না, ঠিক ফ্যাশনের জন্য নয়। পুরুষদের পায়ে হাই হিল ঢুকেছিল প্রয়োজনের তাগিদেই! দশম শতাব্দীতে পারস্যের ঘোড়সওয়াররাই প্রথম হাই হিল ব্যবহার শুরু করেন।
টরেন্টোর বাটা জুতো জাদুঘরের এলিজাবেথ সেমেলহ্যাকের দেওয়া তথ্যমতে, ঘোড়ার পিঠে বসে স্যাডলে পা রাখার সুবিধার কথা মাথায় রেখেই হাই হিলের প্রচলন শুরু হয় (এ কারণে উত্তর আমেরিকার কাউবয়েরা এখনো উঁচু জুতাই পরেন)। `
তবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপের অভিজাত পুরুষদের ফ্যাশন সামগ্রীতে পরিণত হয় এই জুতা। কিন্তু, ১৭ শতকের মাঝামাঝি সময়ে এই ধারণা বদলাতে শুরু করে। তখন উঁচু জুতাকে কিছুটা দুর্বল লোকদের ব্যবহার্য জিনিস বলে মনে করা হতো। এরই একপর্যায়ে হাই হিলের গায়ে লেগে যায় ‘মেয়েদের জুতো’ তকমা।
ওই সময় হাই হিল বেশ ভারী ও পুরু ছিল। কিন্তু, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই এর চেহারা বদলাতে শুরু করে। জুতার ‘হিল’ (উঁচু অংশ) ও শ্যাঙ্ক (জুতার নিম্নাংশ) তৈরিতে ধাতুর ব্যবহার শুরু হয়। এতে বেশ শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে হাই হিল।
কিন্তু, প্রস্তুতকারকরা তখনো হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন, কীভাবে জুতাকে একইসঙ্গে উঁচু ও আরামদায়ক করে তোলা যায়।
সেসময় এগিয়ে আসেন পা-গোড়ালির সার্জন থেকে জুতার ডিজাইনার বনে যাওয়া জোয়ান ওলোফ। হাই হিল পরে হাঁটার সময় পায়ের ব্যাথা দূর করতে প্রথমবারের মতো এতে ফোম ব্যবহার করে দেখান তিনি।
আন্তোনিয়া সেইন্ট যানবার নামে এক উদ্যোক্তা জুতার ভেতর পা পিছলে যাওয়া ঠেকাতে তৈরি করেন হিল কাপ।
তবে, সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় একেকজনের একক ধরনের পায়ের আকার। কিন্তু, আধুনিক যুগে এ সমস্যা থেকে বাঁচার উপায়ও বের হয়ে গেছে।
আপনার জন্য নিখুঁত মাপের জুতা তৈরি করতে পায়ের পাতার থ্রি-ডি নকশা করার অ্যাপ আবিষ্কার করেছেন সান্দ্রা গল্ট নামে হাই হিলপ্রেমী এক নারী।
আর, সস্তায় যারা এ সমস্যার সমাধান চান, তাদের জন্যেও রয়েছে বেশ কিছু টিপস। পায়ের তৃতীয় ও চতুর্থ আঙ্গুলের মাপ জানা থাকলে সহজেই আরামদায়ক হাই হিল বেছে নেওয়া সম্ভব। আবার, চাপা জুতাকে আরামদায়ক করতে অনেকেই কেমিক্যাল ব্যবহার করেন। তবে, এক্ষেত্রে ঝামেলা বাঁধতে পারে জুতা খোলার সময়। এ কারণে বহু নারীই এখন হাই হিলের চিন্তা বাদ দিয়েছেন। ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো ব্রিটেনের নারীরা হাই হিলের চেয়ে ফ্ল্যাট জুতাই বেশি কিনেছেন।
সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৯
একে