ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

ফিচার

জমজ এমনও হয়!

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৬ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১৫
জমজ এমনও হয়!

ঢাকা: স্কুলে কেউই বিশ্বাস করতো না যে তারা জমজ বোন। এমনকি একই রকম পোশাক পরেও বন্ধুদের বোঝানো যেতো না যে তারা জমজ।

না পেরে বন্ধুদের নিজেদের জন্ম নিবন্ধনও দেখাতে হয়েছে তাদের!

বলছি লুসি অ্যালমার ও মারিয়া অ্যালমারের গল্প। ১৯৯৭ সালে মিশ্র জ্যামাইকান বংশদ্ভূত ডোনা ও যুক্তরাজ্যের শুভ্র বর্ণের বাবা ভিন্সের ঘরে জন্ম নেয় জমজ দুই বোন লুসি ও মারিয়া।

সাধারণত পরিবারের জমজ সদস্যদের রূপ অদল বদল করা দুষ্টুমিতে মাকে সামলাতে হয় বেশ ধকল। আর বন্ধুরা? বন্ধুদের তো প্রায়শই বিষম খেতে হয় জমজের মধ্যে কোনটিই তার আসল বন্ধু সেটা নির্নয় করতে গিয়ে। কিন্তু সেদিক থেকে লুসি ও মারিয়ার মাকে বা বন্ধুদের কোনো ঝামেলাই পোহাতে হয়নি।


গালে গোলাপি আভা। দেবদূতের মত ধবধবে ফর্সা রং আর সোনালি চুল। মেয়েটির নাম লুসি। আর তারই জমজ বোন মারিয়ার গায়ের রং চাপা হলেও বেশ মিষ্টি দেখতে। কাঁধ বরাবর মেঘকালো ঘন ঢেউ খেলানো চুল। কেউ মুখে না বলে দিলে বোঝার উপায় নেই যে তারা জমজ সহোদরা। সুতরাং, স্কুলে কথায় কথায় নিজেদের লুসি বা মারিয়া বলে পরিচয়ও দিতে হয়নি তাদের। আর সবাই সহজেই মারিয়া আর লুসিকে চিনতে পারতো।


যখন ডোনা ও ভিন্স জানলেন যে তাদের অনাগত সন্তান জমজ তখন তাদের ধারণাই হয়নি যে তারা দেখতে এতটাই ভিন্ন হবে। জন্মের পর নার্স যখন লুসি আর মারিয়াকে মা ডোনার কোলে তুলে দেন তখন অবাক চোখে তাকিয়ে ছিলেন তিনি। কারণ গর্ভাবস্থায় স্ক্যানের সময় তাদের ভিন্ন গায়ের ধরা পড়েনি।


ইংল্যান্ডের গ্লুকস্টারবাসী ডোনা ও ভিন্সের ছেলেমেয়ের সংখ্যা পাঁচ। জর্ডান, জর্জ ও শিনার পর লুসি আর মারিয়াই সবচেয়ে কনিষ্ঠ।
নীল নয়না লুসি জানান, লুসি ও মারিয়ার গাত্রবর্ণ যেমন বিপরীত তেমনি তাদের অন্যান্য ভাইবোনেদের গায়ের রঙ তাদের দু’জনের গায়ের রঙের মাঝামাঝি।


লুসির দাদি ছিলেন অনেক ফর্সা। তার গায়ের রং তার দাদির গায়ের রঙের মত বলেই জানান তিনি।
বর্তমানে আঠারো বছর বয়সী জমজ দুই সহোদরা ইংল্যান্ডের ভিন্ন দু’টি কলেজে অধ্যয়নরত। মারিয়া শেলটেনহ্যাম কলেজে আইন নিয়ে পড়ছেন আর লুসি গ্লুকস্টার কলেজে ডিজাইনিংয়ে।


চেহারার মত আচরণেও তাদের রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। মারিয়া বহির্মুখী ও আত্মবিশ্বাসী আর লিসা অন্তর্মুখী ও লাজুক।


রূপ ও গুণে সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী জমজ দুই বোন একে অপরকে নিয়ে সদা গর্বই করেন। মারিয়া তার কলেজের সব বন্ধুদের কাছে শুভ্রসাদা বোনকে নিয়ে গল্পে মাতেন আর লিসা গর্ব করেন শ্যামবর্ণের মিষ্টি সহোদরাকে নিয়ে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে মারিয়া ও লুসির মত ভিন্ন জমজ এক মিলিয়নে একবার হয়। জিনগত ভিন্নতার কারণে এমন ঘটনা ঘটে। যেহেতু লুসি ও মারিয়ার মা ডোনা শুভ্র ও কৃষ্ণ বর্ণের সংমিশ্রণ, তাই তার জিন সাদা ও কালো দুটো বর্ণই বহন করছে। যার ফলে মারিয়া ও লুসির গায়ের রং ভিন্ন হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।