যারা এ সময়কার ফুটবলপ্রেমী কিংবা ভালো ফুটবলার হতে আগ্রহী তাদের মধ্যে অধিকাংশই বিশ্ব নন্দিত ফুটবলার লিওনেল আন্দ্রেস মেসির ভক্ত এবং অনুসারী। এর ব্যতিক্রম নয় চাঁদপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের খুদে ফুটবলার সোহানের।
অনন্য প্রতিভার অধিকারী মাত্র সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী এই শিশু তার ভবিষ্যৎ জীবনে মেসি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। ফুটবল খেলার কিছু কৌশল দেখিয়ে এই শিশু ইতোমধ্যে সবার নজর কেড়েছে। তবে তার এই প্রতিভার ধারাবাহিকতার জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি অভিভাবকের।
এই শিশুর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তার ফুটবল খেলার নানা কৌশল। কথা হয় তার বাবা, প্রতিবেশী ও স্বজনদের সাথে।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুরের সাড়ে পাঁচানি গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মো. সোহেল প্রধানের ছেলে মো. সোহান। দুই ভাইবোনের মধ্যে সোহান ছোট। তারা বাবা সোহেল প্রধান পেশায় একজন সাইকেল মেরামত কাজের মিস্ত্রি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট বাড়িতে শিশু ফুটবলার সোহান পরিবারের সাথে থাকে। স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিশু শ্রেণিতে পড়ে সোহান। বোন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে।
সাড়ে পাঁচানি গ্রামের শিশুদের জন্য খেলার কোনো মাঠ নেই। অধিকাংশ শিশুরা সড়কে কিংবা ফসলি জমিতে খেলাধুলা করে। শিশু সোহানও তার বাড়ির আঙিনায় এবং তার বাবার সাইকেল গ্যারেজের সামনে রাস্তায় নিয়মিত ফুটবল খেলার চর্চা করে।
সোহান বলে, বাবাই আমাকে খেলা শেখায়। আমি বড় হয়ে মেসির মতো খেলোয়াড় হতে চাই।
সোহানের খেলার সহপাঠী নাজিম জানায়, সোহান বয়সে ছোট হলেও তার খেলার ধরন অনেক ভালো। তার বাবাই প্রতিদিন ফজরের নামাজের পরে তাকে ফুটবল খেলার প্রশিক্ষণ দেন। এরপর দিনের অন্য সময় সোহান আমাদের সাথে খেলে।
শিশু সোহানের দাদি রোকেয়া বেগম বলেন, এক বছর বয়স হওয়ার পর সোহানকে বল কিনে দেন দাদা শাহ আলম। সেই থেকেই তার ফুটবলের প্রতি আগ্রহ। খেলার প্রতি তার যে আগ্রহ তা আমরা সবাই খুবই আনন্দিত। প্রতিদিনই অনেক লোকজন বাড়িতে তার খেলা দেখার জন্য আসে। আমার ছোট এই নাতি বড় খেলোয়াড় হবে এটাই আমাদের স্বপ্ন।
সোহানের বাবা মো. সোহেল প্রধান বলেন, সোহানের ফুটবল খেলার চর্চা ও প্রশিক্ষণ আমার হাতেই। আমাদের এলাকায় খেলার মাঠ নেই। আর আমি সাইকেল মেরামতের কাজ করি।
মতলব উত্তর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ক্রিকেটার মো. শামছুজ্জামান ডলার বলেন, লোকমুখে সোহানের ফুটবল খেলার বিষয়ে জানতে পেরে তার বাড়িতে আসি। একজন খুদের ফুটবলের ওপর এমন দখল খুবই অসাধারণ। মূলত এটি আল্লাহ প্রদত্ত। বলের প্রতি তার অসম্ভব নিয়ন্ত্রণ। কয়েকজনের সাথে তার খেলা দেখে আমি রীতিমতো বিস্মিত হয়েছি। তাকে এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। কারণ তার বাবা একজন দরিদ্র মানুষ।
এএটি