ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

গল্প

নিউইয়র্ক মাইনিং ডিজাস্টার | হারুকি মুরাকামি (শেষ পর্ব)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০০ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০১৭
নিউইয়র্ক মাইনিং ডিজাস্টার | হারুকি মুরাকামি (শেষ পর্ব) নিউইয়র্ক মাইনিং ডিজাস্টার | হারুকি মুরাকামি (শেষ পর্ব)

নিউইয়র্ক মাইনিং ডিজাস্টার
মূল: হারুকি মুরাকামি
ইংরেজি: ফিলিপ গ্যাব্রিয়েল
ভাষান্তর: সালেহ মুহাম্মাদ  

“যাইহোক, আমি আর কখনও যেতে চাই না- মানে চিড়িয়াখানায় মধ্যরাতে। ”
    “তোমার কাছে কি মনে হয় ঘূর্ণিঝড়ের সময়টাই ভালো?”
    “হ্যাঁ”, সে বলল।

“আমাকে যেকোনো দিন একটা ঘূর্ণিঝড় দাও। ”
                                     ***
     
ফোন বাজল আর সে শোবার ঘরে গেলো ফোন ধরতে। ফোন করেছে তার বান্ধবীর ক্লোন। আমি তাকে বলতে চাচ্ছিলাম, আজকের মতো শেষ করি, কিন্তু সে অনন্তকালের জন্যে ফোন নিয়ে বসে ছিলো। আমি অপেক্ষা করা বাদ দিয়ে টিভি খুললাম। একটা সাতাশ ইঞ্চি রঙিন টিভি যার চ্যানেল পাল্টানোর রিমোট কন্ট্রোলটা ঠিক মতো ছুঁতেও হয় না। টিভিটার ছয়টা স্পিকার আছে আর চমৎকার শব্দ হয়। এমন অসাধারণ টিভি আমি কখনও দেখিনি।
একটা খবরের অনুষ্ঠানে এসে স্থির হওয়ার আগ পর্যন্ত আমি সব চ্যানেলগুলোতে দু’টা পূর্ণ চক্কর দিলাম। একটা সীমান্ত সংঘাত, একটা অগ্নিকাণ্ড, দর ওঠা-নামা, গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে কিছু নতুন সীমাবদ্ধতা, শীতকালীন সাঁতারের একটি মিটিং, একটা পরিবারের আত্মহত্যা। এই সব টুকরো খবরগুলোকে মনে হচ্ছিল কোনো একভাবে সংযুক্ত, অনেকটা হাইস্কুল সমাবর্তনের কোনো ছবির লোকদের মতো।
 
“কোনো ইন্টারেস্টিং খবর আছে?” ঘরে ফিরে এসে আমার বন্ধু জিজ্ঞেস করল।
    “তেমন কিছু নাই”, আমি বললাম।
    “তুমি কি অনেক টিভি দেখ?”
    আমি মাথা নাড়লাম। “আমার কোনো টিভি নেই”।
 
   “টিভির একটা হলেও ভালো বিষয় আছে”, সে কিছুক্ষণ পর বলল। “তুমি যখন ইচ্ছা এটা বন্ধ করে দিতে পার। আর কেউ অভিযোগ করবে না। ”
    
     সে রিমোটের অফ বাটনে চাপল। সঙ্গে সঙ্গে টিভির পর্দাটি দৃশ্যহীন হয়ে গেলো। ঘরটি স্থির। জানালার বাইরে, অন্য বিল্ডিংয়ের অালোগুলো জ্বলে উঠছিল।
     
আমরা সেখানে পাঁচ মিনিট বসে ছিলাম, হুইস্কি পানরত, কথা বলার মতো কিছুই ছিলো না আমাদের। আবারও ফোন বাজল কিন্তু সে ভাব করল শুনতে পায়নি। ফোন বাজা বন্ধ হওয়া মাত্রই সে অন বাটনে চাপ দিলো। সঙ্গে সঙ্গে টিভির পর্দায় দৃশ্য ফিরে এলো এবং একজন ধারাভাষ্যকারকে দেখা গেলো একটা গ্রাফের সামনে পয়েন্টার হাতে দাড়িয়ে তেলের দামের পরিবর্তনগুলো ব্যাখ্যা করছে।
    
