ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ডায়েটিং ও সাম্প্রতিক গবেষণা

ডা. মালিহা শিফা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১২
ডায়েটিং ও সাম্প্রতিক গবেষণা

ঢাকা: ডায়েটিং শব্দটা আজ আর কারও অপরিচিত নয়। হরহামেশাই শব্দটা শুনে থাকবেন সবাই।

একটা সময় ধারণা ছিল আহার কম করে বা উপোস করেই ওজন এবং ক্যালরি কমানো যায়।

কিন্তু যুগ পাল্টেছে। গবেষণার ধরণগুলোও যেন ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। উত্তরোত্তর গবেষণা পাল্টে দিচ্ছে পুরানো ধারণা। তাই এখন চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে আহার ও ব্যায়াম দু`টোর সমন্বিত ফল হলো ডায়েটিং।

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা দুপুরে আহার না করে রাতে করেন তাদের ওজন প্রায়ই বেড়ে যায়। ফল হয় হিতে বিপরীত।

অনিয়মিত খাওয়ার চেয়ে সমপরিমাণ খাবার দিনে তিন বা চারবারে খান।

খাবার খেতে হবে ধীরে ধীরে। কেননা খাদ্য গ্রহণের ২০ মিনিটের মাথায় পাকস্থলী পূর্ণ হওয়ার খবর মস্তিষ্কে পৌঁছে। তাই তাড়াহুড়া করা ঠিক নয়।

মনে রাখতে হবে যে, প্রোটিনজাতীয় নয় বরং ক্যালোরিসমৃদ্ধ খাবারই শরীরের ওজন বেশি বাড়ায়।

ড. জেমস লেভাইন মিনেসোটার মায়ো ক্লিনিক রচেস্টারে স্থূলতা নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি জানান, প্রোটিন কখনোই শরীরকে মোটা করে না, ওজন বাড়ায় না। এই কাজগুলো করে ক্যালোরি। অথচ এর আগে বেশ কিছু গবেষণায় জানানো হয়েছিল, যে যত বেশি খাবে সে তত মোটা হবে। তবে তা অনেক ক্ষেত্রে মানুষের দেহের ক্যালোরি ক্ষয় হওয়ার ওপর নির্ভর করে। একেকজনের শরীর একেক রকম। একই ডায়েটে কার শরীরে কতটুকু ফ্যাট জমা হয় তা নির্ধারণ করা কঠিন।

ওজন কমাতে প্রয়োজনীয় পরিমাণ আমিষ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। আমিষ বিষয়ে পিএলএস ওয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ১০ শতাংশ আমিষ রাখলে মাত্র চার দিনেই শরীরের কর্মক্ষমতা ১২ শতাংশ বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে ক্ষুধা বোধ কমিয়ে দেয়। ফলে বাড়তি খাওয়ায় শরীরে যে অতিরিক্ত মেদ জমে তা ধীরে ধীরে কমে আসে।

ক্যালসিয়াম এমন একটি মিনারেল যা শরীরের চর্বি কমিয়ে ওজনও কমাতে সাহায্য করে। সম্প্রতি কিছু নারীদের ওপর এ পরীক্ষাটি চালিয়েছেন গবেষকরা।

তারা তাদেরকে বেশি বেশি করে ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খাইয়েছেন। আরেক দল নারীকে গবেষকরা অল্প ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খাইয়েছেন। দেখা গেছে, যারা বেশি করে ক্যালসিয়াম খেয়েছেন তাদের ওজন কমেছে বাকিদের তুলনায় বেশি। বিজ্ঞানীদের ভাষ্যমতে, রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেশি থাকলে ফ্যাট ভাঙতে শুরু করে আর ফ্যাটের স্টোরও কমে যায়। ফলে ওজনও কমে যায়।

ওজন কমানোর জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

জানা গেছে, ভিটামিন `সি` ওজন কমানোর এক নতুন কৌশল হিসেবে কাজ করে। ভিটামিন `সি` শরীরের অতিরিক্ত মেদ পুড়িয়ে ফেলতে সাহায্য করে। রক্তে ভিটামিন `সি`-এর পরিমাণ কম থাকলে ফ্যাট বার্নিং কম হয়। ফলে ওজন কমে না। যাদের রক্তে প্রয়োজনীয় পরিমাণে ভিটামিন `সি` আছে তাদের ফ্যাট বার্নিং হয় শতকরা ২৫ ভাগ।

ভিটামিন `সি` বেশি পাওয়া যায় ফলের মধ্যে। যেমন- আমলকী, পেয়ারা, কামরাঙ্গা, লেবু, মাল্টা, স্ট্রবেরি। সবজির মধ্যে রয়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, কাঁচামরিচ, টমেটো, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি।

তাই প্রতিদিন প্লেট ভর্তি করে ভিটামিন `সি` খেয়ে বাড়তি ওজন কমিয়ে ফেলুন।

লেখক: ডা. মালিহা শিফা, কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স কর্মকর্তা, মেরি স্টোপস

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১২

সম্পাদনা: তানিয়া আফরিন, হেলথ এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।