নানান কারণে উড়োজাহাজ ভ্রমণ মানুষের কাছে যেমন পছন্দ, তেমন অপছন্দেরও। এয়ারপোর্টের পরিবেশ-প্রতিবেশও থাকে পছন্দ-অপছন্দের বিবেচ্য বিষয়।
সম্প্রতি ভ্রমণ বিষয়ক ওয়েবসাইট স্লিপিংইনএয়ারপোর্টস.নেট ২০১৪ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বাজে এয়ারপোর্টের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।
সেপ্টেম্বর ২০১৩ থেকে আগস্ট ২০১৪ পর্যন্ত ১৮ হাজারেরও বেশি যাত্রীর ভ্রমণ অভিজ্ঞতার উপর নিরীক্ষা চালিয়ে এ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।
এ রিপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে এয়ারপোর্টের যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক স্থানের ব্যবস্থা, পরিচ্ছন্নতা, এয়ারপোর্ট কর্মীদের সহযোগী মনোভাব ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক বিশ্বের সবচেয়ে বাজে ৫ এয়ারপোর্ট
পাকিস্তান: বেনজির ভুট্টো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
বেনজির ভুট্টো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পাকিস্তানের ৩য় বৃহত্তম বিমানবন্দর। অগণিত যাত্রীর পদচারণায় দম বন্ধ হয়ে ওঠা এ এয়ারপোর্টের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, যাত্রীদের জন্য অপর্যাপ্ত ব্যবস্থা ও নিরাপত্তাকর্মীদের দুর্ব্যবহার একে বিশ্বের এক নম্বর বাজে এয়ারপোর্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এছাড়াও, এয়ারপোর্টে আসা যাওয়া করতে গিয়ে যাত্রীরা বিভিন্ন প্রতারক ও অসৎ ট্যাক্সি ড্রাইভারের পাল্লায় পড়ে সর্বস্ব হারানোর নজিরও ভুরি ভুরি।
পাকিস্তানের বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, বিগত কয়েক মাসে যাত্রীদের অভিযোগ অনেক কমে এসেছে। আমরা জানি, আমাদের সীমাবদ্ধতা কোথায় এবং তা কাটিয়ে উঠতে আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি।
সৌদি আরব: বাদশাহ আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
সৌদি আরবের ব্যস্ততম ও সারা বিশ্বের হজ যাত্রীদের আগমনের জন্য এই বিমানবন্দর ব্যবহৃত হলেও এটি বিশ্বের সবচেয়ে বাজে এয়ারপোর্টের তালিকায় ২য় স্থানে রয়েছে।
ইমিগ্রেশনের দীর্ঘ সারি, যাত্রীদের অপর্যাপ্ত সুবিধা এবং অনভিজ্ঞ ও বদমেজাজী কর্মকর্তাদের কারণে এটি যাত্রীদের কাছে খুবই বিরক্তিকর একটি এয়ারপোর্ট হিসেবে পরিচিত।
সৌদি আরবের বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র খালিদ আল-খিবারী এ রিপোর্টের বিরোধিতা করে বলেছেন, আমাদের এয়ারপোর্টে সবরকম সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তারপরেও ছোট যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো আশা করছি ২০১৫ সালে উদ্বোধন হতে যাওয়া আমাদের নতুন এয়ারপোর্টে আর থাকবে না।
নেপাল: ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
নেপালের একমাত্র আন্তর্জাতিক এ বিমানবন্দরটি বাজে তালিকার ৩য় স্থানে উঠে এসেছে। অধিকাংশ যাত্রী তাদের মন্তব্যে এ বিমানবন্দরের নোংরা পরিবেশ, দুর্গন্ধময় টয়লেট এবং বিমানবন্দর সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ডের দুর্দশাকে চিহ্নিত করেছেন।
আরেকটি ভ্রমণ বিষয়ক সাইট স্কাইট্রাক্স বিদেশি পর্যটকদের তাদের নিজ দেশ থেকে ভিসা নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছে। কারণ হিসেবে তারা ইমিগ্রেশন অফিসারদের দুর্ব্যবহার ও অসহযোগিতামূলক মনভাবকে দায়ী করেছেন।
ফিলিপাইন: ম্যানিলা নিনয় একুইনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
বিগত তিন বছর যাবত বাজে তালিকার শীর্ষে অবস্থানের পর অবশেষে এবার তালিকার ৪র্থ স্থানে নেমে এসেছে এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি। যাত্রীদের মতামত অনুযায়,- সম্প্রতি যাত্রীসেবার মান বাড়ানোর কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে এ বিমানবন্দরটি তালিকার নিচের দিকে নেমে এসেছে।
তবে, জনাকীর্ণ পরিবেশ, বায়ু দূষণ, অব্যবস্থাপনা এবং নোংরা ও দুর্গন্ধময় পরিবেশের কারণে এখনও বিমান যাত্রীদের কাছে বিরক্তিকর এ বিমানবন্দরটি।
উজবেকিস্তান: তাসকেন্ত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম এ বিমানবন্দরে যাত্রীদের জন্য কোনো লাইন বা ভিড় সামলানোর ব্যবস্থা নেই। ঘুষখোর ও বদমেজাজী ইমিগ্রেশন অফিসারদের কারণে এখানে যাত্রীদের প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হয়। এমনকি যাত্রীরা কোনো বিষয়ে অভিযোগ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তাদের বাধা দেওয়া হয়।
নিরাপত্তাহীনতা, অব্যবস্থাপনা ও যাত্রীদের হয়রানির কারণে এ বিমানবন্দরটি বিশ্বের ৫ম বাজে বিমানবন্দর হিসেবে চিহ্নিত।
বাংলাদেশ সময়: ০৭০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৪