   “দেখলে? সে খেয়ালও করেনি যে আমরা তাকে পাঁচ মিনিটের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিলাম। ”
   “সত্য বটে”, আমি বললাম।
   “এমনটা হয় কেন?”
   এটা নিয়ে চিন্তা করা খুব ঝামেলার কাজ তাই আমি মাথা নাড়লাম।
   “যখন তুমি এটা বন্ধ করে দাও এক দিকের অস্তিত্ব নেই হয়ে যায়। তখন, হয় সে অথবা আমরা। তুমি খালি বোতাম টিপলে আর একটা যোগাযোগের বিলোপ ঘটে গেলো। সহজ ব্যাপার। ”
   “একভাবে চিন্তা করলে তাই হয়”, আমি বললাম।
   “চিন্তা করার লক্ষাধিক পথ আছে। ” সে আবারও টিভি বন্ধ করল। “আমি অন্য লোকদের ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না”, সে বলল। “কিন্তু একটা জিনিষ চিন্তা করে দেখ যে মারা যাওয়ার এমন অনেক উপায় আছে যেটার শেষে কোনো দাফন আর শোকসভা হয় না। অনেক ধরনের মৃত্যু যার গন্ধ তুমি পাও না। ”
    
আমি নীরবে মাথা নাড়লাম। মনে হলো সে কী বলতে চাচ্ছে আমি বুঝতে পারছি। আবার একই সময়ে মনে হচ্ছিল সে কী বলতে চায় সে সমন্ধে আমার কোনো ধারণাই নেই। আমি ছিলাম ক্লান্ত এবং কিছুটা বিভ্রান্ত। আমি বসে বসে পনসেত্তিয়ার সবুজ পাতাগুলো আঙুল দিয়ে নাড়াচাড়া করতে লাগলাম।
  
   “আমার কাছে একটু শ্যাম্পেন আছে”, সে ব্যাগ্রকণ্ঠে বলল। “ব্যবসার কাজে কিছুদিন আগে ফ্রান্স গিয়েছিলাম তখন নিয়ে এসেছি। শ্যাম্পেন বিষয়ে আমি তেমন কিছু জানি না, কিন্তু এটা ভালোই হওয়ার কথা। তুমি খাবে একটু? একটানা শোকসভার পর শ্যাম্পেনই হয়তো সবচেয়ে মোক্ষম জিনিস। ”
    সে বরফ শীতল শ্যাম্পেনের বোতল আর দু’টো পরিষ্কার গ্লাস এনে নীরবে টেবিলের উপর রাখল, তারপর ধূর্ত একটি হাসি হাসল, “শ্যাম্পেন আসলে পুরোই অপ্রয়োজনীয়, জানো তো। একমাত্র আনন্দময় অংশ হলো যখন আমরা কর্কটা খুলি”।
    “এ বিষয়ে কোনো তর্ক চলে না”, আমি বললাম।
আমরা কর্কটা খুললাম এবং প্যারিসের চিড়িয়াখানা আর সেখানে যেসব পশুরা থাকে তাদের নিয়ে আলাপ করলাম। শ্যাম্পেনটা চমৎকার ছিলো।
                                     ***
বছরের শেষে একটা পার্টি ছিলো, নববর্ষের সন্ধ্যা উপলক্ষ্যে একটি বাৎসরিক পার্টি, যার জন্য রপ্পংগির একটি বার পুরোটা ভাড়া করা হয়েছিল। তিনজন মিলে একটি পিয়ানো বাজাচ্ছিল এবং সেখানে ছিলো প্রচুর ভালো খাবার আর পানীয়। যখনই আমার পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা হচ্ছিল আমি কিছুক্ষণের জন্য দাড়িয়ে গল্প করে নিচ্ছিলাম। আমার চাকরির শর্ত ছিলো, এখানে আমি প্রতিবছর একবার চেহারা দেখাব। পার্টিগুলো ঠিক আমার বিষয় নয়, তবে এটি সহজ ছিলো। নববর্ষের সন্ধ্যায় আমার তেমন কোনো কাজ থাকত না আর আমি এক কোণায় নিজের মতো দাঁড়িয়ে, আয়েশ করে, একটা ড্রিংক খেতাম আর গান বাজনা শুনতাম। কোনো অযাচিত লোকজন নেই, প্রয়োজন নেই অপরিচিত মানুষদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার এবং কীভাবে নিরামিষ খাদ্যাভ্যাস ক্যানসার সারাতে পারে সে বিষয়ে তাদের বকবকানি শোনার।
   কিন্তু ওই সন্ধ্যায় কেউ আমাকে একজন নারীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলো। সাধারণ খুচরা কথাবার্তার পরে আমি আবারও আমার নিজের কোণায় ফেরত যেতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু নারীটি হাতে হুইস্কির গ্লাস নিয়ে, আমাকে আমার সিট পর্যন্ত অনুসরণ করলেন।
 
