, এগুলো স্থানীয়ভাবে শামুকভাঙ্গা পাখি হিসেবে পরিচিত। পাখির সংখ্যা কমপক্ষে ৫ শতাধিক হবে। এলাকার মানুষ এগুলো সংরক্ষণে ভূমিকা রাখায় দীর্ঘদিন ধরে এখানে তারা অবস্থান করছে’।

সত্যপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণি ছাত্র সুমন শেখ জানান, এতো দিন তারা বইয়ে এসব পাখির কথা জেনেছে। এখন নিজ গ্রামে পাখিগুলো দেখে তারা খুশি। এগুলো তারা কাউকে মারতে দেয় না।

সত্যপুর গ্রামের মাহবুবুর রহমান বলেন, পাখিগুলো ঝড় বৃষ্টির সময় খুব সমস্যায় পড়ে। এ কারণে প্রাণী সম্পদ বিভাগের উচিত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া।

পাখিগুলির বছর ধরে অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাদিউজ্জামান বলেন, আমরা সত্যপুর গ্রামের অতিথি পাখির সংরক্ষণে নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছি। শুধু সত্যপুর নয় গোটা জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাখি নিধনের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমরা প্রচারপত্র ও বিভিন্ন ধরনের ব্যানার সরবরাহ করেছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২২
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।