কাতার বিশ্বকাপে খেলুড়ে দেশ হিসেবে অংশ নিতে পারেনি চীন। তবে বিশ্বকাপের সবচাইতে বেশি স্পন্সর মূল্য আসছে তাদের কাছ থেকেই।
বিশ্বে করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণে আসলেও চায়নায় এই ভাইরাসের প্রকোপ আরও বেড়েছে। করোনা মহামারীর পর গত ছয়মাসের মধ্যে সবচাইতে বাজে সময় পার করছে চীন। গতকাল (২৩ নভেম্বর) চীনে রেকর্ড সংখ্যক (২৮,০০০) নতুন করোনা রোগী চিহ্নিত করা হয়েছে। চীনের বিভিন্ন প্রদেশে লকডাউনও চলছে। তবে এর মধ্যে কাতার বিশ্বকাপ ভাবিয়ে তুলছে দেশটির নাগরিকদের। তাদের মতে কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজন দেখে মনে হচ্ছে চীন এই পৃথিবীর বাইরের কোনও দেশ।
নেট দুনিয়ায় কাতারের বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন চীনের নাগরিকরা। কাতারের বিশ্বকাপে গ্যালারি ভর্তি দর্শক, তাদের মুখে কোনও মাস্ক নেই। নেই কোনও সামাজিক দূরত্বের বাধ্যবাধকতা। মোট কথা কাতারের বিশ্বকাপে করোনা নিয়ে তেমন কোনও কড়াকড়ি আইন নেই দেখেই চক্ষু চরক গাছ চীনের নাগরিকদের।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ক্রীড়া প্রেমী একজন মানুষ। দেশটির জাতীয় টিভি চ্যানেলে বিশ্বকাপে খেলা সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। সেখানে কাতারের বিশ্বকাপের সব আয়োজনই দেখতে পাচ্ছে দেশের নাগরিকরা। কাতারের বিশ্বকাপ আয়োজন দেখে চীনের নাগরিকদের মনে হচ্ছে তারা পৃথিবীর বাইরের কোনও দেশে আছেন।
কাতার বিশ্বকাপে পুরো বিশ্ব থেকে মানুষ খেলা দেখতে গেছেন। চীন থেকেও অনেক নাগরিক খেলা উপভোগ করতে কাতারে গেছেন। তবে চীন থেকে কাতারের উদ্দেশ্যে ফ্লাইটের সংখ্যা অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে করোনার কারণে। অনেকেই এই ইভেন্টটি দেখে নিজেদের চরম ভাবে বিচ্ছিন্ন মনে করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উই চ্যাটে একটি ক্যাম্পেইন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে লেখা হয় ‘কাতার এবং চীন কি একই গ্রহের দেশ’?
এছাড়া টুইটার এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চীনের নাগরিকদের এমন পোষ্ট দ্রুতই ছড়িয়ে পরছে। এক চীনের নাগরিক লিখেছেন, ‘কোভিড ১৯ পরীক্ষার প্রমাণ ছাড়া কয়েক হাজার দর্শককে এক সঙ্গে জড়ো হতে দেখাটা অদ্ভুত। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে কোনও আসন খালি নেই। সত্যিই গ্রহটি বিভক্ত হয়ে গেছে। ’
আরেকজন লিখেছেন, ‘পৃথিবীর একদিকে কার্নিভাল চলছে অন্যদিকে পাবলিক প্লেসে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ’
কেউ কেউ বলছেন যে তাদের সন্তানদের বোঝাতে অসুবিধা হচ্ছে কেন বিশ্বকাপের দৃশ্যগুলি দেশের চিত্র থেকে, তাদের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে আলাদা। চীনে অনেকেই আছেন যারা বিদেশী দেশগুলির খোলার সমালোচনা করছেন। কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও কোভিড-১৯ ভাইরাসকে ‘বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা’ বলে অভিহিত করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
এআর