সম্প্রতি কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকায় মেঘনা ও তার প্রধান শাখা মারিখালী নদী ঘুরে দেখা যায়, এটি যেন আর নদী নেই, মরা খাল মাত্র! নেই স্রোত, দেখা যায় না পাল তোলা নৌকাও।
নদীমাতৃক বাংলাদেশ- এই পরিচয় আর কতদিন থাকবে, বলা কঠিন! অসাধু ব্যক্তিদের কারণে দেশের নদ-নদী আজ হুমকির মুখে। দখলদারদের থাবায় হারিয়ে যাচ্ছে অসংখ্য নদী, বিপন্ন হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।
সম্প্রতি কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকায় মেঘনা ও তার প্রধান শাখা মারিখালী নদী ঘুরে দেখা যায়, এটি যেন আর নদী নেই, মরা খাল মাত্র! নেই স্রোত, দেখা যায় না পাল তোলা নৌকাও।
নদীর দিকে তাকালে মনে হয়, চারপাশ যেন বালুর মাঠ। নদীর পাড়েই গড়ে উঠেছে বিশাল বিশাল অট্টালিকা। ধীরে ধীরে পুরো নদীই হজম হতে চলেছে দখলদারদের পেটে।
নদীখেকোদের করাল গ্রাসে অতীতের যৌবন হারিয়েছে মারিখালী নদী। তীর দখল করে এর গতিপথই বদলে দিয়েছে দখলদারেরা।
নদীর পাড়ে গড়ে উঠেছে বড় বড় কল-কারখানা। এর দূষিত কেমিক্যাল, মেশিনের বর্জ্য ছড়াচ্ছে নদীর বুকে। ফলে, এলাকার মানুষজন ভুগছে বিভিন্ন রোগব্যাধিতে। নদীপথে চলাচলেও বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
মরা নদীতে কয়েকজনকে মাছ ধরতে দেখা গেলেও তাদের চোখে-মুখে বিরক্তি ছাপ। সারাদিন মাছ ধরে সংসার চালানো তো দূরের কথা, খাবারের মাছও জোটে না- বললেন জালাল মোল্লা (৬০) নামে এক বৃদ্ধ।
বাদশা মিয়া (৪৫) নামে এক জেলে বলেন, ৮-১০ বছর আগেও মেঘনাসহ এর আশপাশের নদীগুলো ছিল টইটম্বুর। জাল ফেললেই বড় বড় মাছ উঠে আসতো। আর, এখন সারাদিন পরে পুঁটি আর ছোট চিংড়ি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়।
তিনি বলেন, নদী এমন ছিল না। এখান বড় একটা কোম্পানি বালু ফেলে সব দখল করে নিচ্ছে। বড় বড় কল-কারখানা গড়ে উঠছে, আরও নতুন নতুন উঠবে। নদী না থাকলে মাছ আসবে কোথা থেকে? এমন দিন আসবে, আমাদের মতো গরিবদের না খেয়ে মরতে হবে। আফসোস, সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে এরা কীভাবে নদী দখল করে? মনে হয়, সরকারের চেয়ে দখলদারদের ক্ষমতা বেশি!
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২১০৯
একে