বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে খেলার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন ইংল্যান্ড প্রবাসী ফুটবলার হামজা দেওয়ান চৌধুরী। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য আবেদন করতে মঙ্গলবার গিয়েছিলেন লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে।
তবে হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে চলে গেছেন বলে জানা গেছে। হামজার বাংলাদেশি পাসপোর্ট প্রাপ্তির জন্য চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনও। যদিও এখানে খুব বেশি কিছু করার ক্ষমতা নেই ফেডারেশনের।
হামজার পাসপোর্ট প্রক্রিয়া ও বাংলাদেশ ফুটবল দলে খেলানো নিয়ে কাজ করছে বাফুফে। পাসপোর্ট আবেদনের আগের ধাপ জন্ম নিবন্ধন। সম্প্রতি হামজা বাংলাদেশের জন্ম নিবন্ধনের কাগজ পেয়েছেন। বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার গনমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘হামজা ও তার পরিবার বাংলাদেশের ব্যাপারে বেশ ইতিবাচক। হামজার মতো খেলোয়াড় বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চান এটা আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। তাই আমরাও আন্তরিকতার সঙ্গে এটা নিয়ে কাজ করছি। কিছুদিন আগে হামজার পরিবার তার জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়েছে, এতে আমরা সহায়তা করেছি। সামনের প্রক্রিয়াগুলোতেও পাশে থাকব। ’
জাতীয় ফুটবল দলে খেলতে অন্যতম শর্ত পাসপোর্ট। প্রবাসী এবং বংশোদ্ভুত হলে আরও অনেক শর্ত আছে ফিফার। শুধু দেশের টানে ও পরিবারের ইচ্ছায় বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চান হামজা। জাতীয় দলে খেলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, শুধু প্রাপ্তি জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি ও ভালোবাসা অর্জন। হামজা প্রাথমিক শর্ত পূরণে পাসপোর্ট করতে অনলাইনে আবেদন করেছিলেন। নটিংহ্যাম থেকে লন্ডনের অনেক দূরত্ব। এত দূর থেকে গিয়ে এবং অপেক্ষা করেও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনে কাজটি সম্পন্ন করতে পারেননি। খানিকটা বিড়ম্বনা ও অতিরিক্ত বিলম্বে ক্ষোভ নিয়েই হাইকমিশন ত্যাগ করেন হামজা ও তার মা।
বাফুফে হামজার পরিবার ও লন্ডন দূতাবাস দুই পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। ‘এখানে বাফুফের সরাসরি কিছু করার নেই। আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করছি। হাইকমিশনকে হামজার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে অনুরোধ করা হয়েছে। তারা এটি বিবেচনা করে সামনের সপ্তাহে হামজার জন্য বিশেষ সুচি রাখছে’, ব্যাংককে এএফসি কংগ্রেস থেকে বলেন সাধারণ সম্পাদক।
জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরাও হামজার ব্যাপারে ইতিবাচক। যদিও পাসপোর্ট হলেই কেবল হামজা জাতীয় দলে খেলতে পারবেন না। ফিফায় বাফুফেকে আবেদন করতে হবে এবং আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে। তবে পাসপোর্ট করতে উদ্যোগ নিয়েছেন হামজা। এটা বাংলাদেশের জন্য দারুণ ইতিবাচক খবর। যদিও তার বিড়ম্বনার খবরে অনেক সমালোচনা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, হামজার মা বাংলাদেশি ও বাবা গ্রেনাডিয়ান। ইংল্যান্ডের লাউগবার্গে ১৯৯৭ সালের ১ অক্টোবর তার জন্ম। ২০১৮-১৯ সালে তিনি ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে সাতটি ম্যাচও খেলেছেন। ইংল্যান্ডের এই প্রবাসী ফুটবলার বাংলাদেশে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন দুই বছর আগে। এরই প্রেক্ষিতে বাফুফে হামজার ক্লাব লিস্টার সিটিকে চিঠিও দিয়েছিল। পরে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে আর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। নতুন করে সাম্প্রতিক সময়ে হামজাকে নিয়ে বাংলাদেশের তোড়জোড় শুরু হয়। প্রিমিয়ার লিগে হামজার অভিষেক হয় ২০১৫ সালে, সে সময় থেকে তিনি লিস্টার সিটিতে আছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২৪
এআর/আরইউ