ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

ঘুরে দাঁড়ানো জয়ে ফেড কাপের ফাইনালে মোহামেডান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২৪
ঘুরে দাঁড়ানো জয়ে ফেড কাপের ফাইনালে মোহামেডান

প্রত্যাবর্তনের অবিশ্বাস্য এক গল্প লিখে আবারও ফেডারেশন কাপের ফাইনালে উঠল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। সেমিফাইনালে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পিছিয়ে পড়ার কারণে বাদ পড়ার মুখে ছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

কিন্তু শেষ দিকে ঠিকই ঘুরে দাঁড়ায় আলফাজ আহমেদের দল। পুলিশ ফুটবল ক্লাবকে ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে নিজেদের টিকিয়ে রাখল তারা।

আধিপত্য দেখিয়েও প্রথমার্ধে গোল পায়নি মোহামেডান। বিরতি থেকে ফিরে উল্টো থমকে যেতে হলো সাদা-কালোদের। পুলিশ ফুটবল ক্লাবের উজবেক ডিফেন্ডার আখররবেক উকতামভের হেডে পরাস্ত হলেন মোহামেডান গোলকিপার সুজন হোসেন। তবে কি চ্যাম্পিয়নদের বিদায় হবে ফাইনালের আগেই? 

এই শঙ্কা যখন ঘুরপাক খাচ্ছে মুন্সিগঞ্জের মুন্সিগঞ্জের শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উপস্থিত একদল সাদা-কালো সমর্থকের মনে, তখনই আরেকটি ফিরে আসার গল্প লিখে ফেলে মোহামেডান।

৬৯ মিনিটে ইমানুয়েল সানডে গোল করে ম্যাচ সমতা আনেন। এর দশ মিনিট পর নিঁখুত হেডে জয়সূচক গোলটি করেন শাহরিয়ার ইমন। তাতে এক বছরের মধ্যে তৃতীয়বার কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছে গেছে মোহামেডান। চলতি মৌসুমে দু'টি টুর্নামেন্টেই ফাইনালিস্ট মোহামেডান। এখন তাদের অপেক্ষা ১৪ মে দ্বিতীয় সেমিফাইনালের। যেখানে মুখোমুখি হবে বসুন্ধরা কিংস ও গতবারের আরেক ফাইনালিস্ট আবাহনী। বিজয়ীদের সঙ্গে ২১ মে শিরোপা লড়াইয়ে নামবে মোহামেডান।

ম্যাচের ১২ মিনিটে প্রথম সুযোগ তৈরি করেছিল মোহামেডান। ডান দিক থেকে আরিফ ইসলামের ক্রসে ইমানুয়েল সানডের স্লাইডিং হেড দূরের পোস্ট ঘেসে বাইরে যায়। এরপর বেশ ক'টি সুযোগ তৈরি করেও গোল করতে পারেনি মোহামেডান। প্রথমার্ধে সুযোগ এসেছিল পুলিশের সামনেও। তবে দুর্বল ফিনিশিংয়ে সেই সুযোগ হাতছাড়া হয়।

দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ঠিকই ধারার বিপরীতে গোল পেয়ে যায় পুলিশ। ডান দিক থেকে ব্রাজিলিয়ান প্লে-মেকার এডুয়ার্ড মোরিও ফ্রি-কিকে একটু নিচু হয়ে হেড করে গোল করেন উখমেতভ। ম্যাচের ৫৩ মিনিট গোলকিপার আহসান হাবিব বিপুর কৃতিত্বে লিড অক্ষুণ্ন থাকে পুলিশের। আরিফের ছোট পাসে মোজাফফরভের বক্সের ওপর থেকে নেওয়া শট শেষ মুহূর্তে কর্নারের বিনিময়ে ফিরিয়ে দেন পুলিশ কিপার।  

দু'মিনিট পর ডান দিক থেকে আরিফের আরেকটি সেট-আপে ইমানুয়্যেল সানডের টোকা দূরের পোস্ট ঘেসে বাইরে যায়। তারপরও আশা ছাড়েনি মোহামেডান। ফলটা তারা পায় ৬৯ মিনিটে। মালির ফরোয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতের শট ব্লক করেছিলেন আব্দুল্লায়েভ। সেটা চলে আসে আরিফের কাছে। এই উইঙ্গার ভলি করে পাঠিয়ে দেন বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা সানডের কাছে। চলতি বলে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ডের ভলি জালে জড়ায়।  

৭৮ মিনিটে আরেকটি সমন্বিত আক্রমণে গোল পেতে পারতো মোহামেডান। আরিফের কাছ থেকে বল পেয়ে ডান দিক থেকে দিয়াবাতের লো ক্রস শাহরিয়ার ইমন পারেননি পা ছোঁয়াতে। বল চলে যায় সানডের কাছে, তবে তার শট রুখে দেন উখমেতভ। পরের মিনিটে অবশ্য উৎসবের উপলক্ষ্য পেয়ে যান মোহামেডান সমর্থকরা। ডান দিকে অসাধারণ খেলা আরিফের বাড়ানো বলে সানডে ক্রস ফেলেন বক্সে। শাহরিয়ান ইমন হেড করে পুলিশ গোলকিপার বিপুকে পরাস্ত করে মোহামেডানকে তুলে নেন ফাইনালে।

গত ফেডারেশন কাপের ফাইনাল জয়ের পর মোহামেডান চলতি মৌসুমে খেলেছে স্বাধীনতা কাপের ফাইনাল। বসুন্ধরা কিংসকে সেই ম্যাচে অবশ্য হারাতে পারেনি তারা। এরপর লিগে এখন পর্যন্ত আলফাজের শিষ্যরা আছে দ্বিতীয়স্থানে। লিগ জয় ভীষণ কঠিণ হলেও আরেকবার ফেডারেশন কাপ জিতে চিরশত্রু আবাহনীর ১২বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার একক রেকর্ডটা ছুঁয়ে ফেলার সুযোগ মোহামেডানের সামনে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২৪
এআর/এএইচএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।