ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

সাত গুণীকে সম্মাননা দিলো ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৮
সাত গুণীকে সম্মাননা দিলো ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর অনুষ্ঠান

ঢাকা: আভিধানিক অর্থে ঋষিজ শব্দটি একটি অনুপ্রাস। তবে ‘ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী’ বলতে গণসঙ্গীত নিবেদিতপ্রাণ একটি অপসংস্কৃতিবিরোধী দেশ ও মানবপ্রেম উদ্বেলিত সংগঠনকে সন্দেহাতীতভাবেই চিহ্নিত করা যায়। সংগঠনটি উদযাপন করলো তাদের প্রতিষ্ঠার ৪২ বছর।

আলোচনা, সম্মাননা ও সুরের মূর্চ্ছনায় শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনের আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।  

সংগঠনের সভাপতি গণসঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীরের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মুহাম্মদ সামাদ।

জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় অনুষ্ঠানের। এরপর উদ্বোধনী সঙ্গীত ‘আমরা ঋষিজ করি’ সম্মেলিত কণ্ঠে পরিবেশন করেন আয়োজক সংগঠনের শিল্পীরা।

আলোচনা পর্বে গওহর রিজভী বলেন, ১৯৭১ আমার পরিবারের জন্য খুব খারাপ একটা সময়। ঢাকায় এসে আমার বাবা মারা যান। প্রথম কয়েক মাস কোনো আশা দেখতাম না, দেশ স্বাধীন হবে কি না। তখন সব সময় আপনাদের গান শুনে সাহস পেয়েছিলাম, এভাবেই নয়টি মাস পার করেছি। সে জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।

আয়োজনে সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত গুনীকে ঋষিজ সম্মাননা প্রদান করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- উচ্চাঙ্গসঙ্গীতে ওস্তাদ মতিউল হক খান, নাট্যকলায় আতাউর রহমান, চারুকলায় নিসার হোসেন, রবীন্দ্রসঙ্গীতে তপন মাহমুদ, নজরুল সঙ্গীতে খায়রুল আনাম শাকিল, আবৃত্তি ও অভিনয়ে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ও লোকসঙ্গীতে বাউল শফি মন্ডল।

সম্মাননাপ্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ড. গওহর রিজভী। সার্টিফিকেট তুলে দেন ড. মুহাম্মদ সামাদ ও উত্তরীয় পরিয়ে দেন ঋষিজ সভাপতি ফকির আলমগীর। বাউল শফি মন্ডল অসুস্থ থাকায় তার পক্ষ থেকে এ সময় সম্মাননা গ্রহণ করেন তার ছেলে জয় মন্ডল।

পুরস্কার প্রদানের পর মুহাম্মদ সামাদ বলেন, এ শহর অনেক নিষ্ঠুর। এখানে পদক ও সম্মাননা লুট হয়ে যায়। তাই পুরস্কারকে আমি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি না, বরং একটা কবিতা লিখতে পারাটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

পুরস্কারপ্রাপ্তিতে অনুভূতি প্রকাশ করে নাট্যজন আতাউর রহমান বলেন, প্রতিটি পুরস্কারের মাঝে হৃদয়ের ছোঁয়া থাকে। তবে মৃত্যুর পর পুরস্কারকে আমি গুরুত্বপূর্ণ মনে করিনা। জীবদ্দশায় এসব পদক স্পর্শ করে আমি জীবনকে উদযাপনে বিশ্বাসী।

নিসার হোসেন বলেন, পথ প্রদর্শক হিসেবে যারা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তারা আজ এই মঞ্চে রয়েছে। তাদের আমি অভিনন্দন জানাই।

আলোচনা ও সম্মাননা পর্ব শেষে অনুষ্ঠিত হয় সঙ্গীতানুষ্ঠান। এ পর্বের শুরুতেই সম্মিলিত কণ্ঠে ঋষিজের শিল্পীরা পরিবেশন করে ‘মানুষের মাঝে বসবাস করি’ ও ‘ভয় কি মরনে’ শীর্ষক গান। এরপর সম্মেলক কণ্ঠে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী পরিবেশন করে ‘তুমি মানুষ আমি মানুষ, সকলে এক মায়ের সন্তান’ ও ‘আমরা করবো জয়’।  

এছাড়া সঙ্গীত পরিবেশন করে ক্রান্তি, বহ্নিশিখা, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী, স্ব-ভূমি ও আনন্দন’র শিল্পীরা। সবশেষে এককসঙ্গীত পরিবেশন করেন ফকির আলমগীর।

এবারের অনুষ্ঠানটি প্রয়াত সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার ও প্রয়াত ব্যান্ড সঙ্গতের কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চুকে উৎসর্গ করেছে ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী।

বাংলাদেশ সময়: ০০২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৮
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।