ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ফুটবল

ইতিহাস গড়ে বসুন্ধরা কিংসের শিরোপা জয়

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২২
ইতিহাস গড়ে বসুন্ধরা কিংসের শিরোপা জয় ছবি: শোয়েব মিথুন

ম্যাচে শেষের বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই স্টেডিয়ামের দর্শকরা আনন্দে ফেটে পড়লেন। চ্যাম্পিয়ন লেখা জার্সি পরে উদযাপনে মেতে উঠলেন বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলার-কর্মকর্তারা।

দেশের ফুটবল ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় যোগ করে সবুজ গালিচায় শুরু হলো লাল উৎসব। বসুন্ধরার ফুটবলাররা গোল হয়ে উদযাপনে মাতলেন, যোগ দিলেন সমর্থকরাও।  

উৎসবের মঞ্চ তৈরি ছিল আগে থেকেই। মুন্সিগঞ্জের শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে ২-০ গোলে হারিয়ে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সেই মঞ্চ নিজেদের করে নিল বসুন্ধরা কিংস। সেই সঙ্গে হ্যাটট্র্রিক শিরোপা জয়ের ইতিহাস গড়লো অস্কার ব্রুজোনের দল।

এর আগে ঘরোয়া ফুটবল লিগে হ্যাটট্রিক শিরোপার রেকর্ড রয়েছে দুই ঐতিহ্যবাহী দল আবাহনী ও মোহামেডানের। ১৯৮৩-৮৫ আবাহনী ও ১৯৮৬-৮৮ মোহামেডান হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে পেশাদার লিগ শুরু হওয়ার পর একমাত্র আবাহনীর হ্যাটট্রিক শিরোপা আছে। ২০১০ সালে অভিষেক হওয়া শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব টানা দুই বার জিতলেও হ্যাটট্রিক করা হয়নি। এবার অনন্য ইতিহাস গড়লো কিংস।

ম্যাচের আগে থেকেই বাদ্যযন্ত্রের বাজনায় মুখরিত ছিল স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণ। স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছিল লাল। প্র্রিয় দলেকে সমর্থন দিতে কিংসের লাল জার্সি পরে গ্যালারিতে এসেছিলেন হাজারো সমর্থক। তাদের হতাশ করেনি কিংস। জয়ের আনন্দে মাতিয়েছেন মতিন-বিপলুরা।

জামাল ভূঁইয়াদের সাইফ স্পোর্টিংয়ের জালের ঠিকানা খুঁজে পেতে শুরুতে অবশ্য বসুন্ধরা কিংসকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচটি বেশ উত্তপ্ত ছিল। দুই দলের ফুটবলাররাই মেজাজ হারিয়েছেন বারবার। কিংসের গাম্বিয়ান নুহা মারং প্রথম কার্ড দেখেন। এরপর বেশ কয়েকবারই কার্ড বের করতে হয়েছে রেফারিকে। ৩৭রম মিনিটে বসুন্ধরার ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাত লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন।  

দুই দলের খেলোয়াড়দের মতো উত্তপ্ত ছিল ডাগ আউটও। দুই দলের কোচিং স্টাফরাই রেফারিং নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।

দশ জনের দল হওয়ার আগেই ম্যাচে লিড নেয় কিংস। ২৮তম মিনিটে মতিন মিয়া বক্সের মধ্যে দারুণ এক শটে গোল করেন। কিংস ম্যাচে লিড নিতে পারতো আরও আগেই। সেক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার। ব্রাজিলিয়ান মিগুয়েল ফেরেইরার নেয়া শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে।

দ্বিতীয়ার্ধে কিংস দশ জন নিয়ে খেলে কিছুটা ভিন্ন কৌশলে। রক্ষণে মনোযোগ দিয়ে কাউন্টার আক্রমণ ছিল তাদের কৌশল৷ ক্রুসিয়ানীর সাইফ দ্বিতীয়ার্ধে বল দখলে এগিয়ে ছিল। মাঝমাঠে প্রাধান্য বিস্তার করে দারুণ কয়েকটি আক্রমণ করে সাইফ। বসুন্ধরার গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোকে কয়েকবার পরীক্ষায়ও পড়তে হয়েছে। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক শট দারুণ সেভ করেন জিকো।  

সাইফ যখন ম্যাচে সমতা আনার অপেক্ষায় তখন উল্টো ম্যাচের ব্যবধান দ্বিগুণ করে শিরোপা নিশ্চিত করেন বদলি ফুটবলার বিপলু আহমেদ। বেঞ্চ থেকে মাঠে নামার এক মিনিটের মধ্যেই দারুণ ফিনিশিংয়ে স্কোরলাইন ২-০ করেন তিনি। মুন্সিগন্জের স্টেডিয়ামে তখন কিংসের উৎসব শুরু হয়ে গেছে।  

ম্যাচের শেষ দিকে সাইফকে দুইবার গোল বঞ্চিত করেন কিংসের গোলরক্ষক জিকো ও নুহা মারং। নুহা গোললাইন থেকে হেড করে দলকে গোল থেকে বাঁচান। এরপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। শেষের বাঁশি বাজতেই শুরু হয়ে যায় লাল উৎসব।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২২
এআর/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।