আমাদের দেশে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রায় নেই বললেই চলে। দেশের মানুষ এখনো নিজের মানসিক সমস্যার কথা বলতে সংকোচবোধ করে।
প্রতিবছর ১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালন করা হয়। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও আত্মহত্যা প্রতিরোধ’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ২০৩০ সালের মধ্যে বিষণ্নতা বিশ্বের প্রধান রোগ হয়ে উঠবে। আমাদের দেশে বিষণ্ণতাকে প্রাণঘাতী সমস্যা মনে করা না হলেও এটি মানুষের চিন্তা ও কর্মক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে। এছাড়া, কর্মক্ষমতা নষ্ট করতে পারে দুশ্চিন্তা, সিজোফ্রেনিয়া, অ্যাসপারগারস সিন্ড্রোম, আলঝেইমারসহ নানা ধরনের মানসিক রোগ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন মানুষ আত্মহত্যা করেন। বিশেষ করে, ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে এর প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে আত্মহত্যা প্রবণতা আশংকাজনক হারে বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতি বছর ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেন এদেশে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে পুরুষদের আত্মহত্যার পরিমাণ বেশি হলেও বাংলাদেশে এর চিত্র উল্টো।
সবসময় আত্মহত্যার সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক না থাকলেও মানসিক সমস্যাই এর অন্যতম কারণ। তবে, সবসময় এমনটা মনে করা উচিত না যে, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলেই ব্যক্তির মধ্যে আত্মহত্যা প্রবণতা থাকবে।
আত্মহত্যা প্রতিরোধে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে তোলা জরুরি। গত বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আত্মহত্যা প্রতিরোধে চারটি নির্দেশনা দিয়েছিল। সেগুলো হচ্ছে- আত্মহত্যার পদ্ধতি বা মাধ্যমের সহজলভ্যতা কমিয়ে আনা। সংবাদমাধ্যমকর্মীদের আত্মহত্যার খবর প্রকাশে কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলা। তরুণ–তরুণীদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, খাপ খাইয়ে নেওয়ার দক্ষতা ও জীবন দক্ষতা বৃদ্ধি করা। যারা আত্মহত্যার ঝুঁকিতে আছে, তাদের আগে থেকেই চিহ্নিত করা।
একদিনেই মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করা যাবে না। তবে, মানসিক সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলা শুরু করা উচিত। তাহলে, যারা মানসিক সমস্যায় ভুগছে, তারা নিজেদের সমস্যার কথা বলতে আর সংকোচবোধ করবে না। এভাবেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে আত্মহত্যা প্রবণতা রোধ করা সম্ভব।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৯
এফএম/একে