ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

‘ভিন্ন জগতে’ সপ্তমাশ্চর্য

হাসিবুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৬
‘ভিন্ন জগতে’ সপ্তমাশ্চর্য ছবি - বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রংপুর থেকে: বিশ্বের সপ্তমাশ্চর্যের তাজমহল, পিরামিড, চীনের প্রাচীর, কিংবা আইফেল টাওয়ার একসঙ্গে দেখার সুযোগ, সামর্থ্য বিশ্বের খুব কম মানুষেরই আছে। তবে সপ্তমাশ্চর্যের সবগুলো একসঙ্গে দেখার সুযোগ রয়েছে ‘ভিন্ন জগতে’।


 

ভিন্ন জগত কিন্তু পৃথিবীর বাইরে নয়, দেশের মধ্যেই গড়ে উঠেছে এক ‘ভিন্ন জগত’। এজন্য যেতে হবে রংপুরের গঞ্জিপুরে। সেখানে গড়ে উঠেছে 'ভিন্ন জগত' নামের পার্ক ও পর্যটন কেন্দ্র। শহর থেকে একটু দূরে সবুজ বৃক্ষরাজি আর পাখ-পাখালির কলতানে মাতোয়ারা এ জগৎ।

তবে সবুজে ঘেরা এ পার্কটিতে শুধু সপ্তম‍াশ্চর্যই নয়, পাশাপাশি রয়েছে লোকজ সংস্কৃতির 'সোনার তরী' কমিউনিটি সেন্টার, তিন তারকা মানের রেস্ট হাউস 'ড্রিম প্যালেস' ও 'রয়েল প্যালেস', উপাসনালয়, বিপণী বিতান। মহাকাশ দেখার জন্য রয়েছে প্লানেটোরিয়াম। এছাড়া অন্য পার্কের মতো রয়েছে স্পিনিং হেড, নাগরদোলা, ম্যারি গো রাইন্ড, রেলগাড়িসহ বিভিন্ন রাইড।

আড়াইশ একর জায়গার উপর নির্মিত এ পার্কে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ‘মুক্ত বিহঙ্গ’। আরও রয়েছে ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ সম্মান জানিয়ে নির্মিত ভাস্কর্য। বাংলার লোকজ সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে 'আজব গুহা' যেখানে গ্রাম বাংলার গরুর গাড়ি, বর-বধূসহ বিভিন্ন প্রতিকৃতি রয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা। সেখানে রয়েছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পশুপাখি। পার্কটির সীমানার ভিতরে চারপাশ জুড়ে রয়েছে বিশাল লেক, আর লেকের মাঝে করা হয়েছে বনায়ন। যেখানে শোনা যায় পাখির কিচির মিচির। লেকের পরিষ্কার পানিতে খেলা করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।

লেকের পাশ দিয়ে ঘুরতে ঘুরতেই চোখে পড়ে মাছ ধরার জন্য ওত পেতে থাকা মাছরাঙা, জঙ্গলের মধ্য দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মিলে যাবে সাপ-নেউলের দেখা।

পার্কটিতে দুপুরের পর থেকেই আশপাশের এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা এসে ভিড় জমান। শহর ও আশপাশের জেলাগুলো থেকে শিক্ষা সফরে আসে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

রংপুর জিলা স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া রুবাইয়াত হাসান রিদম ও এস এম রোহিত আল কবির এসেছে তাদের মায়েদের সঙ্গে। দুই বন্ধুর কথায় ছিলো পার্কটি নিয়ে উচ্ছ্বাস। তবে তাদের দাবি প্লানেটোরিয়াম, ত্রিমাত্রিক সিনেমা, ভ‍ূতের দৃশ্যগুলো ও প্রযুক্তি যেন আপগ্রেড করা হয়।

জনা পঞ্চাশেক শিক্ষার্থী নিয়ে রংপুর শহরের রানা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে শিক্ষা সফরে এসেছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষিকারা। প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আরব আলী বলেন, পার্কটি শিশুদের শিক্ষা সফরের জন্য খুবই উপযুক্ত। এখানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে শুরু করে লক্ষ বছর আগে বিলুপ্ত ডাইনোসরও রয়েছে, যা শিশুদের চিন্তার জগৎ খুলে দিতে ও ইতিহাস জানতে সহায়তা করবে।

পার্কটির সহকারী ব্যবস্থাপক শাহ মো. সাব্বিদ আলম রুম্মন বাংলানিউজকে বলেন, পার্কটি সব বয়সী মানুষের উপযোগী করেই গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে প্রকৃতির কাছ থেকে সৌন্দর্য অবলোকনের জন্য শিক্ষা সফরে যেমন আসার সুযোগ রয়েছে, তেমনি নিছক আনন্দ ভ্রমণের সুযোগও রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৬
এইচআর/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।