ঢাকা: পিগমিরা পৃথিবীর সবচেয়ে খর্বকায় জাতি। আফ্রিকার এ ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর গড় উচ্চতা সর্বোচ্চ ৫ ফুট।
সম্প্রতি গবেষকরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, পিগমিরা তাদের সাইজের জন্য খুব সহজেই রেইনফরেস্টে শিকার করতে পারে।
নৃ-তত্ত্ব ও জীববিদ্যা বিশেষজ্ঞ জর্জ এইচ পেরি জানান, রেইনফরেস্টের মতো দুর্গম জঙ্গলে কীভাবে শিকারিরা শিকার করে- এই কৌতূহল থেকেই পিগমিদের উপর গবেষণা চালানো শুরু করেন তিনি।
মূলত রেইনফরেস্ট মানুষের থাকার জন্য অনুপোযোগী। এখানে প্রচুর গরম। আবহাওয়া বেশ আর্দ্র। খাবারও বেশ সীমিত। বিশেষ তরে যখন কোনো ফলের মৌসুম না থাকে।
পিগমিরা মধ্যআফ্রিকার অরণ্যচারী মানবগোষ্ঠী। বহুগোত্রে বিভক্ত এরা। এদের কয়েকটি গোত্র হলো বাকা, বাকিগা, বাটওয়া প্রভৃতি।
পেরি ও তার সহযোগীরা উগান্ডার রেইনফরেস্টে বাটওয়া ও বাকিগাদের ওপর গবেষণা চালান। দেখেন তারা কীভাবে এ জঙ্গলের মধ্যে শস্য উৎপাদন করে।
এছাড়া মধ্যআফ্রিকার বাকা ও জেবিদের কৃষিকাজও পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকরা।
বাটওয়া পুরুষদের গড় উচ্চতা পাঁচ ফুট ও নারীদের চার ফুট আট ইঞ্চি।
পিগমিদের এ খর্বাকৃতির কারণ হলো, শরীরের উচ্চতা বাড়ানোর জন্য যে ইনসুলিন জাতীয় আইজিএফ নামের উপাদানটি কাজ করে, পিগমিদের ক্ষেত্রে তা ঘটে না। এ কারণেই এরা বেটে হয়ে থাকে।
পেরির মতে, ছোট দৈহিক গড়নের জন্য রেইনফরেস্টের আবহাওয়াকেও দায়ী করা যায়। খর্ব দেহে খাবারের প্রয়োজন কম হয়। এছাড়া খর্বাকৃতির কারণে তাপও কম উৎপন্ন হয় যা রেইনফরেস্টের আর্দ্রতার সঙ্গে মানিয়ে যায়।
রেইনফরেস্টের ঘন জঙ্গলে চলাফেরা ও গাছে চড়ার জন্য এদের দেহের আকৃতি খুবই উপযোগী।
পিগমি আফ্রিকার আদিমতম জাতিগোষ্ঠী। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেও এদের অস্তিত্ব ছিল। ফিলিপাইনের ইয়েতা আদিবাসীরা মূলত পিগমি। আন্দামান দ্বীপপুঞ্জেও পিগমিদের অস্তিত্ব আছে। এরা আছে পাপুয়া নিউগিনিতেও।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৪