ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

ফিচার

লেকের পচা পানির উপর লাউ-শিমের মাচা!

মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৭
লেকের পচা পানির উপর লাউ-শিমের মাচা! লেকের পচা পানির উপর লাউ-শিমের মাচা

ঢাকা: গুলশান লেকের বাতাসে উৎকট গন্ধ। লেকে স্বচ্ছ নীল পানির বিপরীতে কুচকুচে কালো পানি। অস্বস্তিকর এমন পরিবেশে লেকের ধারে গেলে যে কেউ নাক চেপে ধরতে বাধ্য। এই লেকের ধারেই কালো পানির উপর গড়ে উঠেছে বাঁশ-কাঠের তৈরি ছোট ছোট সবজির মাচা। সবজি গাছের বেড়ে ওঠা লিকলিকে লতা ঘিরে রেখেছে পুরো মাচাকে।

ছোট ছোট এসব মাচায় কোথাও শিম, লাউ আবার কোনো কোনো মাচায় মুলা, সরিষা ও মিষ্টি কুমড়া লাগানো। গুলশানের পচা পানিতে এমন উর্বর সবজির মাচা দেখলে যে কারো চোখ জুড়াবে।



গুলশান লেকের শাহাজাদপুর ঝিলপাড়ে বহুকাল থেকে গড়ে উঠেছে বস্তি। সেই বস্তি এলাকায় বসবাস হাজার হাজার মানুষের। এসব মানুষ নিজেদের সবজি চাহিদা মেটাতে বেছে নিয়েছেন লেকের ধার। সাধ্যমতো লাগিয়েছেন বিভিন্ন সবজির গাছ।

গুলশান লেক ঘুরে দেখা গেল, লেকের পানিতে ভাসছে ময়লা পলিথিন, বোতল। এই লেকের ধারের বাসিন্দাদের তৈরি মাচায় কচি লাউ ধরেছে। কোনটাতে শিমের ফুল সঙ্গে শিম। সরিষা গাছে হলদে ফুল ঝরে স্থান নিয়েছে সরিষা দানা, টমেটো গাছে ঝুলছে থোকা থোকা টমেটো।

কাক কিংবা অন্যান্য পশু-পাখি সবজি যেন নষ্ট করতে না পারে- এজন্য ভয় দেখাতে মাচার উপরে দাঁড় করানো হয়েছে কাকতাড়ুয়া। শীতকাল হওয়ায় কাকতাড়ুয়ার গাঁয়ে জড়ানো হয়েছে শীতের পোশাক!

শাহাজাদপুর ঝিলপাড়ে দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করেন এনামুল হোসেন। বিভিন্ন সময়ে উচ্ছেদের কবলে পড়লেও বারবারই ফিরে এসে ঘর বেঁধেছেন গুলশান লেকের ঝিলপাড়ে। এবারও মাথার উপর ঝুলছে ঘর ভাঙার নোটিশ! গুলশান লেকের ধারে এনামুলের লাউ ও শিমের মাচা রয়েছে।
লেকের পচা পানির উপর লাউ-শিমের মাচা
এনামুল বাংলানিউজকে বলেন, ‘দুই মাস আগে লাউ ও শিমের চারা এনে লেকের ধারে লাগাইছি। অনেক ময়লা-আর্বজনা ফেলানো হয় বলে ফলন ভালো হয়েছে। ১০টা লাউ বাজারে বিক্রিও করেছি।

যখন তখন উচ্ছেদের কবলে পড়তে হতে পারে জেনেও এনামুলের মতো গুলশান লেকের ধারে সবজির মাচা দিয়েছে শরিফা বেগম। মাচার উপরে কাকতাড়ুয়ার মালিকও এই শরিফা। তিনি বলেন, মাচায় লাউ, কুমড়া ও সরিষার আবাদ করছি। ঢাকা শহরে অন্য পাখি না থাকলেও কাকের তো অভাব নেই। এ কারণে কাকতাড়ুয়া দাঁড় করাইছি। কষ্ট কইর‍া মাচা দিছি, সারাদিনেই আমার মাইয়ারা মাচা পাহারা দেয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৭
এমসি/পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।