ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

যে শহর দাপিয়ে বেড়ায় আদুরে বিড়াল!

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
যে শহর দাপিয়ে বেড়ায় আদুরে বিড়াল! আদুরে বিড়াল। ছবি সংগৃহীত

তুরস্কের অন্যতম প্রাচীন শহর ইস্তাম্বুল। এ শহরের সরু গলি কিংবা কোনো বাড়ির ছাদ অথবা জানালার কার্নিশে আদুরে প্রাণী বিড়ালকে সব সময়ই দেখা যায়। পুরো শহরই যেন বিড়ালের বিচরণ ক্ষেত্র। এজন্যই হয়তো ইস্তাম্বুলকে বিড়ালের শহর নামেও ডাকেন অনেকে। 

আদুরে ভঙ্গিতে বসে আছে একটি বিড়াল।  ছবি সংগৃহীতসকালের মিষ্টি রোদে অলস শুয়ে থাকা, খাবারের খোঁজে দোকানে দোকানে লাফালাফি কিংবা পথচারীর সঙ্গে আদুরে ভঙ্গি।

এক কোল থেকে আরেক কোল কিংবা পাশে থাকা কারো সঙ্গে ভাব গড়ে ওঠা। এগুলো সবই ইস্তাম্বুল শহরের অতিচেনা, স্বাভাবিক দৃশ্য। খুব ভিড় থাকা কোনো দোকানেও নিজের আসনটি ঠিক খুঁজে পায় আদুরে বিড়ালগুলো।     আদুরে ভঙ্গিতে বসে আছে একটি বিড়াল।  ছবি সংগৃহীত

এ শহরের জীবনযাপনে বিড়ালের অনুপস্থিতিই যেন অস্বাভাবিক। জীবনযাপনের অন্যসব অনুষঙ্গের মতো বিড়ালের দাপিয়ে বেড়ানো নিয়ে কারও কোনো ভ্রুক্ষেপও থাকে না এ শহরে। বরং কখনো কখনো বিড়ালই হয়ে ওঠে এ শহরের মানুষের খোশগল্পের অনুষঙ্গ।  খাবার খাচ্ছে একটি বিড়াল।  ছবি সংগৃহীত

পাড়া-প্রতিবেশী কিংবা পুচকেদের মতো সবাই সবার বিড়ালের নাম জানে। বিড়ালগুলোকে তাদের নাম ধরেও ডাকা হয়। বিড়ালকে নিয়ে মালিকদের গর্ববোধেরও কমতি থাকে না। নতুন বন্ধু কিংবা অপরিচিত কাউকে পেলেই বিড়াল বন্দনায় মেতে ওঠেন মালিকরা।  আদুরে ভঙ্গিতে বসে আছে একটি বিড়াল।  ছবি সংগৃহীত

যখন পুরো শহরে শীত নেমে আসে, উষ্ণতাই যখন হয়ে যায় একমাত্র চাওয়া, তখন এ শহরের মানুষ বিড়ালকে শীত কষ্টে রাখেন না। অনেকেই উষ্ণতার জন্য নিজের ঘরে নিয়ে আসেন। অনেকে বিড়ালের জন্যই তৈরি করে আলাদা উষ্ণ ঘর।  আদুরে ভঙ্গিতে বসে আছে একটি বিড়াল।  ছবি সংগৃহীত

আদুরে প্রাণী বিড়াল কিনতেও কম যান না ইস্তাম্বুলের মানুষ। বিড়াল কিনতে আসলে অর্থও প্রাধান্য পায় না তাদের কাছে। বিড়াল বিক্রেতা ওজান বলেন, যারা বিড়াল কিনতে আসেন তাদের কাছে টাকা খুব বেশি প্রাধান্য পায় না।  

পা নেই কিংবা চোখে দেখে না কোন বিড়াল অথবা অন্য কোন সমস্যা আছে, তাতে কি! তবুও বিড়াল কেনেন বিড়াল প্রিয় এ শহরের মানুষরা। এরপর তাদের প্রথম কাজ হয় বিড়ালদের ক্লিনিকে ভর্তি করা। বিড়াল যখন সুস্থ হয়ে ওঠে, তখন যেন বিড়ালক্রেতাদের চোখে-মুখে অন্যরকম দীপ্তি দেখা যায়।  

ইস্তাম্বুল ঘেঁষা জেলা চিহানগির। এ জেলার দৃশ্যও অভিন্ন। এ শহরেও দাপিয়ে বেড়ায় বিড়াল। তবে এখানকার অন্যতম আকর্ষণ রাস্তায় সারি সারি সাজিয়ে রাখা বিড়ালদের আশ্রয় ঘর।  

বিড়াল পুষে কোনরকম শ্লেষও নেই কারো; বরং অনেক বেশি উচ্ছ্বাস তাদের। তেমনি এক বিড়াল পালক এরসা যেন পুরো শহরের প্রত্যেকটি মানুষের কথা বললেন। তিনি বলেন, আমি এখানে বিড়াল পুষতে শুরু করি। তাদের জন্য খাবার কিনি, তাদের খাওয়াই। তারপর দেখলাম তারা আমার খুবই কাজে আসছে। আমার মনে হয় মানুষ নয়, বিড়ালকে ভালোবাসা উচিত। কারণ মানুষ অকৃতজ্ঞ হয়, বিড়াল নয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০০৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৮
এএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।