ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

বৌদ্ধবিহারে দর্শনার্থীদের মিলনমেলা

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৬
বৌদ্ধবিহারে দর্শনার্থীদের মিলনমেলা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার থেকে ফিরে: চারদিকে শুধুই মানুষ। অনেকটা স্রোতের মত একদিকে ছুটে চলেন সবাই।

আবার অনেককে ছোট ছোট দলেও বিভক্ত হয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। দলে রয়েছেন নানা বয়সের মানুষ।

সবার আকর্ষণের সেই কেন্দ্রবিন্দুর নাম বৌদ্ধবিহার। স্থাপনাটি সমতল থেকে প্রায় ৪০ফুট উঁচুতে অবস্থিত। দেখতে ত্রিভুজ আকারের মত। পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি নির্মাণ করেন। পাল বংশের সেই ইতিহাস-ঐতিহ্যের অনন্য নিদর্শন সবাইকে যেন কাছেই টানে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিভিন্ন বয়সী মানুষের ঢল নামে। প্রতিদিন বৌদ্ধবিহারে বসে দর্শনার্থীদের মিলনমেলা।
 
সোমবার (০৮ফেব্রুয়ারি) নওগাঁর ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার এলাকা ঘুরে এমনই চিত্র দেখা যায়।
 
সরেজমিনে দেখা যায়, বৌদ্ধবিহার ও স্থাপনা এলাকায় সংস্কার কাজ চলছে। এরমধ্যেই বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন ভরে দর্শনার্থীরা আসছেন সেখানে। গাড়ি থেকে নেমে সবাই ছুটে চলেন বৌদ্ধবিহারের দিকে। নতুন করে নির্মাণ করা রাস্তার পাশ দিয়ে রকমারি ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। আর জাদুঘর এলাকায় ফুলের বাহারি বাগানসহ সবুজঘেরা পরিবেশ চোখে পড়ে। যা দর্শনার্থীদের বিমোহিত করে তোলে।
 
বগুড়া থেকে আসা দর্শনার্থী ফরহাদ শাহী বাংলানিউজকে জানান, প্রত্যেক নাগরিকের উচিত নিজ দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যগুলো সম্পর্কে জানা। সেগুলো স্বচক্ষে দেখা। আর এমন ভাবনা থেকেই তিনি বৌদ্ধবিহার দেখতে এসেছেন বলে জানান।
 
রাজশাহী থেকে আসা মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে কথা বৌদ্ধবিহার পরিদর্শন শেষে। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। সময় পেলেই দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখা তার একটা নেশা। সেই নেশা থেকেই তার বৌদ্ধবিহার দেখতে আসা।
 
এই ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, স্থাপনাটি তাকে ভীষণভাবে মুগ্ধ করেছে। পুরো এলাকা তন্ন তন্ন করে ঘুরে দেখেছেন। কিন্তু শত ইচ্ছে থাকার পর বিহারের চূঁড়ায় উঠতে পারেননি। কেননা সংস্কার কাজ চলার কারণে দর্শনার্থীদের সেখানে ওঠা পুরোপুরি নিষিদ্ধ।
 
তাই অনেকের মত তার বৌদ্ধবিহারের চূঁড়ায় ওঠার ইচ্ছে এবারের মত অপ‍ূর্ণই রয়ে গেলো। সংস্কার কাজ শেষ হলে আবারো এখানে আসবেন বলে জানান তিনি।

রাজশাহী মিশন গালর্স হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী সুইটি বাংলানিউজকে জানান, বইপুস্তুকের পাতায় বৌদ্ধবিহার সম্পর্কে পড়ে আসছি। কিন্তু এতোদিন চোখে দেখার সুভাগ্য হয়ে ওঠেনি। শুধু চোখের পাতায় স্বপ্ন হয়ে ভেসে ছিল। আর দেরিতে হলেও প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা সফরে এসে সেই স্বপ্ন পূরণ হলো।
 
পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার জাদুঘর কাষ্টডিয়ান মো. সাদেকুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, দেশের মানুষসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শতশত দর্শনার্থী বা পর্যটকরা ঐতিহাসিক এ স্থাপনাটি দেখতে নিয়মিত এখানে আসেন। বছরের সেপ্টেম্ব-অক্টোবর থেকে শুরু করে মার্চের শেষ অবধি পর্যন্ত বৌদ্ধবিহার দেখতে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী বা পর্যটক আসেন। তবে এর পরের মাস থেকে দর্শনার্থীর সংখ্যা কমতে থাকে।
 
তিনি আরো জানান, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার দেখতে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই হাজারের মত দর্শনার্থী আসেন। তবে সংস্কার কাজ শেষ হয়ে গেলে এখানে আসা মানুষের সংখ্যা আরো অনেক বেড়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন।     

বাংলাদেশ সময়: ০০০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৬
এমবিএইচ/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।