প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই সেখানে স্থান পায়, যা কিছু ভালো, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ।
তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এ গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২৮ মাঘ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
ঘটনা
১৫৫৬: সম্রাট আকবর সিংহাসনে আরোহণ করেন।
১৭৯৪: যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের প্রথম অধিবেশন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
১৯১৬: জন্ম নিয়ন্ত্রণ সম্বন্ধে বক্তৃতা দেওয়ায় ইমা গোল্ডম্যান গ্রেফতার।
১৯১৯: জার্মানির প্রেসিডেন্ট হিসেবে এসপিডি দলের ফ্রেডরিক এবার্ট নির্বাচিত।
১৯৪৩: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জেনারেল ডুইট আইসেনহাওয়ার ইউরোপের মিত্রবাহিনীর সেনাপ্রধান হিসেবে মনোনীত।
১৯৫৩: ইসরাইলের সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন।
১৯৫৩: গ্রিস এবং তুরস্কের মধ্যে সাইপ্রাসের লিমাসোলে যুদ্ধ শুরু।
১৯৭২: বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম ও আয়ারল্যান্ড।
১৯৭৮: এরিস্টটল, শেক্সপিয়ার এবং ডিকেন্সের ওপর গবেষণাকর্ম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে চীন।
১৯৭৯: আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের সেলুলার জেলকে জাতীয় স্মারকস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করে ভারতের;
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইর আয়াতুল্লাহ রুহুল্লা খোমিনির নেতৃত্বে ইরানে ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা হয়।
১৯৯০: দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউনের বাইরে ভার্স্টার জেলখানা থেকে ২৭ বছর রাজনৈতিক বন্দিত্ব শেষে মুক্তি পান অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা।
জন্ম
১৮৪৭: টমাস আলভা এডিসন, মার্কিন উদ্ভাবক এবং ব্যবসায়ী
১৮৮২: ছন্দের জাদুকর সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, বাঙালি কবি ও ছড়াকার
সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের জন্ম ১৮৮২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি কলকাতার নিকটবর্তী নিমতা গ্রামে। তার পৈতৃক নিবাস বর্ধমানের চুপী গ্রামে। পিতা রজনীনাথ দত্ত ছিলেন কলকাতার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং পিতামহ অক্ষয় কুমার দত্ত ছিলেন তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার সম্পাদক।
সত্যেন্দ্রনাথের কবিতায় নানা ভাষার শব্দ নিপুণ ছন্দে যুক্ত হয়েছে। এছাড়া, তিনি বিভিন্ন ভাষা থেকে বাংলায় অনুবাদকর্মও করেছেন। তার কবিতায় ছন্দের কারুকাজ, শব্দ ও ভাষা যথোপযুক্ত ব্যবহারের কৃতিত্বের জন্য তাকে ছন্দের জাদুকর নামে আখ্যায়িত করা হয়।
কাব্যচর্চায় আত্মনিয়োগ করার আগে সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত পিতার ব্যবসায় যোগ দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন ভারতী পত্রিকাগোষ্ঠীর অন্যতম কবি। বাংলা শব্দের সঙ্গে আরবি-ফার্সি শব্দের সমন্বিত ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলা কাব্যভাষার শক্তি বৃদ্ধির প্রাথমিক কৃতিত্ব তারই। অনুবাদের মাধ্যমে তিনি বিশ্বের কাব্যসাহিত্যের সঙ্গে বাংলার যোগাযোগ ঘটান। নবকুমার, কবিরত্ন, অশীতিপর শর্মা, ত্রিবিক্রম বর্মণ, কলমগীর প্রভৃতি ছদ্মনামে তিনি কবিতা লিখতেন। দেশাত্মবোধ, মানবপ্রীতি, ঐতিহ্যচেতনা, শক্তিসাধনা প্রভৃতি তার কবিতার বিষয়বস্তু। ১৯১৮ সালে ভারতী পত্রিকার বৈশাখ সংখ্যায় ছন্দ সম্পর্কিত তার প্রসিদ্ধ রচনা ‘ছন্দ-সরস্বতী’ প্রকাশিত হয়।
তার অপর কৃতিত্ব বিদেশি কবিতার সফল অনুবাদ। তিনি আরবি-ফার্সি, চীনা, জাপানি, ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষার বহু কবিতা অনুবাদ করে বাংলাসাহিত্যের বৈচিত্র্য ও সমৃদ্ধি সাধন করেন। অবহেলিত সাধারণ মানুষদের নিয়েও তিনি কবিতা লিখেছেন। তিনি একাধিক ছদ্মনামে কবিতা চর্চা করতেন।
তার কাব্যগ্রন্থ: সবিতা (১৯০০), সন্ধিক্ষণ (১৯০৫), বেণু ও বীণা (১৯০৬), হোমশিখা (১৯০৭), ফুলের ফসল (১৯১১), কুহু ও কেকা (১৯১২), তুলির লিখন (১৯১৪), মনিমঞ্জুষা (১৯১৫), অভ্র-আবীর (১৯১৬), হসন্তিকা (১৯১৭), বেলা শেষের গান (১৯২৩), বিদায় আরতি (১৯২৪)।
অনুবাদ: তীর্থ সলীল (১৯০৮), তীর্থ রেণু (১৯১০), ফুলের ফসল (১৯১১)।
১৯২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৪০ বছর বয়সে ছন্দের রাজা ও ছন্দের জাদুকর হিসেবে খ্যাত কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের মৃত্যু হয়।
১৯০২: সাহিত্যিক স্বাধীনতা সংগ্রামী গোপাল হালদার
১৯১৫: রিচার্ড হ্যামিং, মার্কিন গণিতবিদ ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী।
১৯৪৩: আসাদ চৌধুরী, বাংলাদেশী লেখক ও কবি
১৯৪৪: বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, প্রখ্যাত বাঙালি চলচ্চিত্রনির্মাতা ও কবি।
মৃত্যু
১৬৫০: রেনে দেকার্ত, ফরাসি দার্শনিক ও আধুনিক দর্শনের জনক, গণিতজ্ঞ, বিজ্ঞানী
১৯৬২: সজনীকান্ত দাস, বাঙালি কবি, সাহিত্য সমালোচক ও সম্পাদক
১৯৭৪: সৈয়দ মুজতবা আলী, প্রখ্যাত বাংলাদেশি সাহিত্যিক
১৯৮০: রমেশচন্দ্র মজুমদার, ভারতের বাঙালি অধ্যাপক ও ইতিহাসবিদ
বাংলাদেশ সময়: ০০০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১
এফএম