ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

অস্ট্রিয়ায় নেপোলিয়নের হত্যাযজ্ঞের গণকবর আবিষ্কার

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২০ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১৮
অস্ট্রিয়ায় নেপোলিয়নের হত্যাযজ্ঞের গণকবর আবিষ্কার হত্যাযজ্ঞের নিদর্শন

অস্ট্রিয়ার ভিয়েনার উত্তর-পূর্বের একটি কৃষিজমির নিচে পাওয়া গেলো নেপোলিয়ন যুগের বিপুল সংখ্যক মানুষের দেহাবশেষ। গবেষকরা বলছেন, দেহাবশেষগুলো ফ্রান্সের সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্টের সৈন্যবাহিনীর করা হত্যাযজ্ঞের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। প্রত্নতাত্ত্বিকরা এবারই প্রথম যুদ্ধক্ষেত্রটিতে খনন কাজ চালালেন।

ধারণা করা হচ্ছে, এখানে প্রায় ৫৫ হাজার সৈন্যের দেহাবশেষ রয়েছে যারা ১৮০৯ সালের ৫ থেকে ৬ জুনে সংঘটিত ওয়াগ্রামের লড়াইয়ে মৃত্যুবরণ করেন। নিহত সৈন্যদের অধিকাংশের ঠাঁই হয় গণকবরে।

গবেষকরা বিশাল আকৃতির একাধিক গণকবর এবং সৈন্যদের রাত কাটানোর ক্যাম্পগুলোর অবস্থান চিহ্নিত করেছেন। আরও পাওয়া গেছে হাজার হাজার মাস্কেট বল, বুলেট, বোতাম ও বিভিন্ন ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যবহৃত বস্তু।  

মৃত সৈন্যদের হাড় পরীক্ষা করে গবেষকরা জানতে পারেন, যুদ্ধের সময় তারা প্রচণ্ড পুষ্টিহীনতায় ভুগছিলেন। খনন কাজ নির্বিঘ্নে অব্যাহত থাকলে দু’দিনব্যাপী স্থায়ী এ যুদ্ধ সম্পর্কে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যাবে বলে গবেষকরা মনে করছেন।
হত্যাযজ্ঞের নিদর্শন১৭৯৯ থেকে ১৮১৫ সালের মধ্যে ইউরোপের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেওয়ার লক্ষ্যে বেশ কিছু রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়েছেন ফ্রেঞ্চ সম্রাট নেপোলিয়ন। ১৮০৯ সালে শুরু হয় ‘ওয়ার অব ফিফথ কোয়ালিশন। এ যুদ্ধে নেপোলিয়নের প্রতিপক্ষ অস্ট্রিয়ার সম্রাট ও যুক্তরাজ্য।

১৮০৯ সালে ভিয়েনার প্রান্তে অ্যাসপার্ন-এসলিং-এর লড়াইয়ে নেপোলিয়নের সৈন্যবাহিনী প্রথমবারের মতো তাদের সবচেয়ে বড় পরাজয়টি বরণ করে। ছয় সপ্তাহ পর প্রবল ঝড়-দুর্যোগের এক রাতে নেপোলিয়নের সৈন্যরা অস্ট্রিয়ান সৈন্যদের ক্যাম্পে অতর্কিত হামলা চালায়। সম্প্রতি ওই এলাকার ওপর দিয়ে মহাসড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাই সেখানকার সব মূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
হত্যাযজ্ঞের নিদর্শন
ওই অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিক-খননের দায়িত্বে থাকা ভিয়েনাভিত্তিক কালচারাল-রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান নোভেটাসের প্রধান নির্বাহী আলেকজান্ডার স্তাগ্‌ল সংবাদমাধ্যমকে জানান, আমরা আগে থেকেই জানতাম লড়াইটি এখানেই হয়েছিল। কিন্তু এতোদিনেও তা নিয়ে কোনো প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান চালানো হয়নি। আমরা এখন যুদ্ধক্ষেত্রের সবচেয়ে ঘটনাবহুল স্থানে খনন চালাচ্ছি এবং ইতোমধ্যেই অসংখ্য নিদর্শন খুঁজে পেয়েছি।

২০১৭ সালের মার্চে প্রত্নতাত্ত্বিকরা এ খনন কাজ শুরু করেন। আশা করা হচ্ছে, চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত খনন চলবে। তবে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা একটি ব্যাপক ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ কাজ হওয়ায় তাদের পক্ষে সম্পূর্ণ অংশে খনন সম্ভব নাও হতে পারে।

প্রায় ২৭টি ফুটবল মাঠের সমান এলাকা জুড়ে খনন চালানো হচ্ছে। এ বাবদ খরচ ধরা হয়েছে তিন মিলিয়ন ইউরো। এ অর্থের অর্ধেক পাবেন স্থানীয় কৃষকরা, যারা এ অঞ্চলের জমিতে কৃষিকাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০০১৬ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৮
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।