শুক্রবার (২০ মার্চ) কলকাতা হাসপাতালে ৮৩ বছর বয়সে নিজের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পিকে ব্যানার্জি। মৃত্যুকালে পলা ও পূর্ণা নামের দুই কন্যা সন্তান রেখে গেছেন তিনি।
১৯৬২ সালের এশিয়ান গেমসে স্বর্ণপদকজয়ী পিকে ব্যানার্জি উইঙ্গার হিসেবে ছিলেন অনবদ্য। ভারতীয় ফুটবলের স্বর্ণযুগের অন্যতম সারথি দীর্ঘদিন থেকেই নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন।
এছাড়া পারকিনসন এবং কিডনি রোগে ভুগছিলেন তিনি। গত ২ মার্চ থেকে হাসপাতালে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। তার কিডনি সচল রাখতে ডায়ালাইসিসও করা হয়ে, কিন্তু তিনি সেটা নিতে পারছিলেন না।
১৯৩৬ সালের ২৩ জুন পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করা পিকের পরিবার দেশভাগের পর জমশেদপুরে স্থায়ী হয়। সেখান থেকেই তার ফুটবলার হিসেবে যাত্রা শুরু।
ভারতের জার্সি গায়ে ৮৪টি ম্যাচ খেলে ৬৫টি গোল করেছিলেন পিকে। ১৯৯২ জাকার্তা এশিয়ান গেমসে স্বর্ণপদক জেতার পাশাপাশি ১৯৬০ রোম অলিম্পিকেও তিনি ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ওই আসরে শক্তিশালী ফ্রান্সের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র ম্যাচে ভারতের হয়ে সমতা ফেরানো গোলটি আসে তার পা থেকে।
তারও আগে ১৯৫৬ মেলবোর্ন অলিম্পিকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন পিকে। সেবার আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে দেয় ভারত। দলের জয়ে মূল ভূমিকা রাখেন পিকে।
খেলোয়াড়ি জীবনের সমাপ্তির পর কোচিংয়েও দারুণ সফল ছিলেন পিকে। ফুটবলার হিসেবে ইস্টার্ন রেলের মতো মাঝারি মানের দলের হয়ে খেললেও কোচিং করিয়েছেন ইস্ট বেঙ্গল, মোহবাগানের মতো ক্লাবে। তার অধীনে মোহনবাগান আইএফএ শিল্ড, ডুরান্ড কাপ ও রোভার্স কাপ জিতে ‘ট্রেবল’ জয় করে। এরপর ভারতীয় জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পাওল করেন ১৪ বছর।
ফুটবলের জন্য জীবন উৎসর্গ করা পিকে ১৯৯০ সালে পদ্মশ্রী, ২০০৪ সালে ফিফা'র অর্ডার অব মেরিট পুরস্কারে ভূষিত হন। এই কীর্তিমান ফুটবল তারকার মৃত্যুতে ভারতের ফুটবলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২০
এমএইচএম