ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

মুচির কাজ করেও সুখী রতন

গোলাম রসূল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৪
মুচির কাজ করেও সুখী রতন ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: একজন রতন লাল। বয়স ৪৫ ছুঁই ছুঁই।

বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায়। বাবার রেখে যাওয়া সামান্য কৃষি জমি চাষ করেই চলছিল সংসার। এরই মধ্যে জেঁকে বসলো অভাব। ভাগ্যের ফেরে এলেন রাজধানী ঢাকায়। সেটা ১৪ বছর আগের কথা।

ঢাকা এসেই রতন লাল পড়লেন নতুন সমস্যায়। কি কাজ করবেন, কীভাবে উপার্জন করবেন তিনি?

প্রথম তিন-চার দিন বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাট চাকরির সন্ধান করলেন। লাভ হলো না। হঠাৎ মনে পড়লো গ্রামের বাড়ির কয়েকটি মুচি পরিবাররের কথা। রতনের  মাথায় বুদ্ধি এলো- মুচির কাজ করলে মন্দ হয় না।

চলে গেলেন গ্রামের বাড়ি। কয়েকদিন গ্রামের মুচিদের কাছ থেকে প্রাথমিক কিছু টিপস ও সরঞ্জাম নিয়ে ফের এলেন ঢাকায়। নতুন বাজার এলাকার বিভিন্ন স্পটে বসে শুরু করলেন কাজ। সেই থেকে শুরু। এরই মধ্যে কেটে গেল ১৪ বছর।

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে রতন জানান, তিনি অনেক সুখী একজন মানুষ। পরিবারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে বিকাশ লাল দুই বছর আগে বিয়ে করেছে। গ্রামের বাড়িতে মুদি দোকান চালায়। আট মাসের শিশু সন্তান রাকেশ লালকে নিয়ে ভালোই কাটছে দিনকাল।

ছোট ছেলে প্রকাশ এবার স্থানীয় কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। তবে পাস করতে পারে নি। মন খারাপ হলেও রতন আশাবাদী আগামী বছর অবশ্যই পাস করবে। লেখাপড়া শেষ করে সরকারি চাকরি করবে।

সবার ছোট মেয়ে অজন্তা নবম শ্রেণিতে পড়ে। রতন জানান, তিনি ভাটারা এলাকার একটি মেসে মাসিক ৮০০ টাকা ভাড়া দিয়ে থাকেন। খাওয়া ও অন্য খরচ বাদে তিনি প্রতি মাসে বাড়িতে পাঠাতে পারেন ৮-১২ হাজার টাকা। ওই টাকা দিয়ে তার পরিবারের ভালোভাবেই চলে যায়।

রতন লাল বিশ্বাস করেন, ঢাকা না এলে তার পরিবার এতদিনে পথে বসে যেত। সেজন্য তিনি সৃষ্টিকর্তা ও গ্রামের মুচিদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।       

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।