ঢাকা, সোমবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ জুন ২০২৪, ০৯ জিলহজ ১৪৪৫

ফিচার

ভাষা বুঝতে মানুষে-কুকুরে এমন মিল!

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৬
ভাষা বুঝতে মানুষে-কুকুরে এমন মিল! ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: মানুষের সবচে কাছের বন্ধুটির নাম কুকুর। সবচে প্রভুভক্ত আর উপকারী; সবচে নি:স্বার্থ আর ত্যাগী।

রাতে বাড়ি পাহারা দেওয়া থেকে শুরু করে সর্বক্ষণ মানুষের সঙ্গ দেয়া এই প্রাণীটি মানুষের জন্য নিজের জীবনও বিলিয়ে দিতে পারে অকাতরে। শত বিপদে-দু:সময়েও সে প্রভুকে ছেড়ে যায় না।

প্রাগৈতেহাসিক কাল থেকেই পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে সে আছে ছায়ার মতো মানুষের পাশে; মানুষের সম্পদে-বিপদে রাত্রিদিন। মানুষ যে প্রাণীটিকে প্রথম পোষ মানিয়েছিল সে হচ্ছে কুকুর। এরপর থেকে কুকুর আর মানুষের সঙ্গ ছাড়েনি। একদা সে ছিল শিকার-সঙ্গী; এখন সে সম্পর্ক হয়েছে নানামুখি। আজকাল তো জাতীয় নিরাপত্তা বিধানেও পুলিশ ও গোয়েন্দাদের নিত্যসঙ্গী কুকুর। মাদক সন্ধান থেকে শুরু করে বোমা ও বিস্ফোরক খুঁজে বের করাতে তার জুড়ি মেলা ভার।

হিন্দু পুরাণে আছে, পাণ্ডবকুলশিরোমণি যুধষ্ঠির যখন স্বর্গে যান তখনও তার সঙ্গী হয়েছিল তার প্রিয় পোষা কুকুরটি।

মানুষের সঙ্গে কুকুরের ভাব বিনিময় আর আদানপ্রদানও অনেক গভীর। এবার নতুন এক গবেষণায় জানা গেল, মানুষ যেমনভাবে শব্দ ও স্বরের ওঠানামা দিয়ে অন্যের ভাষা বুঝতে সক্ষম কুকুরও অবিকল সেটাই করতে সক্ষম(Humans understand speech through both vocabulary and intonation.)। অর্থাৎ উচ্চারিত শব্দের অর্থ এবং স্বরের ওঠানামা-ইঙ্গিত---দুটো সে বুঝে নেয় অবিকল মানুষেরই মতো। এক্ষেত্রে মানুষের মস্তিষ্ক ও কুকুরের মস্তিষ্ক একই পদ্ধতিতে কাজ করে।

মানুষ মস্তিষ্কের বাম অংশ দিয়ে উচ্চারিত শব্দ বুঝতে পারে। আর ডান অংশ দিয়ে বুঝতে পারে স্বরের ওঠানামা ও ইঙ্গিতের অর্থ। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে, কুকুরও এদুটো কাজে মস্তিষ্কের বাম ও ডান অংশকে অবিকল মানুষের মতোই ব্যবহার করে থাকে ---dogs processed words with the left hemisphere, while intonation was processed with the right hemisphere - just like humans.

ভাষা ও স্বরের ওঠানামা ও ইঙ্গিতের অর্থ বুঝবার ক্ষেত্রে কুকুরে-মানুষে এমন অবিকল, এমন তাকলাগানো মিল খুঁজে পেয়েছেন হাঙ্গেরির একদল গবেষক। বুদাপেস্টের  Eotvos Lorand University-র একদল স্নায়ুবিজ্ঞানী এই গবেষণাটি চালান। গবেষকদলের প্রধান আত্তিলা আনদিক্স (Attila Andics) এই চাঞ্চল্যকর তথ্যটি জানিয়ে আরো বলেছেন, কুকুরের ভাষা বোঝার ক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তা আমাদের ধারণার চেয়ে বহু-বহু গুণে বেশি।

দলপ্রধান আত্তিলা আরও বলেন, ইট যেমন ভবন নির্মাণের উপাদান বা বিল্ডিং ব্লক, তেমনি ওয়ার্ড বা শব্দ হচ্ছে মানুষের ভাষা তৈরির উপাদান বা বিল্ডিং ব্লক। কিন্তু অন্য কোনো প্রাণীর মধ্যে এটা দেখা যায় না। কিন্তু কুকুর এসে সে বদলে দিয়েছে। তবে কুকুরের অক্ষমতা একটাই সে মানুষের মতো কথা বলতে পারে না। এছাড়া আর কোনো খামতি নেই তার। এই চাঞ্চল্যকর গবেষণার ফলাফলটি প্রকাশিত হয়েছে journal Science-এ।

জয়তু মানুষে-কুকুরের চিরায়ত দোস্তি!

বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৬
জেএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।