ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

ফোঁটা ফোঁটা রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে গুড়, দর্শনার্থীদের ভিড়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২২
ফোঁটা ফোঁটা রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে গুড়, দর্শনার্থীদের ভিড় ঠাকুরগাঁও সদরের বাচাপুকুর গ্রামের সুগারমিলে অবস্থিত খেজুর বাগান থেকে রস সংগ্রহ করছেন গাছি।

ঠাকুরগাঁও: সারারাত খেজুর গাছের আগায় লাগানো হাঁড়িতে ফোঁটা ফোঁটা করে জমা হচ্ছে রস। সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গেই ভোরবেলায় গাছে উঠছেন চাষিরা।

 

রসভর্তি মাটির হাঁড়ি নামিয়ে টিনের পাত্রে জ্বাল দিয়ে তৈরি করছেন গুড়। খেজুর রসের গুড় তৈরির এমন মনমুগ্ধকর দৃশ্য এখন ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রামে-গঞ্জে নিয়মিত।

বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও সদর উপজলার নারগুন ইউনিয়নের বাচাপুকুর গ্রামে। সেখানের সুগারমিলের একটি বাগানে ছোট-বড় ৫০০টি গাছ থেকে রস নিয়ে শুরু হয়েছে খেজুরের গুড় তৈরির ধুম।  

আর চাষিদের খেজুর গাছ হতে হাঁড়ি নামানো ও গুড় তৈরি দেখনে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

গাছ থেকে নামানো হয়েছে হাঁড়ি

বাগানটি এবার ১ লাখ ৭২ হাজার টাকায় বাৎসরিক চুক্তিতে লিজ নিয়েছেন ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান মনির।  

তার এই বাগানে কাজ করছেন নাটোর লালপুর থেকে আসা ৮ জন গাছি। তারা প্রতিদিন গাছগুলোতে হাঁড়ি তোলেন ও নামান। সেই রস দিয়ে ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিক প্রতিদিন গুড় তৈরি করেন।  

১০ একর জমিতে গড়ে ওঠা খেজুর বাগানটি ভোরবেলায় শীতের কুয়াশায় রহস্যময় হয়ে উঠে। কুয়াশা কেটে গেলে হয়ে মনমুগ্ধকর ও নয়ানিভরাম পরিবেশের সৃষ্টি হয়।  

আর সেই পরিবেশ দেখতে বাগানে ভিড় জমাচ্ছেন বিভিন্ন জেলার মানুষ। এ মুহূর্তে শীত কম বিধায় রসও কম সংগ্রহ হচ্ছে। তাই গুড় তৈরির পরিমাণও কম। শীত যতো বাড়বে গুড় উৎপাদন বেশি হবে।  

বর্তমানে প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ কেজি গুড় উৎপাদন করছেন তারা। পাশাপাশি ১৫ থেকে ২০ হাঁড়ি রস বিক্রি করছেন গাছিরা। আর এই খেজুরের প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হয় ২৫০ টাকায়।

ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান মনির বলেন, শীত বাড়লে গুরু উৎপাদন বাড়বে। তবে শীতের শুরু থেকেই এখানে প্রতিদিন খেজুরের রস গুড় তৈরি করা হয়। সেটা দেখার জন্য অনেক দর্শনার্থী ভোর পাঁচটা থেকে সকাল দশটা পর্যন্ত ভিড় জমান। তারা আমার কাছ থেকে গুড় ও রস কিনে নিয়ে যান।

দর্শণার্থী রবিউল হাসান রিপন বলেন , খেজুরের রস দিয়ে গুড় তৈরির দৃশ্য দেখতে ভোর পাঁচটায় আমরা এখানে এসেছি। সরাসরি গাছ থেকে রস পেয়ে গুড় তৈরির প্রক্রিয়াটি দেখলাম।  

রস জমিয়ে পাত্রে জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি হচ্ছে

ঠাকুরগাঁও উপজলা নির্বাহী অফিসার উপজলা নির্বাহী অফিসার আবু তাহের সামসুজ্জামান বলেন, প্রতিবছর মতো এ বছরও ঠাকুরগাঁও সদরের নারগুন ইউনিয়নের বাচাপুকুর গ্রামে খেজুরের গুড় তৈরি হচ্ছে। শীত বাড়লে সেখানে দর্শনার্থীদের ভিড় আরও বাড়বে। আমরা তাদের নিরাপত্তার জন্য সর্বক্ষণিক মনিটরিং করব। জেলায় খেজুর গুড় উৎপাদন আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২২
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।