ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

ফুটবল

হত্যার হুমকি পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ সুমাইয়া

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
হত্যার হুমকি পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ সুমাইয়া ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ নারী ফুটবলে চলছে কোচ নিয়ে বিদ্রোহ। বর্তমান কোচ পিটার বাটলরাকে চান না ক্যাম্পের ১৮ ফুটবলার।

এই বিদ্রোহের রেশ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ফুটবলারদের বিভিন্ন ভাবে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে।  

এরই জের ধরে গতকাল মাতসুশিমা সুমাইয়া ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছিলেন ধর্ষণ এবং হত্যার হুমকি পাচ্ছেন তিনি। আজ থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন এই ফুটবলার। পরে নারী ফুটবলারদের নিরাপত্তায় কোনও ছাড় দেওয়া হবে না বলে এক বিবৃতি দিয়েছে বাফুফে। আজ সুমাইয়া যখন জিডি করতে থানায় যান তার সঙ্গে ছিলেন বাফুফের মিডিয়া এক্সিকিউটিভ খালিদ মাহমুদ নওমি। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সুমাইয়াকে সব রকমের সহযোগিতা করছি। তারই অংশ হিসেবে আজ থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। ’

নারী ফুটবলে পিটার বাটলারের সঙ্গে সাফজয়ী সিনিয়র ফুটবলারদের দ্বন্দ্ব নিয়ে সরগরম দেশ। অনুশীলন বয়কটের পাশাপাশি গণঅবসরের হুমকি দিয়েছেন সাবিনা খাতুনরা। এই অবস্থায় সাফ চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড় জাপানি বংশোদ্ভুত মাতসুশিমা সুমাইয়া আলোচনায় এসেছেন।  

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাকি তাকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ফেসবুক পোস্টে এসব তিনি জানান। সুমাইয়া লিখেছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম। আমার নাম মাতসুশিমা সুমাইয়া। আমি বাংলাদেশ নারী জাতীয় ফুটবল দলের একজন খেলোয়াড়। ইন্টার স্কুলে ইংলিশ মিডিয়াম স্টুডেন্ট হয়ে খেলা থেকে শুরু করে মালদ্বীপে লিগ জয় এবং বাংলাদেশের হয়ে ২০২৪ সালে সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ জত- এ যাত্রা আমার কাছে ছিল মিষ্টি-তিক্ততায় ভরা। ’ 

‘যখন থেকে আমি এই পথ (নারী ফুটবলার হিসেবে খেলা) বেছে নিয়েছি, তখন থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল সেসব তরুণ শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করবো, যাদের বাবা-মা চায় তারা শুধু পড়ালেখার ওপরই মনোযোগ নিবদ্ধ করে থাকুক। আমি দেখাতে চেয়েছিলাম যে আবেগ এবং নিষ্ঠা সব বাধা ভেঙে দিতে পারে। কিন্তু আজ, আমি আফসোস নিয়ে বসে আছি। আক্ষেপ হচ্ছে আমার শিক্ষা, আমার পরিবার, ঈদ, সব বিসর্জন দিয়ে এমন একটি দেশের সেবা করার জন্য যে আমাদের সংগ্রামের প্রশংসা করতে জানে না। ’

‘আমি আমার বাবা-মায়ের সাথে ফুটবল খেলার জন্য লড়াই করেছি; এই বিশ্বাসে যে আমার দেশ আমার পাশে থাকবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো ভিন্ন। একজন ক্রীড়াবিদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা সত্যিই কেউ চিন্তা করে না। আমার এবং আমার সতীর্থদের জন্য আমরা যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছি সে সম্পর্কে ইংরেজিতে একটি চিঠি লেখার ন্যূনতম ক্ষমতা আমার আছে। ’

‘কয়েকদিন ধরে, আমি অসংখ্য হত্যা এবং ধর্ষণের হুমকি পেয়েছি। এমন সব কথা যা আমাকে এমনভাবে ভেঙে দিয়েছে যা আমি কখনো স্বপ্নেও কল্পনা করিনি। আমি জানি না এই (ট্রমা) আঘাত থেকে সেরে উঠতে আমার কতক্ষণ লাগবে। তবে আমি জানি এবং চাই যে- কাউকে শুধু তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কখনো যেতে হবে না। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
এআর/আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।