ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

কৃষ্ণা-তহুরাদের নিয়ে গর্বিত সালাহউদ্দিন

মহিবুর রহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৬
কৃষ্ণা-তহুরাদের নিয়ে গর্বিত সালাহউদ্দিন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম-ফাইল ফটো

ঢাকা: ‘সভাপতি হিসেবে এর চেয়ে বড় খবর আর কি হতে পারে? বাংলাদেশ ফুটবলের সভাপতি হবার পর এটাই আমার কাছে এ যাবতকালের সেরা খবরগুলোর মধ্যে একটি। দেশের বাইরে থাকায় আমি সব ম্যাচ দেখতে পারিনি।

তারপরেও যতগুলো ম্যাচ আমি দেখেছি তাতে মনে হয়েছে ওরা বাংলাদেশ ফুটবলের ব্যতিক্রমধর্মী সংঘবদ্ধ একটি দল। বিশেষ করে আমাদের যে রাইট ব্যাক আছে ২ নম্বর জার্সি (শিউলি আজিম)। এরকম প্লেয়ার আমার ছেলেদের দলেও নেই। ওর ওভার ল্যাপিং, টাইমিং এবং স্টেমিনায় আমি সত্যিই অভিভূত। এত সুন্দর ক্রস! সব পারে তারা, সব পারে!। ’ বলছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।
 
সত্যিই তাই। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের মেয়েরা সব পারে। এদেশের জাতীয় দলের ফুটবলাররা যেখানে বছরের পর বছর হারের গ্লানিতে জর্জরিত হয়ে জয় নামক শব্দটিকে রীতিমত হারিকেন জ্বালিয়ে খুঁজছেন সেখানে একটি টুর্নামেন্টের ৫টি ম্যাচের সবগুলোতেই জয় নিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে  এএফসি অ-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্ব থেকে মূল পর্বে বাংলাদেশের কিশোরিরা।
 
শুধু এই টুর্নামেন্টই কেন? ২০১৪ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত অ-১৪ রিজিওনাল চ্যাম্পিয়নশিপ ও একই টুর্নামেন্টে ২০১৬ আসরে (তাজিকিস্তানে) চ্যাম্পিয়নের মুকুট পড়েছিলেন গোলাম রব্বারি ছোটনের ছাত্রীরা। সেকি কম কথা?


মোটেও না। রীতিমতো অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছেন লাল-সবুজের দাপুটে এই তরুণীরা। কৃষ্ণা, সানজিদা, আনুচিং ও তহুরাদের এই পারফরেম্যান্স জাতীয় দলের জন্য একটি ওয়েকআপ কল।

অথচ জাতীয় দল যেভাবে ফেডারেশনের সুযোগ-সুবিধা পায় সেভাবে এই মেয়েরা সুযোগ-সুবিধা পায়না বললেই চলে! তারপরও সামর্থ্যের সবটুকু ঢেলে দিচ্ছে তারা। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে সাফল্য।


লাল-সবুজের পতাকা হাতে ওরাই ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে যাবে এএফসি অ-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্বে খেলতে। যেখানে এশিয়ার ৪৮টি দেশের মধ্যে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে মাত্র ৮টি দেশ। বাংলাদেশ ছাড়া বাকি যে সাতটি দেশ সেখানে অংশ নিবে তারা হলো; জাপান, চিন, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, লাওস ও স্বাগতিক থাইল্যান্ড।
 
আর এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইকে সামনে রেখে অক্টোবর থেকেই অ-১৬ মেয়েদের ক্যাম্প শুরুর কথা জানালেন সালাহউদ্দিন। যেখানে তারা মূল পর্বের আগ পর্যন্ত থাকবে। সম্ভব হলে তাদের জন্য এই সময়ের মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রীতি ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা করবেন বলেও আশ্বস্ত করলেন বাফুফে সভাপতি।

 
‘অক্টোবর থেকেই ওদের ক্যাম্পে নিয়ে নিব। তারপর আমি জাপান ও কোরিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতিদের সাথে আলাপ করবো যেন ওদের সাথে আমি কিছু প্রীতি ম্যাচ খেলতে পারি। ওরা মূল পর্ব নিশ্চিত করে যে কাজটি করেছে সেটা হলো আমাকে টপ গ্রেডে নিয়ে গেছে। তাই প্রস্তুতি ম্যাচ আয়োজনে যা যা প্রস্তুতি লাগে সেটা আমার সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করবো। ’
 
শুধু এএফসি’র মূল পর্ব নিয়েই নয়, কৃষ্ণাদের অভূতপর্ব এই সাফল্য কাজী সালাহউদ্দিনকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে আরও বড় কিছুর, ‘বিষয়টি এমন নয় যে এই জয়গুলো এমনি এমনি এসেছে। আপনি দেখেছেন ওরা কতটা পরিশ্রম করেছে। এটা আমাকে ওদের জন্য আগামী চার বছরের একটি পরিকল্পনা গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে। আমি ওদের নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদের একটি পরিকল্পনা হাতে নিব যাতে করে ওরা অলিম্পিকস বা এশিয়ার সেরা কোন জায়গায় যেতে পারে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, ৬ সেপ্টম্বর ২০১৬
এইচএল/এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।