ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

লা লিগা এখন রিয়ালের জন্য নরক যন্ত্রণা!

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
লা লিগা এখন রিয়ালের জন্য নরক যন্ত্রণা! লা লিগা এখন রিয়ালের জন্য নরকের যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে-ছবি: সংগৃহীত

লা লিগা রিয়াল মাদ্রিদের জন্য ক্রমেই নরকে পরিণত হচ্ছে। সেই ২০১৬/১৭ মৌসুমের শেষ দিনে মালাগার বিপক্ষে ম্যাচ জেতার পর শিরোপা উৎসব মেতেছিল দলটি। এরপর থেকেই ঘরোয়া ফুটবলে নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

লা লিগা এখন রিয়াল মাদ্রিদের জন্য সাপ্তাহিক মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি একঝাঁক বিশ্বসেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত দলটি এখন হারতে হারতে নিজেদের প্রতি আত্মবিশ্বাসই হারিয়ে ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

দেড় বছর আগে জেতা চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপার স্বাদও তাদের কাছে এখন ভুলতে বসা অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে।

সদ্যই লিগের পুঁচকে দল এইবারের কাছে হারের লজ্জায় ডুবেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ঘরোয়া ফুটবলে নিয়মিত অধারাবাহিক পারফরম্যান্স দেখিয়ে বিশ্বসেরা ক্লাবের তালিকায় নিজেদের নাম হারাতে বসেছে দলটি। আর এটা চলছে সেই ২০১৭ সালের ২১ মে’র লা লিগা জয়ের পর থেকেই।

লা লিগায় নিজেদের সর্বশেষ সাফল্যের পর লিগে ৫১ ম্যাচ খেলেছে রিয়াল, যার মধ্যে মাত্র ২৮টিতে জয়ের দেখা পেয়েছেন রামোস-মার্সেলোরা। হেরেছেন ১১ ম্যাচে, ড্র ১২ ম্যাচে। তার মানে এই সময়ে তাদের জয়ের হার প্রায় ৫৫ শতাংশ।

লিগের পয়েন্ট টেবিলে ষষ্ঠ স্থানে থাকা রিয়ালের পয়েন্ট ২০, যা শীর্ষে থাকা সেভিয়ার চেয়ে ৬ পয়েন্ট পিছিয়ে। দুইয়ে থাকা রিয়ালের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা পয়েন্ট ২৫ আর তৃতীয় স্থানে থাকা অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের পয়েন্ট ২৪।

এই হিসাবই যদি (শেষ ম্যাচটি বাদে) গত ৫০ ম্যাচের ক্ষেত্রে করা হয় তাহলে মোট পয়েন্টের হিসাবে রিয়াল আছে তৃতীয় স্থানে, যা বার্সার চেয়ে ২১ পয়েন্ট আর অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের চেয়ে ৬ পয়েন্ট কম। এই হিসাব দেখলেই বার্সা আর অ্যাথলেটিকোর চেয়ে রিয়ালের পিছিয়ে থাকার বিষয়টা বোঝা যায়। একই সময়ে (গত ৫০ ম্যাচে) রিয়াল মোট ৬০ গোল হজম করেছে। অথচ এই সময়ে বার্সা ৪৭ গোল আর অ্যাথলেটিকো মাত্র ৩০ গোল হজম করেছে।

গত মৌসুমে রিয়ালের শুরুটা হয়েছিল খুবই বাজে। মৌসুমের প্রথম পাঁচ ম্যাচের তিনটিতেই হেরে সেবার বেশ আগেভাগেই লিগ শিরোপা বিসর্জন দিতে হয়েছিল লস ব্ল্যাঙ্ককোসদের। সেই ভরাডুবির পর লিগে একবার টানা চার ম্যাচ জয়ই ছিল তাদের সেরা সাফল্য।

ওই ভরাডুবির এমনকি ফরাসি কিংবদন্তি জিনেদিন জিদানের রিয়াল ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টেনে দেয়। অথচ চ্যাম্পিয়নস লিগে তার দল ছিল একপ্রকার অজেয়। টানা তিনবার ইউরোপ সেরার মুকুট পড়েও সন্তুষ্ট হতে পারেননি জিদান।

লা লিগার ২০১৭/১৮ মৌসুম ছিল রিয়ালের জন্য ভুলে যাওয়ার মৌসুম। সেবার চ্যাম্পিয়ন বার্সার চেয়ে ১৭ পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে মৌসুম শেষ করেছিল জিদানের দল। এরপর জিদানের বিদায় নিলে দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় বিশ্বকাপ শুরুর অল্প কিছুদিন আগে বরখাস্ত হওয়া স্প্যানিশ কোচ হুলেন লোপেতেগি। তিনি অবশ্য পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে দলে পাননি। যদিও বর্তমান জুভেন্টাস তারকা থাকা সত্ত্বেও তো লা লিগায় ধুঁকতে হয়েছে রিয়ালকে।

লোপেতেগি এসেই দলের লিগ শিরোপা জয়ের টার্গেট জানিয়ে দিলেন। কিন্তু শুরুতে কিছুটা ঝলক দেখিয়ে ফের যেই ‘লাউ সেই কদু’। শুরুতে টানা তিন ম্যাচ জেতার পর থেকেই হোঁচট খেতে শুরু করে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। এরপর ছয় ম্যাচে মাত্র ১ জয়, ৪ হার আর ১ ড্রয়ের লজ্জা নিয়ে রিয়াল থেকে বিদায় নিতে হলো লোপেতেগিকেও।

সর্বশেষ সান্তিয়াগো সোলারি দায়িত্ব নিয়েই আশার আলো জ্বালিয়ে দিলেন। তাকে নিয়ে স্বপ্নও বুনতে শুরু করেছিল রিয়াল সমর্থকরা। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচেই সেই আলো উধাও। সর্বশেষ এইবারের বিপক্ষে হেরে ফের ঘোর অন্ধকারে ডুবে গেছে সান্তিয়াগো বার্নাব্যু। ১৩ ম্যাচে তাদের জয় এখন পর্যন্ত মাত্র ৬টি। এইবারের বিপক্ষে ম্যাচ ফের আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, লা লিগা আসলেই রিয়ালের জন্য নরকের যন্ত্রণা বয়ে আনছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
এমএইচএম/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।