ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

ব্যয় কম পঞ্চগড়ে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২২
ব্যয় কম পঞ্চগড়ে লাল আলু।

পঞ্চগড় থেকে ফিরে: রাজধানী ঢাকার কথা নয়, দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের জনপদ ফেনীর কথাই বলি। মধ্যম মানের একটি খাবার হোটেলে বিকেলের নাস্তায় দুটি পরোটা, একটু ভাজি আর এক কাপ চা খেতে গুনতে হয় ৬০ থেকে ৭০ টাকা।

 

দেশের সর্ব উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ে একই খাবার সমমানের খাবার হোটেলে খেতে খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা। ফেনী থেকে অর্ধেকেরও কম খরচে এখানে পেট ভর্তি করে নাস্তা সেরে নেওয়া যায়।



ব্যয়ের এ সমীকরণ শুধু নাস্তাতেই সীমাবদ্ধ নয়, জীবনের সব প্রান্তে এখানে ব্যয় কম। এ হিসাবে এখানের জীবন দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল থেকে অনেকটাই সহজ। ক’টা দিন কেটেছে উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ে। একদম কাছে থেকে দেখেছি এখানকার জীবন ছবি। সব সমীকরণে এখানকার জীবনকে সহজ মনে হয়েছে দেশের বাকি অঞ্চল থেকে।  

এখানে বাজারগুলোতে মোরগ-মুরগির মাংস কেজিতে বিক্রি হয়। কেউ চাইলে ২৫০ গ্রামও কিনতে পারেন। ২শ গ্রাম মাছ বিক্রি হয়। কেউ চাইলে ইলিশ মাছের দুটো টুকরো কিনে ঘরে নিয়ে যেতে পারেন। ২শ গ্রাম গরুর মাংসও কেনা যায়।

চাইলে ৫ টাকায় গরুর খাঁটি দুধের মালাই চা খেতে পারেন। কেউ চাইলে ১০ টাকার চাও পাওয়া যাবে। এখনো এখানে তেলে ভাজা পরোটা বিক্রি হয় পাঁচ টাকায়। গরুর দুধ দিয়ে সুস্বাদু সেমাই খেতে পারবেন ১০ টাকায়। ২০ টাকায় ডাল/ভাজি-পরোটা দিয়ে পেট ভরে বিকেলের নাস্তা সেরে নেওয়া যায়।

একদম আপনার যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই নিতে পারবেন এখানে। যা দেশের রাজধানীসহ দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে চিন্তাই করা যায় না। সেখানে দুই টুকরো ইলিশ বিক্রি হয়না, ২শ গ্রাম গরু মাংসও পাওয়া যায় না।

ফলশ্রুতিতে এসব না খেতে পেরে অনেকের মধ্যেই দুঃখবোধ কাজ করে। উত্তরের এই অঞ্চলে তেমনটা করতে হয় না। যার যা সামর্থ তা দিয়ে যা চাই তাই খেতে পারেন এখানকার মানুষ। পরিমাণে কম হলেও মানুষ সবকিছু মুখে তুলতে পারেন।

স্থানীয় গড়ের ডাঙ্গা, তেপুকুরিয়া, ভজনপুর, তেঁতুলিয়া ও পঞ্চগড় জেলা সদরসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ১৬ টাকা, যা আমাদের অঞ্চলে (দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে) ৫০ টাকা। এক কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, যা আমাদের অঞ্চলে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪০ টাকা। দেখতে সুন্দর নানা জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২০ টাকায়। পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দামও তুলনামূলক কম।



মাঝারি সাইজের একটা লাউ ২৫ টাকায় কেনা যায়। আমাদের অঞ্চলে যা বিক্রি হয়  ৬০ থেকে টাকা। গরুর দুধ এখানে লিটার প্রতি ৫০ টাকা। যা আমাদের অঞ্চলে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। এখানে গরু মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৬শ থেকে সাড়ে ৬শ টাকা। আমাদের অঞ্চলে যা সাড়ে ৭শ থেকে ৮শ টাকা। এখানে এখনও ৫টাকা ভাড়ায় রিকশা/ভ্যানে যাতায়াত করা যায়।

পঞ্চগড় শহরের স্থানীয় ব্যবসায়ী ওমর ফারুক বলেন, এখন মৌসুম না। মৌসুমে এখানে কাঁচা তরকারির দাম আরও কম থাকে। মৌসুমে বেগুন, টমেটো, শিমসহ নানা  সবজি কেজি প্রতি ৫ টাকাও বিক্রি হয়। মুলার দাম কেজি প্রতি ১ টাকায়ও নেমে আসে।

মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আমাদের অঞ্চলের চেয়ে উত্তরের এ জনপদে মাছের দামও কিছুটা কম। ২শ থেকে আড়াইশ টাকায় এখানে বড় সাইজের মাছ পাওয়া যায়। নানা জাতের নদীর মাছও মিলে এখানে। তবে দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে অনেক পদের মাছ থাকলেও এখানে তেমনটা চোখে পড়েনি। তবে দাম সহনীয়। ইলিশ মাছের দাম এখানেও বেশ। ওই অঞ্চলের মতোই।  



পঞ্চগড় শহরের মুদি দোকানি খাদেমুল ইসলাম বলেন, তেল, ডাল, লবণ, চিনি, চালসহ এমন পণ্যগুলো ছাড়া বাকি পণ্যগুলো এ বাজারে দেশের অন্য অঞ্চল থেকে দাম অনেকটাই কম। এখানে প্রচুর পরিমাণে কৃষি পণ্য উৎপাদন হয়, সেকারণে অন্য অঞ্চল থেকে এখানে দামও সহনীয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২২
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।