রিয়াল মাদ্রিদ এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতলে প্রথমবারের মতো ব্যালন ডি'অরের মূল দাবিদার হবেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। কিন্তু আপাতত ব্যক্তিগত সাফল্যের দিকে নজর দিচ্ছেন না ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
আগামীকাল শনিবার রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে রিয়াল। ওয়েম্বলির এই ফাইনাল জিতলেই টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হবে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। ২০২২ সালে তাদের রেকর্ড ১৪তম শিরোপা জতে বড় ভূমিকা ছিল ভিনির। ফাইনালে লিভারপুলের বিপক্ষে রিয়ালের ১-০ গোলে জেতা ম্যাচের একমাত্র গোলদাতা ছিলেন তিনি।
একই কীর্তির পুনরাবৃত্তি করতে চান ভিনি। তবে এজন্য ব্যালন ডি'অর পাওয়ার সম্ভাবনা শিরোপা জেতাই আসল লক্ষ্য বলে জানালেন তিনি, 'যে-ই গোল করুক না কেন, দিন শেষে শিরোপা জেতাই গুরুত্বপূর্ণ। আমার কাছে ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে উপরে আছে চ্যাম্পিয়নস লিগ। আমি ব্যালন ডি'অর নিয়ে ভাবি না। এ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার চেয়ে ভালো কিছু হতেই পারে না। '
রিয়াল মাদ্রিদে ক্লাবের কিংবদন্তি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর উত্তরসূরি হিসেবে ভাবা হতো ভিনিকে। ২০১৮ সালে রিয়ালের সর্বোচ্চ গোলদাতা বিদায় নিলে বিশাল চাপ এসে পড়ে তরুণ ভিনির ঘাড়ে। কিন্তু নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। তবে দ্বিতীয়বারের মতো ২০২১ সালে আনচেলত্তি রিয়ালের কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ব্যাপকভাবে লাভবান হন ভিনি।
আনচেলত্তি আসার আগের তিন মৌসুমে মাত্র ১৪ গোল করেছিলেন ভিনি। আর ইতালিয়ান কোচ ফেরার পর প্রথম মৌসুমেই ২২ গোল করেন এই ব্রাজিলিয়ান। ২২তম গোলটি তাকে আলোচনায় নিয়ে আসে। ইয়ুর্গেন ক্লপের লিভারপুলের বিপক্ষে করা ওই গোলটি দলে তাকে পাকাপাকি অবস্থান এনে দেয়। তার এই পরিবর্তন যে এমনিই না, তার প্রমাণ মেলে পরের মৌসুমেও। যেখানে ২৩ গোল করেন তিনি। আর এবার ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে পর্যন্ত তার গোলসংখ্যা ২৩টি।
আনচেলত্তির আরেকটি সিদ্ধান্ত থেকে উপকৃত হয়েছেন ভিনি। উইঙ্গার হিসেবে খেলে অভ্যস্ত এই ব্রাজিলিয়ানকে সেন্ট্রাল স্ট্রাইকার হিসেবে খেলিয়েছেন ইতালিয়ান কোচ। তাছাড়া মিডফিল্ডে জুড বেলিংহামকে দারুণভাবে ব্যবহার করে আদতে ভিনিকে আরও আক্রমণাত্মক ভূমিকায় নিয়ে গেছেন আনচেলত্তি।
যদিও আনচেলত্তির নতুন সিস্টেমের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে কিছুটা সময় লেগেছে ভিনির। এ মৌসুমেই প্রথম ১১ ম্যাচে মাত্র ৩ গোল করেছিলেন তিনি। আর শেষ ২৩ ম্যাচে করেছেন ১৭ গোল। এই পরিবর্তনের জন্য কোচের প্রতি কৃতজ্ঞতাই ঝরলো ভিনির গলায়, 'আমি এখন আগের চেয়ে বেশি জায়গা নিয়ে খেলতে পারি। তাতে আমার খেলার ধরণ আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। আমি নিয়মিত উন্নতি করছি এবং আমি এটা চালিয়ে যেতে চাই ক্যারিয়ারের শেষ পর্যন্ত; যেমনটা করেছে টনি ক্রুস। '
জার্মানির সুপারস্টার মিডফিল্ডার ক্রুস সদ্যি রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় বলে দিয়েছেন। রিয়ালের বহু অর্জনের কারিগর ক্রুসের সহযোগিতায় নিজেকে বদলে ফেলেছেন ২৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। তবে মূল কারিগর যে আনচেলত্তি, সে কথাই বললেন ভিনি, 'কোচ যেভাবে খেলতে বলেন, তার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া আমার জন্য সহজ, কারণ তিনি আমাকে খেলোয়াড় হিসেবেই বদলে দিয়েছেন। তিনি আমাকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছেন, যা আমার খুবই প্রয়োজন ছিল। তাই তিনি যেভাবে চাইবেন, সেভাবেই চলবো। '
'প্রথমে ভেতরে খেলার ব্যাপারটা আমি বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু এখন আমি সেখানে খেলে খুশি... তিনি (আনচেলত্তি) আমাকে সবসময় বলতেন আমি গোল করতে পারবো, কিন্তু আমার বিশ্বাস হতো না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, সবকিছুই ভালোর দিকেই গেছে। '
বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২৪
এমএইচএম