করোনা মহামারির কারণে এবার ব্যালন ডি’অর বাতিল করেছে ফ্রান্স ফুটবল। ফলে এবার বর্ষসেরা খেলায়াড়ের এই পুরষ্কার পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
অনেক বছর থেকেই ব্যালন ডি’র মানেই লিওনেল মেসি এবং ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর আধিপত্য। কিন্তু ২০২০ সালে দুর্দান্ত পারফর্ম করেও এই মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তিগত পুরষ্কার থেকে বঞ্চিত হবেন আধুনিক ফুটবলের সবচেয়ে সেরা দুই ফুটবলার।
মেসি আর রোনালদোর সমকক্ষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। দুজনেই এক যুগ ধরে যে উচ্চতায় অবস্থান করছেন তা স্পর্শ করা প্রায় অসম্ভব। তবে এবছর চিত্রটা পাল্টে যেতে পারে। ডিসেম্বরে ব্যালন ডি’অর ঘরে তোলার মতো আরও কয়েকজন অপেক্ষায় ছিলেন। যাদের প্রায় সবার ক্যারিয়ারে হয়তো এটাই হতো প্রথম ও শেষ ব্যালন ডি'অর।
লিওনেল মেসি
মেসি সবার সেরা এতে সন্দেহ করার মতো লোকের সংখ্যা কমই আছে। কিন্তু ২০২০ সালটা তার ক্যারিয়ারের জন্য মোটেও সুখকর ছিল না। কারণ, দলীয় অর্জন তথা লা লিগা এরইমধ্যে হাতছাড়া হয়ে গেছে তার দল বার্সার।
অবশ্য ২৫ গোল করে লা লিগার শীর্ষ গোলদাতার পুরষ্কার ‘পিচিচি ট্রফি’ এরইমধ্যে জিতে নিয়েছেন মেসি। এই নিয়ে রেকর্ড সপ্তমবার এই পুরষ্কার ঝুলিতে পুরেছেন তিনি। আবার সপ্তমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জেতার অন্যতম দাবিদারও ছিলেন এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। কিন্তু ফেবারিট কিছুতেই নয়।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো
বছরের শুরুটা তেমন আহামরি না হলেও শেষটায় ঠিকই গোলের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছেন রোনালদো। ৩০ গোল নিয়ে এই মৌসুমে সিরি আ’র সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। ইতালিয়ান শীর্ষ লিগে জুভেন্টাসের আরও ৪টি ম্যাচ হাতে আছে। ফলে ব্যালন ডি’অর জেতার বড় সম্ভাবনা ছিল এই পর্তুগিজ উইঙ্গারের।
রবার্ট লেভানডফস্কি
ব্যালন ডি’অর বাতিল করায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খেলোয়াড়দের একজন লেভানডফস্কি। চলতি বছরটা দুর্দান্ত কাটছে এই পোলিশ ফরোয়ার্ডের। বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে বুন্দেসলিগা জিতেছেন এবং ৩৪ গোল করে গোল্ডেন বুট গেছে তার ঝুলিতেই। বাভারিয়ানদের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগটাও জেতার সুযোগ আছে তার সামনে।
কেভিন দে ব্রুইন
ম্যানচেস্টার সিটির ‘ক্রিয়েটিভিটি’র মূল কারিগর কেভিন দে ব্রুইন। এই বেলজিয়ানের পাসিং রীতিমত অবিশ্বাস্য। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের এবারের মৌসুমে ১৮টি অ্যাসিস্ট এসেছে তার পা থেকে। আর মাত্র ২টি অ্যাসিস্ট করতে পারলেই আর্সেনাল কিংবদন্তি থিয়েরি অঁরি’র রেকর্ড ২০ অ্যাসিস্টের রেকর্ড ছুঁতে পারতেন তিনি। প্রিমিয়ার লিগের বর্ষসেরা খেলোয়াড় হওয়ার অন্যতম দাবিদার তিনি। ব্যালন ডি’অরটাও তার দখলে যেতে পারত।
সার্জিও রামোস এবং করিম বেনজেমা
মৌসুমের প্রায় অর্ধেকের বেশি সময় খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলা একটি দল কীভাবে শিরোপা জিততে সক্ষম তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। আর লা লিগার শিরোপা জিততে রিয়ালের সবচেয়ে বড় দুই প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছেন দুই ‘বুড়ো’ সার্জিও রামোস এবং করিম বেনজেমা। জিনেদিন জিদানের সুযোগ্য কোচিং আর এই দুই পুরনো সৈনিকের সুযোগ্য লড়াইয়ে বাজিমাত করেছে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা।
গোল করায় রিয়ালের সবচেয়ে বড় অস্ত্র এখন বেনজেমা। এই ফরাসি স্ট্রাইকার ক্যারিয়ারের সেরা সময় কাটাচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে রক্ষণ, নেতৃত্ব এবং অবশ্যই পেনাল্টি থেকে গোল করার অনন্য কীর্তি মিলিয়ে এক অবিশ্বাস্য মৌসুম কাটাচ্ছেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার। শুধু কি তাই, ডিফেন্ডার হয়েও এক মৌসুমে ১১ গোল করে একুশ শতকে নতুন রেকর্ড গড়েছেন তিনি। করোনা বিরতি শেষে জুনে লা লিগা ফেরার পর তিনি এমনকি মেসির সমান (৬টি) গোল করেছেন। বেজনেমা ও রামোস এবার চ্যাম্পিয়নস লিগেও চমকে দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে ব্যালন ডি’অরের অন্যতম দাবিদার এই দুই অভিজ্ঞ ফুটবলার।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩১ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২০
এমএইচএম