ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

ফুটবল

ইনজুরি নিয়ে বাফুফের প্রতি কৃষ্ণার ক্ষোভ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৬ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৪
ইনজুরি নিয়ে বাফুফের প্রতি কৃষ্ণার ক্ষোভ

বেশ কিছুদিন থেকেই পায়ের ইনজুরিতে ভুগছেন সাফ জয়ী নারী ফুটবল দলের সদস্য কৃষ্ণা রানী সরকার। অনেক দিন থেকেই ভোগা এই ইনজুরির চিকিৎসাও চলছে।

মাঠে ফিরলেও ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সেরে ওঠতে পারেননি তিনি।  তাকে ভারত কিংবা অস্ট্রেলিয়া নিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন দেশের চিকিৎসকরা। তবে এ নিয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের, এমনটাই দাবি তার। মনে জমে থাকা ক্ষোভ নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেছেন দেশের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার।  

আগামীকাল (৩১ মে) চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এবারও জাতীয় দলের স্কোয়াডে জায়গা পাননি কৃষ্ণা। ইনজুরির জন্যই ছিটকে যেতে হয়েছে তাকে। যদিও সদ্য সমাপ্ত নারী লিগে নাসরিন ফুটবল একাডেমির হয়ে খেলেছেন তিনি। করেছেন ৩ গোলও। তবে জাতীয় দলে সুযোগ  না পাওয়ায় তার মনে জমা হয়েছে অভিমান।  

বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য কৃষ্ণার সেই ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-

'২০২২ এ সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে ইনজুরিতে পড়ি।

প্রায় দেড় বছর হয়ে গেছে। পা আগে থেকে ভালো কিন্ত এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়ে উঠতে পারিনি। প্র্যাকটিস করলেই ব্যথা হয়। বাফুফে ফিজিও দিয়ে আমার  ট্রিটমেন্ট চলছে। সবাই জানে ইনজুরিটা অনেক বিরল। ব্যথা নিয়েই প্র্যাকটিস করছি। দেশে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

২০২৩ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ফিজিও দেবাশীষ চৌধুরী স্যারকে দেখিয়েছিলাম। উনি প্রায় আমাকে অনেকদিন দেখেন, যখন ব্যথা কমছিল না। স্যার বলেছিলেন অস্ট্রেলিয়া, ভারতে গিয়ে ট্রিটমেন্ট করাতে। কিন্তু যখন আমি বাফুফে জানাই, উনারা বলেন আরও কিছুদিন দেশে ডাক্তার দেখাতে। আমি অনেকদিন তাদেরকে ভারতে যাওয়ার কথা বলছি। কিন্তু উনারা আমার কথায় কোন গুরুত্ব দেয়নি। আজও পর্যন্ত ব্যাথা নিয়ে প্র্যাকটিস করছি।  

২০১৩ সালে অনূর্ধ্ব ১৪ দলে সুযোগ পাই এবং ২০১৪ সালে সিনিয়ার জাতীয় দলে সুযোগ পাই, সেখান থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কখনো কোনো দলের বাইরে থাকতে হয়নি। প্রায় ১০ বছর একটানা জাতীয় দলের হয়ে খেলেছি। টুকটাক ইনজুরিতে পড়েছি। কিন্তু হঠাৎ করে এত বড় ইনজুরিতে পড়ব কখনো ভাবিনি। অনেকদিন বিশ্রামে থাকার পর আর ভালো লাগছিল না এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলাম। তাই ব্যথা নিয়ে প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছি।  

চীনে যখন এশিয়ান গেম খেলতে যাই, তিনটা ম্যাচ বেঞ্চে বসে কাটিয়েছে। ব্যাক টু ব্যাক দুইটা টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে গেলাম। একজন প্লেয়ার হিসেবে এটা মেনে নেওয়া খুব দুঃখজনক।  

কষ্ট একটাই কখনো কোনো টিমমেট, প্লেয়ার বা কোচ কে বলতে দেখলাম না কৃষ্ণা ইনজুরিতে আক্রান্ত, তাকে দ্রুত ট্রিটমেন্ট করানো হোক। কারো কোনো মাথাব্যথাই নেই।  
১০ বছরের পরিশ্রম এক নিমিষে শেষ।  

অনেক প্লেয়ারকে দেখেছি এভাবে হারিয়ে যেতে। মনে হয় সেই দিনটা আর বেশি দিন নেই কৃষ্ণার জন্য।

সবাই আমার জন্য আশীর্বাদ এবং দোয়া করবেন। যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পরি। আবার আগের মতো মাঠে ফিরতে পারি। '  

ফেডারেশনের পাশাপাশি দলের সতীর্থদের প্রতিও রয়েছে কৃষ্ণার অভিমান। এর আগে অভিমান নিয়ে জাতীয় দল ছেড়েছেন আনুচিং মোগিনী, সাজেদা খাতুন, সিরাত জাহান স্বপ্না। সাফজয়ী কৃষ্ণা কোন পথ বেছে নেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৪
এআর/এএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।