প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজক হয়েই চমকে দিয়েছিল কাতার। এরপর মহাসমারোহে মধ্যপ্রাচ্যের ছোট্ট কিন্তু ধনী রাষ্ট্রটি উপহার দিয়েছে একের পর এক চমক।
কঠোর নিয়মের বেড়াজালেও কাতার ফুটবল পর্যটকদের দিয়েছে নতুনত্বের স্বাদ। এরপর একে একে মঞ্চে আগমন ও বিদায় ঘটেছে বিশ্ব ফুটবলের মহাতারকাদের। আর আজ রাতে লুসাইল স্টেডিয়ামে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার মধ্যকার ঐতিহাসিক ফাইনালের মধ্য দিয়ে নামতে চলেছে সেই ২০২২ বিশ্বকাপের পর্দা।
আজই শেষবারের মতো আজ মঞ্চ আলোকিত করতে উঠবেন মেসি-এমবাপ্পেরা। এরপরই মঞ্চের আলো নিভে যাবে। সেই আলো সঙ্গী করে এক দল ফিরবে বীরের বেশে। আরেক দল ফিরবে বিষণ্ণ ও ভগ্ন হৃদয় নিয়ে। কাতারে আজ রাতে যখন এক দল বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়বে; তখন কিছু না জিতেও উৎসব করবে কাতার।
একে তো বিশ্বকাপ আয়োজন করেই অনেক বড় সাফল্য পেয়ে গেছে কাতারিরা। তার ওপর আজ (১৮ ডিসেম্বর) দেশটির জাতীয় দিবস। এক যুগের প্রস্তুতি আর ত্যাগ- তিতিক্ষার ফল হাতে পাওয়ার দিনে তাই পুরো কাতার ভাসবে উৎসবের জোয়ারে। জাতীয় দিবসের দিনে বিশ্বকাপ ফাইনাল- কাতারিদের জন্য দিনটি একেবারে সোনায়-সোহাগা!
কাতারে যারা বিশ্বকাপ উপভোগ করতে গেছেন, তাদের জন্যও আজ বিশেষ দিন। প্রায় এক মাস কাতারের মতো রক্ষণশীল দেশে বৈশ্বিক ফুটবলের আসর কেমন হবে; তা নিয়ে শুরু থেকে অনেকের সংশয় ছিল। কিন্তু কাতার সব সংশয় দূর করে দিয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন কিংবা খেলাধুলার পরিবেশ তো আছেই- এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে যাতায়াত এবং সমর্থকদের আনন্দ-ফুর্তি করার জন্য যে ব্যবস্থা তারা করেছে তা দেখেও চমকে ওঠেছেন সবাই।
বিশ্বের সব প্রান্তের সমর্থকদের এক বিন্দুতে মিলিয়ে দিয়েছে এবারের বিশ্বকাপ। সেই বিন্দু শেষে সিন্ধুতে পরিণত হয়েছে। এমন বৈচিত্র্যময় বিশ্বকাপ আগে কখনো দেখা যায়নি। কাতার কী বিপুল পরিমাণ অর্থ ঢেলেছে এই বিশ্বকাপ সফল করতে- তা এতদিনে কারও অজানা নেই। মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো গুরুতর অভিযোগ খণ্ডন করেছে তারা। সেই সঙ্গে পশ্চিমা মিডিয়ার একচোখা নীতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অভূতপূর্ব এক ইতিহাস গড়েছে কাতার। তাই এবারের জাতীয় দিবস কাতারিদের জন্য মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর; বিশ্বকে দেখিয়ে দেওয়ার যে ক্ষুদ্র এই দেশটির সামর্থ্য আসলে কত বেশি!
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
এমএইচএম