ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

মেসির যে কথায় কেঁদেছিলেন মার্তিনেস

স্পোর্টস ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
মেসির যে কথায় কেঁদেছিলেন মার্তিনেস

কাতারে বিশ্বকাপ জেতার বছর দেড়েক আগে জাতীয় দলের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা জেতার স্বাদ পান  লিওনেল মেসি। ২০২১ কোপা আমেরিকা জয়ের মধ্য দিয়ে ১৫ বছরের আক্ষেপ দূর করেন এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।

সেবার ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে ২৮ বছর পর বড় কোনো শিরোপা ঘরে তুলেছিল আলবিসেলেস্তেরা।  

গত কোপায় গ্রুপ 'এ' থেকে শীর্ষে উঠার পর নকআউট পর্বে ইকুয়েডর এবং সেমিফাইনালে কলম্বিয়াকে বিদায় করে আর্জেন্টিনা।  সেমিফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ৩টি শট ঠেকিয়ে দলকে ফাইনালে তোলেন মার্তিনেস। এরপর বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামের ফাইনালে স্বাগতিক ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় লিওনেল স্কালোনির দল। মহাদেশীয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ওই ফাইনালের আগে সতীর্থদের উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছিলেন মেসি। অধিনায়কের সেই বক্তব্য শুনে কেঁদেছিলেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেস।  

'গোল ডট কম'-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই ঘটনার কথা স্মরণ করেছেন মার্তিনেস। ফাইনাল ম্যাচটির কারণে নিজের সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে পর্যন্ত দেখতে যেতে পারেননি তিনি। তার এমন ত্যাগের কথা উল্লেখ করে সতীর্থদের উদ্দেশে মেসি বলেছিলেন, মার্তিনেসের জন্য হলেও তাদের শিরোপা জেতা উচিত। অধিনায়কের এমন বক্তব্যে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মার্তিনেস।  

মেসির সেই বক্তব্য যে পুরো আর্জেন্টিনা দলকে অনুপ্রাণিত করেছিল, সে কথা স্মরণ করে মার্তিনেস বলেন, "এটা (মেসির বক্তব্য) আমার হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল। সে (মেসি) আমার মেয়ের কথা উল্লেখ করায় আমার কান্না পাচ্ছিল। কোপা আমেরিকার ফাইনালের ১০ দিন আগে আমার স্ত্রী সন্তান জন্ম দিয়েছিল। মেসি তার বক্তব্যে বলেছিল, 'এখানে আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য সে তার নবজাতক কন্যাকে দেখেনি, এটা নিশ্চিত কর যেন (কোপা শিরোপা) আমরা তাকে উপহার দিতে পারি। ' মেসিকে ওভাবে বলতে দেখে আমি শিহরিত হয়েছিলাম। এটার জন্যই সেদিনের শুরুটা দারুণ ছিল। "

ওই ফাইনালের প্রথমার্ধে আনহেল দি মারিয়ার একমাত্র গোলেই আর্জেন্টিনার শিরোপা জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। যা মেসির ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা। তবে দ্বিতীয় শিরোপার জন্য খুব বেশি অপেক্ষায় থাকতে হয়নি তাকে। ২০২২ বিশ্বকাপেই শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন আধুনিক ফুটবলের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার। তবে দ্বিতীয় শিরোপাটির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল মার্তিনেসের।  

গত বিশ্বকাপের ফাইনালে কিলিয়ান এমবাপ্পের হ্যাটট্রিকে ভর করে দুইবার পিছিয়ে পড়েও ৩-৩ সমতা টানে ফ্রান্স। তবে ১২৩তম মিনিটে নিশ্চিত গোল থেকে তাদের বঞ্চিত করেন মার্তিনেস। শেষ মুহূর্তে পা বাড়িয়ে শট ঠেকিয়ে দেওয়াকে 'ক্যারিয়ারের সেরা সেভ' আখ্যায়িত করেছেন তিনি। এখনও সেই মুহূর্ত প্রায় রাতেই তার মাথায় ঘুরেফিরে আসে। তিনি বলেন, "আমি যখন শুতে যাই এবং চোখ বন্ধ করি, প্রায়ই ভাবি 'যদিও ওইটা ঢুকে যেতো?' এটা মোটেও উপভোগ্য ছিল না। তবে আমি মাথা ঠাণ্ডা রেখেছিলাম। এটাই হয়তো আমার ক্যারিয়ারের সেরা সেভ। "

মার্তিনেসের বীরত্ব অবশ্য পেনাল্টি শুটআউটেও দেখা গেছে। তার কারণেই দুটি শট মিস করেন ফ্রান্সের অরেলিন চুয়ামেনি এবং কিংসলে কোমান। সবমিলিয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জোরে টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লাভ জিতে নেন মার্তিনেস। যদিও পুরস্কার নিয়ে তার বিতর্কিত উদযাপনের কারণে সমালোচিত হতে হয়েছে তাকে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।