ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

মাওয়া মহাসড়কের দু’পাশে শৈশবের মাতামাতি

মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
মাওয়া মহাসড়কের দু’পাশে শৈশবের মাতামাতি ছবি: শাকিল আহমেদ / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

উউউট... গলা ফাটা চিৎকার প্রিন্সের কণ্ঠে। আবার গায়ের জোড়ে ছক্কা হাঁকায় হাবিব! এখানে ভয় নেই কারো জানালার কাঁচ ভাঙার, নেই বকাঝকা খাওয়ার ভয়ও! নেই দৃষ্টি দূষণ।

পূর্ব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিণ, তাকালে পুরো আকাশটা দেখতে পাবেন ক্যানভাসে।

শুক্রবার মানেই সব কাজ বন্ধ, শুক্রবার মানে ছুটি- খেলার দিন। তাই পোস্তগোলা ব্রিজ পার হয়ে ঢাকা থেকে মাওয়া চলে গেছে যে মহাসড়ক, ওই পথে গেলে দু’পাশের পরিত্যক্ত জমি থেকে কানে আসবে ফুটবল-ক্রিকেটে মেতে থাকা কিশোরদের কণ্ঠ। ওখানেই দেখা মিলবে নানা বয়সীরা কিভাবে ফিরে গেছেন কৈশরে।



দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া, হাসনাবাদ, গেন্ডারিয়া এলাকার এদিন (২৮ অক্টোবর) সকালের চিত্রও আলাদা ছিলো না।

মাঠে দল বেঁধে খেলতে আসে কিশোররা। তাদের সঙ্গে আসে চাকুরিজীবী, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীরা। আবার ব্যস্ত রাজধানীর কাছেই একটু বুক ভরে শ্বাস নিতে- কৈশরের উচ্ছ্বাসে জেগে উঠতে অনেকেই ছুটির সকালে চলে যান মাওয়ায়। রাস্তা ফাঁকা থাকায় কম সময়ে যাওয়া-আসায় হয়ে যায়।

অনেকে বুট, জার্সি গায়ে মাঠে খেলতে নামেন। দেখে মনে হবে পেশাদার খেলোয়াড়। তবে এরা কেউ পেশাদার নয়, ছুটি দিনটা নিজের মতো কাটাতে মাঠে।



ধুপখোলা থেকে খেলতে এসেছেন ব্যবসায়ী গোলাম রহমান। জানালেন, প্রতি শুক্রবারই খেলতে আসেন তিনি। এভাবে সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। জুমার নামাজের আগে পযর্ন্ত খেলা চলে।

ঢাকায় পুরো সপ্তাহ জুড়ে স্কুল-ক্লাস-কোচিং নিয়ে ব্যস্ততা থাকে শিক্ষার্থীদের। অবসরে বাসার সামনের গলিতে ব্যাট-বল হাতে নামলেও বিপদ। কারো জানালায় লাগলে, কারো গায়ে লাগে বিড়ম্বনার শেষ নেই- তাই ছুটি পেলে বন্ধুদের নিয়ে মাওয়া মহাসড়কের পাশে খেলতে চলে আসে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র প্রিন্স।



প্রিন্স বলে, এখানে খেলতে এলে নতুন নতুন বন্ধু হয়। যারা খেলা দেখতে আসেন তাদের কাছে থেকে পুরস্কার হিসেবে ২০/২৫ টাকা করে নিই। সেই টাকায় খেলা শেষে সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া করি।

ঢাকা- মাওয়া মহাসড়কের দু’পাশে যত দূর চোখ যায় বিস্তীর্ণ কাশবন, বেশিভাগ জমিই পরিত্যক্ত। কোথাও কোথাও ভবন নির্মাণের ভিত তৈরি করে রাখা হয়েছে। এর মাঝে খোলা জায়গা পেয়ে অনেকেই নেমে পড়েন ব্যাট-বল হাতে।



অরুণ নামে এক শিক্ষার্থী জানান, এখানে এলে খেলাও হয় আবার বেড়ানোও হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
এটি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।