  “আমি নিজেই আপনার সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। ” নারী নম্রভাবে বললেন।
তিনি ঠিক বারবার ঘুরে দেখার মতো না হলেও, অবশ্যই আকর্ষণীয়। তার গায়ে একটি দামী সিল্কের সবুজ ড্রেস ছিলো। আমি আন্দাজ করলাম তার বয়স বত্রিশের মতো হবে। তিনি ইচ্ছা করলেই নিজেকে আরেকটু কমবয়সী দেখাতে পারতেন, কিন্তু সেই ঝামেলায় যাওয়ার প্রয়োজন তিনি বোধ করেননি। তার আঙুলে তিনটি আংটি শোভা পাচ্ছিল আর তার ঠোঁটে একটা হালকা হাসির আভাস।
 
  “আপনি দেখতে ঠিক আমার পরিচিত একজনের মতো”, তিনি বললেন। “আপনার চেহারার গঠন, পিঠ, আপনি যেভাবে কথা বলেন সবকিছু মিলিয়ে একটা অদ্ভুত মিল। আপনি আসার পর থেকেই আমি আপনাকে খেয়াল করছি। ”
 
   “উনি যদি এতোটাই আমার মতো হয় তাহলে আমি ভদ্রলোকের সঙ্গে পরিচিত হতে চাই। ” আমি বললাম। বলার মতো আর কিছু মাথায় আসছিল না।
   “পরিচিত হতে চান?”
   “ঠিক আমার মতো একজনের সঙ্গে পরিচিত হতে কেমন লাগে আমি দেখতে চাই। ”
তার হাসিটা মুহূর্তের জন্য গাঢ় হয়ে, আবার নরম হয়ে গেলো। “কিন্তু সেটা অসম্ভব”, তিনি বললেন। “তিনি পাঁচ বছর আগে মারা গেছেন। যখন উনি অনেকটা আপনার মতো বয়সে ছিলেন। ”
    “আসলেই?” আমি বললাম
    “আমি তাকে মেরে ফেলেছি। ”
যে তিনজন পিয়ানো বাজাচ্ছিল তারা তাদের দ্বিতীয় সেটটি সবে শেষ করেছেন এবং কিছু অন্যমনস্ক করতালি শোনা যাচ্ছিল।
    “আপনার গান বাজনা ভালো লাগে?” তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন।
    “যদি সেটা একটি চমৎকার পৃথিবীতে একটি চমৎকার বাজনা হয় তাহলে লাগে। ”
    “একটি চমৎকার পৃথিবীতে কোনো চমৎকার বাজনা হয় না। ” তিনি আমাকে বললেন যেনো কোনো গূঢ় গোপন তথ্য জানাচ্ছেন। “একটি চমৎকার পৃথিবীতে বাতাস কাঁপে না। ”
