পঞ্চগড়: আগে গ্রামে প্রচুর খড়ের ঘর দেখা গেলেও এখন আর সেভাবে দেখা যায় না। খড়ের ঘরের বদলে বেশিরভাগ গ্রামেই এখন জায়গা করে নিয়েছে টিনের আধা পাকা ঘর বা পাকা দালান।
কয়েকটি পরিবার যুগ যুগ ধরে পারিবারিক ও গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে এখনো খড়ের ঘরেই থাকছেন। তাদের দাবি, ঘরগুলোতে বসবাস করা আরামদায়ক।
রাজাগাঁও ঘুরে দেখা গেছে, ঘরগুলো খড়ের হলেও ভেতরের আসবাপত্রে এসেছে নতুনত্ব। বৈদ্যুতিক ফ্যান, টিভি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন আধুনিক পণ্য রয়েছে ঘরগুলোর ভেতরে।
বাসিন্দারা জানান, শীত, বর্ষা ও গ্রীষ্মে দারুণ আরামদায়ক এসব ঘর।
এমনই ঘরের মালিক হাসেন আলী ও আইনুল হক বাংলানিউজকে বলেন, এসব ঘরে গরমের সময় ভেতরে ঠান্ডা থাকে এবং ঠান্ডার সময় গরম থাকে। ঘরগুলো আমাদের বাপ-দাদার আমল থেকে আছে। শুধু আমরা বছরে বছরে মেরামত করি।
আকবর আলী বাংলানিউজকে বলেন, এসব ঘর বাপ-দাদার স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। শুধু শোয়ার ঘরই না। রান্নাঘর থেকে শুরু করে মাঠের ফসল তুলে রাখার ঘরটিও বাঁশ ও খড় দিয়ে তৈরি।
স্থানীয় নুরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, সারাজীবন এ ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করব। আমরা অনেকেই চাইলে পাকা দালান তুলতে পারি, আবার কেউ কেউ চাইলে টিনের ঘর করতে পারে। কিন্তু তা করছি না, কারণ ইট-সিমেন্টের ঘরের থেকে খড়ের ঘরগুলোতে অনেকটাই ভালো আছি। রোদ, ঝড়-বৃষ্টি কোনো কিছুতে ভয় নেই। অন্যদিকে বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে আমাদের গ্রামে এসব ঘর দেখতে ছুটে আসছেন।
জানা গেছে, খড়ের ঘর উত্তরের জনজীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে যুগ যুগ ধরে। তবে বর্তমানে হাতে গোনা কয়েকটি বাড়ি যেন কালের সাক্ষী হয়ে আছে।
দিনাজপুর সরকারি মহিলা কলেজের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান লেখক ও গবেষক আলী ছায়েদ বাংলানিউজকে বলেন, শিল্পায়ন ও আধুনিকায়নের প্রভাবে এ লোকশিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। তবে বর্তমানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাতে গোনা কয়েকটি বাড়ি যেন কালের সাক্ষী হয়ে আছে। আমরা চাই, যে ঘরগুলো আছে, সেগুলো যেন ঐতিহ্য হিসেবে ধরে রাখা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২৪
এসআই