নেইমার যে একদিন বিশ্বসেরা হবেন, সেটা তার ভক্তরা বহু আগে থেকেই বিশ্বাস করেন। অবশেষে সেই সুসময় সম্ভবত চলে এসেছে।
ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড যখন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, মেসি-রোনালদো তখন ব্যর্থতার হতাশায় ডুবে আছেন। আধুনিক ফুটবলের দুই কিংবদন্তি যথাক্রমে কোয়ার্টার ফাইনাল ও শেষ ষোলো থেকেই বাড়ি ফেরার রাস্তা ধরেছেন। বায়ার্ন মিউনিখের পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডভস্কি যদিও এবার ১৫ গোল করে বসেছেন এবং তার দলও ফাইনালে পিএসজিরই মোকাবিলা করবে, তবুও নেইমারের অবস্থানে ভাবা হয় না তাকে।
মেসির মতো ভালো খেলোয়াড় নন নেইমার কিংবা রোনালদোর মতো গোলও করতে পারেন না তিনি। কিন্তু খেলায় তার প্রভাব যদি খেয়াল করা যায়, দেখা যাবে বর্তমানে ফুটবল মাঠে সবচেয়ে বিচক্ষণ খেলোয়াড় কিন্তু এই পিএসজি তারকা। চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনাল দেখে থাকলে এ নিয়ে দ্বিমত করার সুযোগ কমই আছে।
নেইমারের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা হল- দুর্দান্ত গতি, প্রতিপক্ষের রক্ষণদুর্গ ভেদ করা, ড্রিবলিং এবং সরাসরি শট নেওয়া। অন্যদিকে রোনালদো এখন আগের চেয়ে বেশি শিকারির ভূমিকায় দেখা দেন। অর্থাৎ তিনি এখন গোল করার জন্য সহজ সুযোগ খুঁজে বেড়ান। তার আগের সেই ক্ষিপ্র গতি আর নেই। মেসিও আর আগের মতো ৩০-৪০ মিটার দৌড়ে গিয়ে ফিনিশিং দিতে পারেন না, যা নেইমার পারেন। বয়স মেসি ও রোনালদো দুজনের ক্ষেত্রেই প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পরিণত খেলোয়াড়ে পরিণত হচ্ছেন নেইমার, যা তাকে মেসি, রোনালদো এবং কিলিয়ান এমবাপ্পের মতোই বিশ্বসেরা খেলোয়াড়ের সমপর্যায়ে জায়গা করে দিয়েছে। মেসি ও রোনালদো যথাক্রমে ৩৩ ও ৩৫ বছর বয়সে নিজ নিজ যোগ্যতাবলেই বিশ্বসেরা হিসেবে জায়গা ধরে রেখেছেন। তবে এখন তাদের সাফল্য পেতে আগের চেয়ে বেশি করে সতীর্থদের সহায়তার ওপর নির্ভর করতে হয়। তবে তাদের সতীর্থরা আসলে ঠিক ততটা ভালোও নন, যে তাদের ইউরোপীয় সাফল্য পেতে সহায়তা করবেন। গত দুই আসরই তার প্রমাণ।
বর্তমানের সেরা নেইমার হলেও মেসি ও রোনালদো যে খারাপ খেলোয়াড় তা কিন্তু নয়- শুধু একটু কম কার্যকর। বিশেষ করে এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে তো বটেই। কেননা, ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা হচ্ছে একজন খেলোয়াড়ের শীর্ষ সম্মান অর্জন কিংবা হারানোর জায়গা। লিসবনে, অন্তত এখন পর্যন্ত নেইমার ফুটবলের ‘নতুন রাজা’।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২০
এমএইচএম