    “আচ্ছা”, আমি বললাম, কীভাবে উত্তর দেওয়া উচিৎ বুঝতে পারছিলাম না।
    “আপনি ওই মুভিটা দেখেছেন যেখানে ওয়ারেন বিটি নাইটক্লাবে পিয়ানো বাজায়?”
    “না, দেখিনি। ”
    “ক্লাবের কাস্টমারদের মধ্যে একজন এলিজাবেথ টেইলর এবং তিনি খুবই দরিদ্র ও দুঃস্থ। ”
    “হুমম। ”
    “তো ওয়ারেন বিটি এলিজাবেথ টেইলরকে জিজ্ঞেস করলেন, তার কোনো  আছে কিনা। ”
    “ছিলো ওনার?”
    “আমি ভুলে গেছি। মুভিটা খুবই পুরনো। ” তিনি হুইস্কিতে চুমুক দিচ্ছিলেন আর তার আংটিগুলো ঝিকমিক করছিল। “আমি আবেদন বিষয়টা অপছন্দ করি। এসব আমাকে খুব অসুখী করে তোলে। ব্যাপারটা অনেকটা লাইব্রেরি থেকে বই নেওয়ার মতো। পড়া শুরু করা মাত্রই শুধু মনে হয় কখন বইটা শেষ হবে। ”
 
সে ঠোঁটের মাঝখানে একটা সিগারেট রাখল। আমি একটা ম্যাচের কাঠি জ্বালিয়ে সেটি ধরিয়ে দিলাম।
   “একটু খেয়াল করি”, তিনি বললেন। “আমরা কথা বলছিলাম সেই লোকটাকে নিয়ে যে দেখতে অনেকটা আপনার মতো। ”
   “তাকে খুন করলেন কীভাবে?”
   “তাকে একটা মৌচাকের ভিতর ছুড়ে মারলাম। ”
   “মজা করছেন, না?”
   “হ্যাঁ,” তিনি বললেন।
দীর্ঘশ্বাস ফেলার বদলে আমি এক চুমুক হুইস্কি খেলাম। বরফ গলে গিয়েছিল আর ওটার স্বাদ আর হুইস্কির মতো লাগছিল না।
   “অবশ্য আইনগতভাবে আমি খুনী না”, তিনি বললেন। “অথবা নৈতিক দিক থেকেও না। ”
   “আইনগত বা নৈতিক কোনোদিক থেকেই খুনী না”, আমি চাচ্ছিলাম না কিন্তু তারপরও তার কথাগুলো বিবেচনা করে দেখলাম। “কিন্তু কোনো একজনকে আপনি খুন করেছেন ঠিকই?”
   “ঠিক”, তিনি উৎফুল্লভাবে মাথা নাড়লেন “কোনো একজন যে দেখতে একদম আপনার মতো। ”

