ফুটবলবিশ্বে সবচেয়ে বেশি আলোচিত নামটি নিঃসন্দেহে লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড কখন কী করেন, তার দিকে নজর থাকে সব ফুটবলপ্রেমীর।
কারণ এ বছরও অনেকবার মাঠে নামবেন আর্জেন্টিনাকে ২০২২ বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক। ক্লাবের জার্সিতেও থাকবেন ব্যস্ত। তার ক্যারিয়ারের গোধূলিবেলায় তিনি নিশ্চয়ই আরও একটি সাফল্যে মোড়ানো মৌসুম কাটাতে চাইবেন। মেসির পায়ের জাদু দেখার অপেক্ষায় থাকবেন তার ভক্ত-সমর্থকরাও।
তবে আলবিসেলেস্তেদের সেরা তারকাকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখেও পড়তে হবে এবার। কারণ ইনজুরির কারণে গত বছর বেশ ভুগতে হয়েছে তাকে। জাতীয় দলের জার্সিতে তিনি কোপা আমেরিকা জিতলেও ক্লাব ফুটবলে এমএলএস (মেজর লিগ সকার) শিরোপা এখনও অধরাই রয়ে গেছে। এবার সেই আক্ষাপ ঘোচাতে চাইবেন তিনি।
এমএলএস কাপ: ২০২৫ সালে মেসি ও তার ক্লাব ইন্টার মায়ামির প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে মেজর লিগ সকার (এমএলএস) কাপ জেতা। ২০২৪ সালে আটলান্টা ইউনাইটেডের কাছে হেরে প্লে অফ থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে তাদের। এবার তাদের লক্ষ্য শুধু ফাইনালে উঠাই নয়, শিরোপা জেতাও। যে কারণে প্রধান কোচ হিসেবে ইন্টার মায়ামি নিয়ে এসেছে মেসির সাবেক আর্জেন্টাইন সতীর্থ হাভিয়ের মাচেরানোকে।
কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপ: এই টুর্নামেন্টের গত আসরের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যায় ইন্টার মায়ামি। তবে এবার আঞ্চলিক এই টুর্নামেন্ট ঘিরে এবার বিশেষ পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন মেসিরা। তবে এজন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি মেসির নিজের পুরো ফিট থাকা। তার নেতৃত্বে এবার প্রথম এমএলএস ক্লাব হিসেবে আন্তর্জাতিক শিরোপা জেতার আশাই করবে ইন্টার মায়ামি।
লিগস কাপ: ২০২৩ সালে এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতার স্বাদ পেয়েছে ইন্টার মায়ামি। সেবার মেসি ঝলকে ভর করেই নিজেদের ইতিহাসে প্রথম এই শিরোপা জেতে ডেভিড ব্যাকহামের মালিকানাধীন ক্লাবটি। এবারও লিগা এমএক্স-এর সেরা দলের বিপক্ষে খেলতে হবে তাদের। এই শিরোপা জিতলে নিশ্চিতভাবেই মেসিদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে।
ক্লাব বিশ্বকাপ: ২০২৫ সালে প্রথমবারের মতো ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নেবে ইন্টার মায়ামি। ৩২ দলের আসরটি বসবে যুক্তরাষ্ট্রেই। এই টুর্নামেন্ট জেতা মেসির জন্য বিরল অর্জন তো বটেই, ক্লাব হিসেবে ইন্টার মায়ামির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ফুটবলের ইতিহাস পাল্টে দেওয়ার সুযোগও।
আর্জেন্টিনা জাতীয় দল: ২০২৫ সালে আর্জেন্টিনার কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা নেই। তবে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের বেশ কয়েকটি ম্যাচ রয়েছে। যেখানে নিজের নেতৃত্ব ও পারফরম্যান্স দিয়ে আরও একটি বিশ্বকাপে খেলার পথে ছুটবেন মেসি। আর্জেন্টাইনদের বাছাইপর্ব পার হওয়ার জন্য মেসির ফর্মে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এর পাশাপাশি আরও কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে মেসিকে। এর মধ্যে শারীরিক ফিটনেস ঠিক রাখা তো আছেই। সেই সঙ্গে মাঠে ফুটবল জাদু দেখিয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার ধারাবাহিকতা ধরে রাখাও তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
২০২৫ সালে ৩৮ বছরে পা দেবেন মেসি। বয়সের এই বাধা পেরোনো তার জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে সন্দেহ নেই। তবে এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সামর্থ্য আছে বলেই তিনি মেসি। তার ক্যারিয়ারের যে কয় বছর বাকি, সেই সময়টুকু তার খেলা উপভোগ করতে দেখতে চাইবেন ভক্তরা। মেসির কাছে ভক্তদের প্রত্যাশা এখনও অনেক বেশি। তিনি সেটি পূরণ করতে পারেন কি না সেটিই দেখার বিষয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২৫
এমএইচএম