প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় বেশ আগেভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে খুলনা শহর থেকে শুরু করে গ্রামের আম বাগানগুলো। থোকা থোকা মুকুলেরভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালপালা।
বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা ভালো ফলনের স্বপ্ন বুনছেন। শহরের সবচেয়ে বেশি আমের মুকুল দেখা যাচ্ছে নিরালা, শের-এ-বাংলা রোড, বি কে রায় রোড, নর্থ খাল ব্যাংক রোড, খান জাহান আলী রোড, খালিশপুর, দৌলতপুর এলাকার গাছগুলোতে। কোনো কোনো গাছে আমের মুকুল থেকে বেরিয়েছে ছোট ছোট আম গুটি।
এছাড়া শহরের বাইরে পাইকগাছা, ডুমুরিয়া, রূপসা, কয়রা, ফুলতলা, তেরখাদা, দিঘলিয়া উপজেলায় গাছে গাছে মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে আমের বাগান। গাছে মুকুলের সঙ্গে গুটি আমের দেখাও মিলছে। বাগান মালিকরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কয়রা উপজেলার মসজিদকুড় গ্রামের আম বাগানের মালিক আলমগীর হান্নান বাংলানিউজকে বলেন, বাগানের অধিকাংশ গাছ-ই এরইমধ্যে মুকুলে ছেয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে।
ডুমুরিয়ার গুটুদিয়া গ্রামের আম চাষি আব্দুর রহমান বলেন, আম বাগানে এবার আগেভাগে মুকুল এসেছে। এখন আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি। কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খুলনায় গাছে গাছে এখন প্রচুর আমের মুকুল। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে এর সুগন্ধ। শহর থেকে গ্রামগঞ্জ সর্বত্র আমগাছ তার মুকুল নিয়ে হলদে রঙ ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে।
তারা বলছেন, প্রাকৃতিক কারণেই এবার আগেভাগেই আম গাছে মুকুল এসেছে। পরিচর্যা আর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে আমের উৎপাদন বাড়ছে।
শনিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) সকালে পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে জানান, আমের মুকুল আসার আগে-পরে যেমন আবহাওয়ার প্রয়োজন, এ বছর তা বিরাজ করছে। ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আম গাছে মুকুল আসার আদর্শ সময়। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শত্রু কুয়াশা। এখন পর্যন্ত কুয়াশা কম এবং আকাশে উজ্জ্বল রোদ থাকায় আমের মুকুল সস্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হচ্ছে।
তিনি জানান, উপজেলার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। পাইকাগাছার আম চাষীরাদের অর্জন ভালো। ২০১৮ সালে তিন দিনব্যাপি জাতীয় ফল প্রদর্শনীতে ব্যক্তি পর্যায়ে পাইকগাছার আম চাষি শেখ শাখাওয়াত হোসেন সারাদেশের মধ্যে প্রথম হয়েছিলেন। তার ৩২ বিঘা আমের বাগান রয়েছে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, উপজেলার প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে।
পাইকগাছা ও ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের মতো জেলার অন্যান্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৯
এমআরএম/জেডএস