রুম জুড়ে একজন ভদ্রলোক জোরে হেসে উঠলেন। আর তার আশেপাশের লোকেরাও হেসে উঠল। গ্লাসে গ্লাস ঠোকার শব্দ হলো। শব্দটা মনে হলো অনেক দূরে কিন্তু অত্যন্ত স্পষ্ট। আমি জানি না কেন কিন্তু আমার হৃৎপিণ্ড লাফাচ্ছিল, যেনো সেটা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে অথবা উপরে-নিচে ওঠানামা করছে। আমি অনুভব করছিলাম যেনো আমি মাটির উপর দিয়ে হাঁটছি যেটা পানির উপর ভাসছে।
   “পাঁচ সেকেন্ডের কম সময় লেগেছিল”, সে বলল। “ওনাকে মেরে ফেলতে। ”
  আমরা কিছুক্ষণ চুপ থাকলাম। সে তার সময় নিচ্ছিল, নীরবতাকে উপভোগ করছিল।
   “আপনি কখনও স্বাধীনতার কথা ভাবেন”, তিনি জিজ্ঞেস করলেন।
   “মাঝে মাঝে”, আমি বললাম। “কেন বলুন তো?”
   “আপনি কি একটা ডেইজি আঁকতে পারেন?”
   “মনে হয়। এটা কি কোনো ব্যক্তিত্বের পরীক্ষা?”
   “অনেকটা সেরকমই”, তিনি হেসে উঠলেন।
   “তো, আমি কি পাশ করলাম?”
   “হ্যাঁ”, তিনি উত্তর দিলেন। “আপনি ভালোই থাকবেন। কোনো চিন্তা নেই। ইনটুইশন বলছে, আপনি একটা দীর্ঘ ভালো জীবন পার করবেন। ”
   “আপনাকে ধন্যবাদ”, আমি বললাম।
 ব্যান্ডটা বাজানো শুরু করল “অল্ড ল্যাং সাইন”।
“এগারটা পঞ্চান্ন”, তিনি বললেন তার হাতের বালার উপর বসানো সোনালি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে। “আমি ‘অল্ড ল্যাং সাইন’ খুব পছন্দ করি। আপনার কেমন লাগে?”
 “আমার ভালো লাগে ‘হোম অন দ্য রেঞ্জ’ ওইসব হরিণ-টরিণ আর অ্যান্টেলোপ। ”
তিনি আবার হাসলেন। “আপনি নিশ্চয়ই পশুপাখি পছন্দ করেন। ”
 “করি তো”, আমি বললাম। এবং আমি চিন্তা করলাম আমার সেই বন্ধুর কথা যে চিড়িয়াখানা পছন্দ করে আর তার শোকসভার স্যুটের কথা।
 “আপনার সঙ্গে কথা বলে ভালো লাগল। গুড বাই। ”
 “গুড বাই। ” আমি বললাম
 
তারা তাদের প্রদীপগুলো নিভিয়ে ফেলল বাতাস বাঁচানোর জন্য, এবং তাদের ঘিরে ফেলল অন্ধকার। কেউ কোনো কথা বলল না। আঁধারে তারা যা শুনতে পাচ্ছিল তা ছিলো ছাদ চুঁয়ে প্রত্যেক পাঁচ সেকেন্ড অন্তর পানি পড়ার শব্দ।
“আচ্ছা, সবাই শোনো, খুব বেশী নিঃশ্বাস নিও না। আমাদের খুব বেশী বাতাস বাকি নেই”, একজন বৃদ্ধ খনি-শ্রমিক বললেন। তিনি তার কণ্ঠ নামিয়ে ফিসফিসের পর্যায়ে নিয়ে গেলেন, তারপরো সুড়ঙ্গের ছাদের কড়িকাঠগুলো মৃদু ক্যাঁচক্যাঁচ করে উঠল। আঁধারে, খনি শ্রমিকরা একসঙ্গে ঘেঁষাঘেঁষি করে, একটি মাত্র শব্দ শোনার জন্য উৎকণ্ঠিত হয়ে ছিলো। শাবলের শব্দ। জীবনের শব্দ।
তারা অপেক্ষা করল অনেক ঘণ্টা ধরে। আঁধারের মাঝে বাস্তবতা গলে মিলিয়ে যেতে শুরু করল। সবকিছু এমন লাগছিল যেনো এগুলো বহুকাল আগে ঘটছে, কোনো অনেক দূরের পৃথিবীতে। নাকী এগুলো ভবিষ্যতে ঘটছিল, কোন দূরবর্তী ভিন্ন জগতে?
বাইরে, লোকেরা একটি গর্ত খুঁড়ছিল, তাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিল। দৃশ্যটি অনেকটা ছিলো কোনো মুভির মতো।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১৭
এসএনএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

গল্প এর সর্বশেষ